কলকাতা, 13 জুন: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মতো এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় 2300 জনকে নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই ৷ মূলত, যারা টাকার বিনিময়ে বেআইনিভাবে চাকরি পেয়েছিলেন, তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ৷ আর সেই জিজ্ঞাসাবাদের সূত্র ধরে এবার সিবিআই আধিকারিকদের হাতে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷ সিবিআই সূত্রে খবর, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্যের প্রায় 30-35 জন দালালের হদিশ পাওয়া গিয়েছে ৷ যাদের মারফত বেআইনি চাকরি প্রাপকরা টাকা দিয়েছিল ৷ এবার সেই 35 জন দালালকে তলব করতে চলেছে সিবিআই ৷
সিবিআই সূত্রে খবর, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় রাজ্যে প্রায় আড়াই হাজার জন টাকা দিয়ে চাকরি পেয়েছেন ৷ তাদের মধ্যে থেকে মাত্র 2300 জনকে এখনও পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করতে পেরেছেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিকরা ৷ তাদের থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সিবিআই জানতে পেরেছে প্রসন্ন রায়ের মতো জেলা স্তরে সক্রিয় ছিল একাধিক এজেন্ট বা দালাল ৷ যে সংখ্যাটা প্রায় 35 ৷ তাদের নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বলে মনে করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা ৷ তাদের বয়ান রেকর্ড করে এই ঘটনায় অগ্রগতি সম্ভব বলে মনে করা হচ্ছে ৷
জানা গিয়েছে, বেআইনিভাবে চাকরি প্রাপকদের থেকে কোটি কোটি টাকা এই দালালরা তুলেছিল ৷ তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগ ছিল প্রসন্ন রায়ের ৷ আর প্রসন্ন রায়ের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন উপদেষ্টা শান্তি প্রসাদ সিনহা এবং রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ৷ এর আগে যখন প্রসন্ন রায়কে গ্রেফতার করা হয়, সেই সময় জানা যায় বিভিন্ন জেলায় হাজার হাজার এজেন্টদের মাধ্যমে টাকার বিনিময় অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের হাতে চাকরি নথি তুলে দেওয়া হয়েছিল ৷ আর সেই টাকা সরাসরি পৌঁছে যেত বেশ কয়েকজন প্রভাবশালীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৷ যদিও, সেই প্রভাবশালীরা কারা, সেই নিয়ে এখনও পর্যন্ত মুখ খুলতে চাননি সিবিআই আধিকারিকরা ৷
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তে নেমে এসএসসির একাধিক কর্তা ব্যক্তিকে বারংবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল ৷ তাদের মধ্যে শান্তি প্রসাদ সিনহা যিনি এসএসসির প্রাক্তন উপদেষ্টা ছিলেন, তাঁকে গ্রেফতার করা হয় ৷ আরও বেশ কয়েকজন এসএসসির কর্তাকে গ্রেফতার করে সিবিআই ৷ পরে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও ৷ সেই মামলায় অবশ্য প্রায় 25 হাজারের চাকরি বাতিলের রায় দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ৷ যদিও গত 7 মে সুপ্রিম কোর্ট সেই রায়ে স্থগিতাদেশ দেয় ৷