মেমারি, 16 মার্চ: পূর্ব বর্ধমানের মেমারি-মগরা জিটি রোড ধরে ছুটে চলেছে একটি ভলভো স্লিপার বাস ৷ কিন্তু, মেমারির চকদিঘি মোড়ে সেই বাসের জানালা দিয়ে একটি গরু রাস্তায় পড়ে যায় ৷ যা দেখে চোখ কপালে ওঠার পরিস্থিতি তৈরি হয় স্থানীয়দের ৷ ভলভো বাসটিকে দ্রুত আটকানোর পর দেখা যায় বাসটিতে গরু বোঝাই করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ৷ ঘটনায় মেমারি থানার পুলিশ বাসের চালক ও খালাসিকে আটক করেছে ৷ 22টি গরু উদ্ধার হয়েছে বাস থেকে ৷
জানা গিয়েছে, বিহার থেকে আসা ওই ভলভো বাসটিতে গরু বোঝাই করে হুগলির পান্ডুয়ার হাটে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ৷ স্থানীয়রা জানান, বাসটি বৃহস্পতিবার রাতে মেমারির চকদিঘি মোড়ে আসতেই বাসের পিছনের জানালা খুলে যায় ৷ আর সেখান থেকে একটি গরু রাস্তায় পড়ে যায় ৷ গরুটি রাস্তায় পড়ে চিৎকার শুরু করে ৷ বাসের চালক সঙ্গে সঙ্গে বাস থামায় ৷ সেই সময় বাসের ভিতরে থাকা বাকি গরুগুলিও চিৎকার শুরু করে দেয় ৷
ভলভো বাসের ভিতর থেকে গরুর আওয়াজ আসতে শুরু করায়, স্থানীয় কয়েকজন ভিতরে ঢুকে পড়েন ৷ বাসের ভিতরে ঢুকতেই তাঁদের চক্ষু চড়কগাছ ৷ বাসের ভিতরে কোনও সিট নেই ৷ আর না আছে কোনও যাত্রী ৷ বাস ভরতি কেবল গরু বাঁধা রয়েছে ৷ বাসে করে এভাবে গরুপাচার দেখে খবর দেওয়া হয় মেমারি থানায় ৷ পুলিশ বাসটিকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় ৷ বাসের চালক ও খালাসিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ৷ পুলিশ প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে বাসটি বিহার থেকে আসছিল ৷ হুগলির পান্ডুয়ার হাটে গরুগুলি বিক্রি করার পরিকল্পনা ছিল ৷
বাসের ভিতরে 22টি গরু ছিল বলে জানা গিয়েছে ৷ তবে, পাণ্ডুয়ার হাটে গরু বিক্রি করার বৈধ কাগজ তাদের সঙ্গে আছে বলে দাবি করেছেন চালক ৷ সেইসব খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷ কিন্তু, বৈধ কাগজ থাকলে ভলভো বাসে করে কেন নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল ? প্রশ্ন উঠছে ৷ যদিও স্থানীয়দের দাবি, বিহার থেকে ভিনরাজ্যে গরুপাচারের চক্রান্ত চলছিল ৷ না হলে এইভাবে রাতের অন্ধকারে ভলভো বাসে গরু নিয়ে যেত না ৷
এনিয়ে পূর্ব বর্ধমান জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, "ভলভো বাসে করে গরুপাচার অভিনব ৷ এর আগে আমরা দেখেছি দুধের কন্টেনারের গাড়ি কিংবা লরি করে গরুপাচার ৷ তবে ভলভো বাসে যে গরুপাচার করা সম্ভব, তা ভাবাই যায় না ৷ আসলে গরুপাচার এই রাজ্যে একটা শিল্পে পরিণত হয়েছে ৷ এই গরুপাচারের টাকা কালীঘাটে যায় ৷ না হলে পুলিশের নজর এড়িয়ে কীভাবে বিহার থেকে আসানসোল, দুর্গাপুর হয়ে বর্ধমান পার হচ্ছিল বাস ৷ পুলিশ যদি এখনও ব্যবস্থা না-নেয়, তা হলে ফের বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে ৷"
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস জানান, পুলিশ গরুগুলিকে আটক করেছে ৷ গরুগুলি অন্য রাজ্য থেকে আসছিল ৷ কিন্তু এই রাজ্য থেকে তো পালাতে পারেনি ৷ পুলিশ তাদের ধরেছে ৷ বিজেপির অভিযোগ করা কাজ, তারা অভিযোগ করছে ৷
আরও পড়ুন: