কলকাতা, 13 অগস্ট: সন্দীপ ঘোষের 'ছুটি'তে খুশি বন্যাশনাল মেডিকেলের আন্দোলনকারীরা ৷ তবে সব দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে ৷ এমনটাই জানালেন আন্দোলনরত চিকিৎসকরা ।
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে আরজি করের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে ৷ এই সিদ্ধান্তে খুশি কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের আন্দোলনরত চিকিৎসকরা । আগামী 24 ঘণ্টার মধ্যে ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের 'সদ্য প্রাক্তন' অজয় রায়ের বদলির নোটিফিকেশন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। এর পাশিপাশি, মঙ্গলবার সকালে যে 6 দফা দাবি তাদের তরফে উত্থাপন করা হয়েছিল, তার প্রতিটি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে স্পষ্ট করেছেন তাঁরা। তবে, এই কর্মবিরতির জেরে হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবায় যে প্রভাব পড়ছে বা স্বাস্থ্য পরিষেবা যে ব্যাহত হচ্ছে, তা মানতে নারাজ আন্দোলনরত চিকিৎসকরা ।
চিকিৎসক আরিনপা সাহা এবং চিকিৎসক শুভাশিস হাজরা-রা বলেন," আমাদের কর্ম বিরতির জেরে হাসপাতালের জরুরী বিভাগ এবং অন্যান্য যে কয়েকটি বিভাগের পরিষেবা চালু রয়েছে তার কোনোটাতেই কোন ভাবে প্রভাব পড়েনি। তাই অযথা যাঁরা কর্মবিরতির জেরে চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে দাবি করছেন, তা বন্ধ করুন।"
আরজি করের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ পদত্যাগের পর চার ঘণ্টার মধ্যে তাকে ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল পদে নিয়োগ করা হয়। এই খবর প্রকাশ পেতেই গতকাল থেকে ন্যাশনাল মেডিকেল এর একাংশের পড়ুয়া এবং চিকিৎসকরা বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেন। প্রিন্সিপাল রুমের বাইরের তালাও ঝুলিয়ে দিতে দেখা যায়।
এর রেশ আজকে সকাল থেকে মারাত্মক আকার ধারণ করে। হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক স্বর্ণকমল-সহ রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী জাভেদ খান হাসপাতালে পৌঁছন। বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা করেন। কিন্তু, কোনও সুরাহা না মেলায় তারা ফিরে যেতে বাধ্য হন। এর কয়েক ঘণ্টা বাদে কলকাতা হাইকোর্ট এ বিষয়ে এক মামলার রায় সন্দীপ ঘোষকে অবিলম্বে ছুটিতে যাওয়ার কথা বলে। এবং ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল পদে যিনি ছিলেন তাকে পুনরায় ফেরানোর কথাও জানানো হয়। তারপরে আজ সন্ধে নাগাদ ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের বিক্ষব্রত পড়ুয়ারা নিজেদের জেনারেল বডি মিটিং এরপর সংবাদ মাধ্যমের কাছে পূর্বের দাবিগুলি উত্থাপন করেন।
ক্যালকাটা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের ছয় দফা দাবি:
1) ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে নজির মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে। বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা করতে হবে।
2) নির্যাতিতার পরিবারকে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
3) দ্রুত ময়নাতদন্তে রিপোর্ট প্রকাশ করতে হবে।
4) আরজি করের প্রিন্সিপাল এবং চেস্ট মেডিসিন ডিপার্টমেন্ট এর পদ অধিকারীদের অপসারণ করতে হবে না।
5) এই ঘটনা নিয়ে যারা সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্য পরিবেশন করছে তাদের চিহ্নিত করে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
6) ঘটনার প্রতিবাদে যে সমস্ত ডাক্তাররা আর্জি করে প্রতিবাদ আন্দোলনের সম্মিল হয়েছিল তাদের মধ্যে অনেকেই মারধর করেছে কলকাতা পুলিশ। তাদের হেনস্থা করা হয়েছে। অবিলম্বে কলকাতা পুলিশকে এ বিষয়ে লিখিত ক্ষমা চাইতে হবে।