কলকাতা, 11 জুলাই: ঢোলাহাটে যুবকের মৃত্যু মামলায় পুলিশের রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ একই সঙ্গে পুলিশকে ময়নাতদন্তের ভিডিয়ো রেকর্ড সংরক্ষণ করারও নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
কাকদ্বীপ সাব ডিভিশানাল হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজ যদি থাকে, তাও সংরক্ষণ করতে হবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। পাশাপাশি স্বস্তিক সেবা সদন নামে যে হাসপাতালে যুবকের মৃত্যু হয়েছে, সেখানকার 8 জুলাইয়ের সকাল আটটা থেকে সারাদিনের সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণ করতে হবে। পরবর্তী শুনানির দিন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে হবে পুলিশকেও। এই মর্মে বৃহস্পতিবার একগুচ্ছ নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ৷ শুক্রবার দুপুর দুটোয় ফের শুনানি হবে বলেও জানান বিচারপতি।
গত সোমবার কলকাতার নার্সিংহোমে মৃত্যু হয় ঢোলাহাট থানার ঘাট বকুলতলা এলাকার বাসিন্দা আবু সিদ্দীক হালদারের। কয়েক দিন আগে একটি চুরির ঘটনায় আবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, পুলিশি হেফাজতে আবুকে মারধর, অত্যাচার করা হয়। পরে জামিন পেলেও সেই অত্য়াচারের জেরেই মৃত্যু হয় তাঁর। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত 30 জুন ঢোলাহাট এলাকায় আবুর কাকার বাড়িতে চুরি হয়। সেই ঘটনায় থানায় তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। মৃত যুবক জামিনে মুক্ত হলেও বাকি দু’জন নাবালক থাকায় তাদের বারুইপুর জুভেনাইল বোর্ডে পাঠানো হয়। 4 জুলাই তিন জনকে আদালতে তোলার আগে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা করানো হয়। সেখানে চিকিৎসক ‘ফিট সার্টিফিকেট’ দেন বলে পুলিশের দাবি।
অন্যদিকে, জামিন নিশ্চিত করতে তদন্তকারী অফিসারকে এক লক্ষ টাকার বেশি দিতে হয়েছিল বলে মৃতের পরিবারের তরফে এদিন আদালতে জানান আইনজীবী। মৃতের পরিবারের আইনজীবী জানান, আবু সিদ্দিকি হালদারের 21 বছর বয়স। তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ ৷ যদিও কোনও লিখিত অভিযোগ ছিল না। জামিন হলে 5 তারিখ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই সময় তার গোটা শরীরে মারধরের দাগ ছিল। রুলের দাগ, ইলেক্ট্রনিক শকের দাগও ছিল। এরপর আট তারিখ তাঁর মৃত্যু হয়।
গ্রেফতার কেন করা হয়েছিল তাঁকে ? জানতে চান বিচারপতি ৷ আইনজীবী জানান, চুরির অভিযোগে গ্রেফতার করা হলেও নিহতের কাকা কোনও লিখিত অভিযোগ করেননি। নিহতের কাকাও তাঁকে ছাড়ার অনুরোধ করেন। একই সঙ্গে তিনি এও বলেন, "আমরা জানি না, ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে কি না! মৃত্যুর পর জনরোষ তৈরি হলে পুলিশ দেহ ময়নাতদন্ত করে।" পালটা রাজ্যের তরফে আইনজীবী জানান, ময়নাতদন্ত হয়েছে ৷ তবে এখনও সেই রিপোর্ট হাতে আসেনি তাদের ৷ একই সঙ্গে তিনি বলেন, "ভিডিয়োগ্রাফি হয়েছে। কলকাতা পুলিশের মাধ্যমে ময়নাতদন্ত হয়েছে।" পাশাপাশি রাজ্যের আইনজীবী জানান, জামিন হলেও তাঁকে হাফাজতে চেয়েছিল পুলিশ।
তবে রাজ্য এও জানায়, থানার সিসিটিভি ফুটেজ তাদের কাছে নেই। গত 23 জুন থেকে রেকর্ডিং ডিভাইস কাজ করছে না থানায়। অন্য একটি মামলাতেও একই কথা তারা আদালতকে জানিয়েছে ৷ ওয়েবেলে 26 জুন টেকশিয়ান পাঠানোর জন্য মেইলও করা হয়েছে।