কলকাতা, 28 নভেম্বর: রাজ্যে সাইবার ক্রাইম থানার অফিসারদের তদন্তে অদক্ষতা দেখে রাজ্য পুলিশের ডিজি'র রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্যে এত সাইবার থানা হলেও সেখানে কর্মরত অফিসারদের প্রযুক্তিগত বিষয়ে দক্ষতার অভাব রয়েছে। অপরাধীরা প্রযুক্তিগত দিক থেকে অনেক এগিয়ে গিয়েছে ৷ ফলে পুলিশ তাদের নাগাল পাচ্ছে না বলে ভর্ৎসনার সুরে জানান বিচারপতি।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী শুনানিতে বলেন, "সাইবার ক্রাইম থানার ওসি হওয়ার অনেক ঝামেলা আছে ৷ এমনি পুলিশ স্টেশনেই থাকুন। শুধু লাঠি আর 161 (এ) সাক্ষী জোগাড় হলে চলে যাবে ?" সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশদের কী ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, সেখানে কী কী ধরনের পরিকাঠামো রয়েছে, তা নিয়ে দু'সপ্তাহের মধ্যে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী ও বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ।
অভিযোগ, মুরুটিয়া থানা এলাকায় ধর্ষণের পর মহিলার নগ্ন ছবি সোশাল মিডিয়ায় আপলোড করা হয় ৷ অথচ সাইবার ক্রাইম থানা সেখানে অন্য অনেক ধারা প্রয়োগ করলেও সাইবার অপরাধের কোনও ধারা প্রয়োগ করেনি ৷ ফলে গ্রেফতারের পরেই জামিন পেয়ে যায় অভিযুক্ত। হাইকোর্টে দায়ের মামলায় কৃষ্ণনগর সাইবার থানার এই হাল দেখে চরম হতাশ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী। আইসিকে এজলাসে হাজির করে বিচারপতি এদিন রীতিমতো ভর্ৎসনা করেন ৷
তিনি বলেনন, "এমন ঘটনায় যদি সাইবার অপরাধের ধারা সাইবার থানা যুক্ত না করে, আর তার ফলে অভিযুক্ত জামিন পেয়ে যায়, এর দায় কে নেবে ? গাল ভরা নাম দিয়ে নতুন যে বিশেষজ্ঞ (সাইবার) থানা হল, কিন্তু তার হাল আর পাঁচটা সাধারণ থানার মতোই। তাহলে আর গাল ভরা নাম দিয়ে নতুন থানা করে লাভ কী ?"
বিচারপতি বাগচী প্রশ্ন করেন, "আপনারা মোবাইলে কী দেখেন ? অপরাধীরা কোথায় পৌঁছে গিয়েছে ! সার্ভার মাস্ক করে দিচ্ছে। আর আপনারা পড়ে আছেন সেই প্রথাগত পদ্ধতিতেই !" বিচারপতির বক্তব্য, "যুগের পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে ৷ ঊনবিংশ, বিংশ শতাব্দী পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এই রাজ্যের পুলিশ এখনও সেই লাঠিকেই চেনে, সাইবার শব্দটাই জানে না।" এরপরেই রাজ্য পুলিশের ডিজি'র রিপোর্ট তলব করে আদালত। একই সঙ্গে, এই মামলার অভিযুক্তের মোবাইল ফোন সংগ্রহ করে তার থেকে তথ্য বের করে সেই নিয়ে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশকে।