কলকাতা, 2 ফেব্রুয়ারি: 2022 সালের প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্যানেলে বিএড ও ডিএলএড - দুই ডিগ্রি থাকা পরীক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে বলে শুক্রবার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট । এ দিন হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা এই নির্দেশ দিয়েছেন ৷ আদালতের পর্যবেক্ষণ, "প্রাথমিক বোর্ডকে নিয়োগের জন্য অনেক কিছু বাধা পার হতে হয়েছে । তবুও একজনও নাগরিককে সরকারি পরীক্ষায় বসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা যায় না ৷"
সুমন্ত কোলে-সহ 10 পরীক্ষার্থীর জন্য আলাদা মেধাতালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা । বিচারপতির আরও নির্দেশ, পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে দেখা হবে তাঁরা প্যানেলে সুযোগ পাওয়ার যোগ্য কি না ! একই সঙ্গে আদালতের পর্যবেক্ষণ, মামলাকারীরা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর বোর্ডের তরফে তাঁদের নাম বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত রূঢ় ৷ শুধু ডিএলএড থাকতে হবে বোর্ডের এই আচরণ ঠিক নয় ৷
উল্লেখ্য, 2022 সালের প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের প্যানেল নিয়ে সুমন্ত কোলে-সহ 10 পরীক্ষার্থী মামলা করেন ৷ তাঁদের বিএড ও ডিএলএড দু’টি ডিগ্রিই ছিল । তাঁদের বিএডে অনেক বেশি নম্বর ছিল । তাই সেটি উল্লেখ করেন পরীক্ষার্থীরা । সব মামলাকারী পরীক্ষায় বসেছিলেন । সবাই পরীক্ষায় পাশ করেছেন । 2022 সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বোর্ড । সেখানে বিএড বাতিল বলে গণ্য করা হয়নি ।
এরপর 2023 সালের 11 অগস্ট প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিএড বাতিল করার জন্য শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয় । সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর 31 জানুয়ারি মেধাতালিকা প্রকাশ করা হয় । সেখানে বাদ দেওয়া হয় মামলাকারীদের নাম । বোর্ডের যুক্তি আদালতে তুলে ধরেন আইনজীবী সুবীর স্যানাল ৷ তিনি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে বলেন, ‘‘2023 সালের 29 সেপ্টেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় । তখনও বিএড পরিবর্তন করতে পারতেন প্রার্থীরা । এনসিটিই অনুযায়ী, পরীক্ষার্থীদের যোগ্যতা বেঁধে দেওয়া হয় প্রথম বিজ্ঞপ্তিতেই । বিএড কখনোই প্রাথমিকের ক্ষেত্রে যোগ্যতা হিসেবে গণ্য করা হত না । শীর্ষ আদালতের রায় তখনও আসেনি । তাই দেওয়া হয়নি । আরও দু’টি বিজ্ঞপ্তি ছিল । মামলাকারীরা 2023 এর শীর্ষ আদালতের রায়ের পর আদালতে আসতে পারতেন ।
এই সওয়াল শুনে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেন, ‘‘শীর্ষ আদালতের নির্দেশ না পেলেও আপনাদের কাছে রাজস্থান হাইকোর্টের রায় (25 নভেম্বর 2021) ছিল । যেখানে বিএড অনুমোদন পায়নি । আপনারা সেটাও অনুসরণ করেননি । একজন সফলকে এভাবে বাদ দিলে অনেকটা রূঢ় হয়ে যাবে । বোর্ড এভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না ।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সম্প্রতি প্রায় সাড়ে ন’হাজার প্রার্থীর প্যানেল প্রকাশ করেছে । সেখানে বিএড ও ডিএলএড দুই ডিগ্রি থাকা প্রার্থীদের বাদ দেওয়া হয়েছে ।
আরও পড়ুন: