কলকাতা, 11 মার্চ: কুন্তল ঘোষ ও নীলাদ্রি ঘোষের জামিন সংক্রান্ত মামলায় ইডি ও সিবিআইকে তীব্র ভর্ৎসনা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী । কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তিনি বলেন, তদন্তের গতি বাড়াতে হবে ৷
এ দিনের শুনানিতে বিচারপতি বলেন, "দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়তে হলে, তদন্তের গতি বাড়াতে হবে, দোষী সাব্যস্তের সংখ্যা বাড়াতে হবে ।" জাপান, সিঙ্গাপুরের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, সেখানে আশি শতাংশকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় । ফলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই সেখানে অনেক বেশি । বিচারপতি এ দিন আরও বলেন, "কুন্তল বা এই ধরনের অভিযুক্তদের সম্পদের উৎস নেই । কোনও জনপ্রতিনিধির নাম উল্লেখ করে টাকা তোলাই অপরাধ । এঁদের থেকে যে টাকা উদ্ধার হয়েছে তা ব্যাপক দুর্নীতির পারিপার্শ্বিক প্রমাণ । তদন্তে নরম মনোভাবের জন্যই এখনও বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি বলে উল্লেখ করেন বিচারপতি ।
তিনি বলেছেন, "অযথা তদন্ত দীর্ঘায়িত করে মানুষের স্মৃতি থেকে দুর্নীতি বিষয়টি মুছে ফেলার চেষ্টা করবেন না । প্রয়োজনে যাঁদের থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে, সে রকম কারওকে নিয়ে আসুন, যিনি বলবেন তিনি টাকা দিয়েছেন । তাঁকে ধরেই তদন্ত করুন ৷"
উল্লেখ্য, কুন্তল ঘোষের চিঠি প্রসঙ্গেই নিয়োগ দুর্নীতিতে নাম জড়িয়েছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের । তারপরই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন সিবিআইকে । কুন্তল ঘোষ ও নীলাদ্রি ঘোষের জামিন মামলায় সিবিআইয়ের থেকে বিস্তারিত রিপোর্ট তলব করেছে আদালত । নিয়োগ দুর্নীতিতে কীভাবে যুক্ত কুন্তল-নীলাদ্রি ? তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে, তারই বিস্তারিত জানিয়ে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ । এই মামলার পরবর্তী শুনানি 1 এপ্রিল ।
কুন্তলের আইনজীবী এ দিন বলেন, "প্রায় একবছরের উপর জেলবন্দি কুন্তল ঘোষ । তদন্ত প্রক্রিয়া এগোচ্ছে না সিবিআই । কুন্তলের বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত প্রমাণের অভাব রয়েছে ।" অন্যদিকে নীলাদ্রি ঘোষের আইনজীবী বলেন, "নীলাদ্রি ঘোষের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ নেই । জামিন দেওয়া হোক নীলাদ্রি ঘোষকে ।"
সিবিআইয়ের বক্তব্য, "নিয়োগ দুর্নীতিতে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রায় চার কোটি টাকা তোলা হয়েছে । খুব কম টাকা ফেরত দেওয়া হলেও, বাকি টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি । আরও টাকা তোলা হয়েছে কি না তা তদন্তসাপেক্ষ । এই অবস্থায় জামিন হলে তদন্তে ক্ষতি হবে ।"
এরপরই ক্ষুব্ধ বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী তীব্র ভর্ৎসনা করেন ইডি ও সিবিআইকে ।
আরও পড়ুন: