কলকাতা, 4 মার্চ: কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের শেষ দিন এজলাসে প্রসঙ্গ হয়ে উঠল সেই পূর্ব মেদিনীপুর। কারণ ইতিমধ্যেই জল্পনা ছড়িয়েছে মেদিনীপুরের তমলুক কেন্দ্র থেকে তিনি আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হতে চলেছেন। এদিনের মামলার শুনানির তালিকায় 44 নম্বর আইটেমে পূর্ব মেদিনীপুরের একটি মামলায় রেজিস্ট্রার ভিজিল্যান্স তদন্ত করছে। সেই মামলার রিপোর্ট বলছে অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ সংশ্লিষ্ট জেলা বিচারকের বিরুদ্ধে। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "আমি প্রধান বিচারপতিকে অনুরোধ করব তিনি যেন বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখেন। যদি রিপোর্ট সত্য হয়, তাহলে জেলা জজকে টারমিনেট করা উচিত বলে আমি মনে করি।"
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় রবিবারই জানিয়েছিলেন তিনি বিচারপতি পদে ইস্তফা দিচ্ছেন। মঙ্গলবার দেশের রাষ্ট্রপতি ও সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে সেই ইস্তফাপত্র পাঠাবেন। একইসঙ্গে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে মৌখিকভাবেও জানাবেন বিষয়টি। মঙ্গলবার ইস্তফা দেওয়ার পর তিনি বেলা দেড়টা নাগাদ মাস্টারদা সূর্য সেনের মূর্তির সামনে আসবেন। সেখানে যা বলার বলবেন সাংবাদিক সম্মেলন করে।
এদিন সকাল থেকেই বিচারপতি কখন আসেন সেই অপেক্ষায় ছিল সাধারণ বিচারপ্রার্থী থেকে আইনজীবীরা। বিচারপতি অবশেষে যখন এজলাসে ঢোকেন তখন বেলা আড়াইটে পেরিয়ে গিয়েছে। থাকলেন মাত্র 12-13 মিনিটের মতো। বিচারপতি এজলাসে আসতেই আইনজীবী কমলেশ ভট্টাচার্য বলেন, "ডার্ক ডে ফর আস" ৷ যা শুনে হেসে ফেলেন বিচারপতি। এরপর বিচারপতি নিজেই বলেন, "প্রায় 29 বছর এই হাইকোর্টের অলিন্দে কেটেছে। একটু তো খারাপ লাগা থাকবে।"
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এরপর কোর্ট অফিসারকে বলেন, "লিখে দেবেন সমস্ত পার্ট হার্ড ম্যাটার রিলিজিং ফ্রম মাই লিস্ট ৷" অর্থাৎ আংশিক সমস্ত মামলা ছেড়ে দিচ্ছেন তিনি। এদিন এজলাসে আরও দুটি ঘটনা ঘটে। বোলপুরের একটা মামলায় উপকৃত মহিলা এসেছিলেন তাঁর উপকারের কথা জানাতে। প্রণাম করবেন বলে জানালে, বিচারপতি বলেন, "আমি পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম গ্রহণ করি না।" একইসঙ্গে আর এক মহিলা এসেছিলেন জামশেদপুর থেকে ৷ তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, "কেন ছেড়ে দিচ্ছেন আপনি?" যদিও বিচারপতি কোনও উত্তর না দিয়ে উঠে চলে যান।
আরও পড়ুন
বিজেপি সাংসদ নিশিকান্তের বিরুদ্ধে মহুয়ার আবেদন খারিজ দিল্লি হাইকোর্টে
এজলাসে প্রবেশের সময় আর্দালিরা কিভাবে বিচারপতিদের ক্রম ঠিক করেন, সেই কথাই শোনালেন ডিওয়াই চন্দ্রচূড়