কলকাতা, 9 জানুয়ারি: পুলিশ হেফাজতে অত্যাচারের মামলায় পুলিশের তদন্তে অসন্তুষ্ট কলকাতা হাইকোর্ট । পুলিশের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি ও বিচারপতি গৌরাঙ্গ কান্তের ডিভিশন বেঞ্চ । আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কন্যার উদ্দেশ্যে কটু মন্তব্য করার অভিযোগে রেবেকা মোল্লা ও রমা দাসকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।
সেই ঘটনায় তাদের জামিন হয়ে গেলেও হেফাজতে পুলিশ তাঁদের অত্যাচার করেছে, এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা।কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় । কিন্তু রাজ্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে শীর্ষ আদালত । পরিবর্তে শীর্ষ আদালত সিট গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দেয় । কলকাতা হাইকোর্টে সিটকে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছিল । এদিন সিট আদালতে রিপোর্ট দিলেও অসন্তুষ্ট ডিভিশন বেঞ্চ ।
রাজ্যের আইনজীবী এদিন আদালতে বলেন, ‘‘এদের অভিযোগ, পুলিশ হেফাজতে অত্যাচার করা হয়েছিল। আমরা সোশাল মিডিয়া থেকে যে তথ্য পেয়েছি, সেটা রিপোর্টে লিখেছি । আমাদের আরও 14 দিন লাগবে সম্পূর্ণ রিপোর্ট পেশ করতে । ডাক্তারদের এবং বাকিদের বয়ান রেকর্ড করা হবে।’’
বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি জানতে চান, ‘‘যাকে মারা হয়েছে, তাঁর বয়ান রেকর্ড হয়েছে ? রমা দাসের বয়ান রেকর্ড হয়েছে ? ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে ডাকা হয়েছিল ?’’ রাজ্যের আইনজীবী জানান, এখনও পর্যন্ত তাঁদের বয়ান নেওয়া হয়নি । এখনও তদন্ত চলছে ৷
বিচারপতি জয়মাল্য বাগচি বলেন, ‘‘আপনারা কী তদন্ত করছেন ? কারা ডাক্তার ? কারা সাক্ষী ? যাকে মারা হয়েছে সেই তো সাক্ষী । তাঁর বয়ান প্রথমে রেকর্ড করা উচিত । তিনি যাকে অভিযুক্ত বলবেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলা উচিত । যারা সাক্ষী, তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত । রিপোর্ট পেশ করুন ।রিপোর্ট অনুযায়ী, তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে। এটা কি রমা দাস কী ক্রাইম করেছে তার ওপরে তদন্ত ? আপত্তিকর ভিডিয়োর ওপর ভিত্তি করে তদন্ত হয়েছে ? অভিযোগ আসলে কী ছিল ? হেফাজতে নিয়ে অত্যাচারের বিষয়টি রয়েছে ?’’
রাজ্যের আইনজীবী জানান, আক্রান্তকে একবার নিমতা পুলিশ স্টেশনে ডাকা হয়েছিল । পুরো ঘটনায় সিট তদন্ত করে দেখছে । তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য ফের সময় চাওয়া হয় । বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, আপত্তিকর ভিডিয়ো ও অন্যান্য বিষয়ে অ্যাডিশনাল চিফ পাবলিক প্রসিকিউটর অফ সিটকে পুনরায় তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে হবে । সিট সাপ্তাহিক রিপোর্ট দেবে আদালতে । মামলার পরবর্তী শুনানি 14 দিন পর ।