কলকাতা 15 এপ্রিল: প্রতিটি মানুষের নিজের মত বা ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী অনুষ্ঠান করার ও তাতে যোগ দেওয়ার অধিকার রয়েছে ৷ তাদের সেই কাজে বাধা দেওয়া যায় না ৷ প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিয়ে মিছিল করতে দিতে হবে ৷ হাওড়ায় বিশ্বহিন্দু পরিষদের রামনবমীর অনুমতি সংক্রান্ত মামলায় এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ৷ আগামী 17 এপ্রিল রামনবমীর অনুমতি যেমন আদালত দিয়েছে ৷ তেমনি পুলিশ প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে না পারলে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি ৷
তবে, হাওড়া পুলিশ প্রশাসনের রামনবমীর উদযাপনের অনুমতি না-দেওয়ার বিষয়টিতে কিছুটা হলেও ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট ৷ আদালত স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, কারও ধর্মীয় আচার-আচরণে বাধা দেওয়ার অধিকার প্রশাসন বা সরকারের নেই ৷ রামনবমীর শোভাযাত্রায় বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত তাঁর নির্দেশ বলেন, "মাত্র 200 লোকের শোভাযাত্রা যদি পুলিশ সামাল দিতে না পারে, তাহলে কিছু বলার নেই ৷ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভিড় সামাল দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছি ৷"
তবে রাজ্যের বক্তব্য, "রাজ্য সরকার শুধু হাওড়ায় 17টি শোভাযাত্রার অনুমতি দিয়েছে ৷ এবছর আমাদের এত ফোর্স নেই ৷ তাই এই র্যালি বন্ধ করার আবেদন করা হচ্ছে ৷" আর তা না হলে, শোভাযাত্রার পথ ও তাতে অংশ নেওয়া লোকজনের সংখ্যা আরোও কমানোর কথা বলা হয় রাজ্যের তরফে ৷ কারণ, রাজ্যের দাবি অনুযায়ী গতবছর এই শোভাযাত্রায় 10-12 হাজার লোক ছিল ৷ সেখানে মারাত্মক গোলমাল হওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয় ৷ এমনকি সেই ঘটনায় এনআইএ তদন্ত চলছে ৷
কিন্তু, রাজ্যের দাবি মানতে নারাজ আদালত ৷ বিচারপতি জানান, গতবারের মতো 10-12 হাজার লোক নিয়ে শোভাযাত্রা করা হচ্ছে না ৷ আয়োজকরা এবার 200 লোক নিয়ে শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে ৷ তাই এখানে আর রুট বদল বা লোক কমানোর মতো শর্ত দিতে নারাজ আদালত ৷ বিচারপতি সেনগুপ্ত তাঁর নির্দেশে বলেন, "দু’শো লোক নিয়েই শোভাযাত্রা যাতে নিশ্চিত করা যায়, তা আগাম ঘোষণা করতে বলা হয়েছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদকে ৷ প্রয়োজনে লিফলেট বিলি করে, তা মানুষকে জানাতে হবে ৷"
উল্লেখ্য, এর আগে একই শোভাযাত্রায় অঞ্জনি পুত্র সেনা নামের একটি সংগঠন যুক্ত থাকতো ৷ মামলাকারীদের আইনজীবীর দাবি, এবার ওই সংগঠনের শোভাযাত্রা পরের রবিবার করা হবে ৷ এর আগে গত শুক্রবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত শ্রীরামপুরের জি টি রোডে রামনবমীর শোভাযাত্রার অনুমতি দিয়েছিলেন ৷ তবে, সেখানেও লোকসংখ্যা কমিয়ে শোভাযাত্রা করার অনুমতি দিয়েছিলেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: