কলকাতা, 26 নভেম্বর: দুই এজলাসে একই মামলা ! জমিজমা নিয়ে বিতর্কে মামলা আর পাল্টা মামলার বহর দেখে চরম বিরক্ত হাইকোর্ট ৷ দু'পক্ষের মামলায় আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য বিরক্ত বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ প্রায় নজিরবিহীন নির্দেশ দিলেন ৷ মামলাকারীকে 50 হাজার টাকা জরিমানা হাইকোর্টের।
ক্ষুব্ধ বিচারপতির বক্তব্য, "ফৌজদারি মামলার মোড়কে পুলিশ নিষ্ক্রিয়তার নামে জমিজমা সংক্রান্ত সিভিল মামলা নিয়ে এসে হাইকোর্টের সময় নষ্ট করা হচ্ছে ৷ আর তাতে মদত দিচ্ছেন কিছু আইনজীবী।" একটি জমি সংক্রান্ত মামলায় প্রায় 25 মিনিট শুনানির পরে মামলাকারী জানান, এই মামলার আদালত অবমাননার একটি মামলা ঝুলে আছে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে ৷
তাতেই কার্যত ক্ষেপে যান বিচারপতি ৷ তাঁর প্রশ্ন, এই তথ্যটা কেন 25 মিনিট শুনানি হয়ে যাওয়ার পর আদালতকে জানানো হল। ফলে এই সময়টা আদালতের কাজের সময় থেকে নষ্ট হল ৷ এই কারণে মামলাকারীর 50 হাজার টাকা জরিমানা করে হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, এমন বহু মামলা হাইকোর্টে দায়ের করা হয়, যা নিম্ন আদালতেই মিটে যাওয়ার কথা। এই নিয়ে এর আগেও বহু মামলায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন অনেক বিচারপতি। কিন্তু সেইসব মামলা গ্রহণ করায় এই প্রবণতা কমছে না, বলেও উল্লেখ করেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
মামলাকারীর দীপঙ্কর দে'র অভিযোগ, বসিরহাট বাজারে দীর্ঘ 20 বছর ধরে তিনটি দোকান ভাড়া নিয়ে ব্যাটারি ও ইলেকট্রনিক বিভিন্ন সামগ্রীর ব্যাবসা করেন তিনি ৷ কিন্তু স্থানীয় তন্ময় মল্লিক নামে এক ব্যক্তি, জমির মালিকের সঙ্গে যোগসাজশ করে তাঁকে ঐ দোকান ছেড়ে দিতে বলেন ৷ এর বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করলে, নিম্ন আদালত গত বছর 13 অক্টোবর এক নির্দেশে জমির মালিক ও ঐ ব্যক্তির যেকোনও রকম হস্তক্ষেপের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ৷ তারপরই তাঁর দোকানে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ ৷
তিনি কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলে বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত পুলিশকে নির্দেশ দেন, পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে। কোন ঝামেলার যাতে সৃষ্টি না-হয় ৷ কারণ নিম্ন আদালতের নির্দেশ এখানে না-মানার অভিযোগ। কিন্তু তারপরেও পুলিশ পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ।