কলকাতা, 19 এপ্রিল: পাহাড়ে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চেও ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার । বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর সিঙ্গল বেঞ্চের দেওয়া সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ বহাল রাখল বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি মধুরেশ প্রসাসের ডিভিশন বেঞ্চ ।
পাহাড় নিয়োগ দুর্নীতিতে এক সরকারি আধিকারিকের দেওয়া চিঠি নিয়ে সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু । সেই নির্দেশই বহাল রাখল ডিভিশন বেঞ্চ । যদিও পুলিশের তদন্তে স্থগিতাদেশ দিল না হাইকোর্ট । কারণ, পুলিশ (সিআইডি) ও ইতিমধ্যে এফআইআর করে তদন্ত করছে । বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চ তিন সপ্তাহ পরে হলফনামা দিয়ে সবপক্ষকে নিজেদের বক্তব্য জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন । অন্যদিকে 25 এপ্রিল সিঙ্গল বেঞ্চে তাদের প্রাথমিক রিপোর্ট দেবে সিবিআই । এ দিন ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ যেহেতু জিটিএ এলাকায় নিয়োগে একাধিক নেতা-মন্ত্রীর নাম উঠে এসেছে, সেই জন্য সিঙ্গল বেঞ্চ যে সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে, তাতে হস্তক্ষেপ করছে না ডিভিশন বেঞ্চ ।
ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত বলেন, "313 জন ভলান্টিয়ার টিচারকে স্থায়ী করা হয়েছে এটাই অভিযোগ । এর তদন্ত চাওয়া হয়েছে । যেকোনও মামলাকে সিবিআইয়ের হাতে তদন্তভার তুলে দেওয়ার আগে সেটাতে কী আবেদন জানানো হয়েছে, সেটা অন্তত খতিয়ে দেখা উচিত । সিঙ্গল বেঞ্চ সেটা করেনি ।" একই সঙ্গে এজি আরও বলেন, "তিনটি চিঠির মধ্যে 26 জানুয়ারি যে চিঠি দেওয়া হয়েছিল, সেই চিঠির প্রথম প্যারাগ্রাফ ছাড়া বাকি আর কোনও অংশের সঙ্গে মামলার কোনও যোগ নেই ।"
তিনি আরও বলেন, "একজন অভিযোগকারী কখনও সিবিআইকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ জানাতে পারে না । তিনি নির্দিষ্ট এলাকার পুলিশকে অভিযোগ জানাতে পারেন । তিনি চিঠি দিয়ে বলতে পারেন না তিনি সিবিআই তদন্ত চান । তারপর যিনি চিঠি পাঠাচ্ছেন, তার কোনও ঠিকানা নেই ।’’ রাজ্য অভিযুক্তদের আড়াল করছে না বলেও তিনি জানান ৷
মামলাকারীর আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, "যখন এই চিঠি সিআইডিকে দিয়েছিলেন অভিযোগকারী, তখন সিআইডি কী করেছিল ? কিছু করেনি । রাজ্য ক্যাবিনেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে এদের পদ স্থায়ী করার ব্যাপারে । কী করে পুলিশ এর বিরুদ্ধে তদন্ত করবে ? একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল তাদের জোর করে মামলা প্রত্যাহার করানো হয়েছে । ভয় দেখিয়ে মামলা প্রত্যাহার করানো হয়েছে । শেষ পর্যন্ত এই একটা মামলাটিকে রয়েছে । তাও হুমকি দেওয়া হচ্ছে ।"
উল্লেখ্য, পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় একটি চিঠি আদালতে জমা দেন এক ব্যক্তি । সেই চিঠিতে রয়েছে তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক-সহ একাধিক শাসক দলের ছাত্র ও যুব নেতার নাম রয়েছে । একই সঙ্গে পাহাড়ের নেতা বিনয় তামাং ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কথাও উল্লেখ করা হয়েছিল চিঠিতে । সেই নিয়েই সিবিআই অনুসন্ধান করছে ।
আরও পড়ুন: