কলকাতা, 12 এপ্রিল: তৃণমূল কংগ্রেসের মথুরাপুর লোকসভার প্রার্থী বাপি হালদারের বিরুদ্ধে পঞ্চায়েতের টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে ৷ যে ঘটনায় এবার মথুরাপুর থানার ওসিকে শোকজের নোটিশ পাঠাল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ অভিযোগ একমাস হয়ে গেলেও তৃণমূল প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর দায়ের করেনি পুলিশ ৷
এনিয়ে আজ রাজ্য সরকারের তরফে আদালতে দাবি করা হয়েছে, বাপি হালদারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অনুসন্ধান করা হচ্ছে ৷ বিডিও পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন ৷ যা শুনে এদিন বিরক্ত প্রকাশ করেন বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত ৷ বিচারপতির বক্তব্য, "হঠাৎ অনুসন্ধান কেন ? আবার বিডিও এখানে আসছেন কোথা থেকে ? কোর্ট কেন অর্ডার দেবে ? যেখানে প্রাথমিকভাবে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে, সেখানে আবার অনুসন্ধান কেন ?"
এই অভিযোগের অনুসন্ধান প্রসঙ্গে বিচারপতি ভূপতিনগরের উদাহরণ টানেন ৷ তিনি মন্তব্য করেন, "আপনারা ভূপতিনগরের ক্ষেত্রে ধৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান না করেই, এফআইআর করে দিলেন ৷ আর এখানে অভিযোগে যা রয়েছে, তাতে অভিযোগ জানানোর একমাস পরেও এফআইআর করার মতো জায়গায় পৌঁছাল না পুলিশ ! তথ্য নথি নষ্ট করার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য এটা চেষ্টা নয় তো ! আপনার যদি মনে হয়, অভিযোগে অপরাধের কোনও ইঙ্গিত নেই, তাহলে আপনি খোলা এজলাসে অভিযোগ পড়ুন ৷ ওসি-র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব ৷ এই কথাগুলি বিরক্তিকর ৷"
উল্লেখ্য, কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শিলি হালদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে ৷ কখনও একবার কাজ করে তিনবার টাকা তোলা হয়েছে, কোথাও একবার কাজ করে দু’বার টাকা তোলা হয়েছে ৷ উল্লেখ্য, শিলি হালদারের স্বামী হলেন মথুরাপুর লোকসভার তৃণমূলের প্রার্থী বাপি হালদার ৷ স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ স্ত্রীকে পঞ্চায়েত প্রধান করে, আড়াল থেকে বাপি হালদার পঞ্চায়েতের টাকা সরিয়েছেন ৷
এনিয়ে কৃষ্ণচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান বিজেপির অনুপ কুমার মিস্ত্রি থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন গত 7 মার্চ ৷ কিন্তু, এতদিনেও এফআইআর করেনি পুলিশ ৷ অভিযোগ পালটা পঞ্চায়েত প্রধানকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে ৷
আজ রাজ্যের তরফে বলা হয়, বিডিও ঘটনার অনুসন্ধানে টিম তৈরি করেছেন ৷ যা নিয়ে বিচারপতি মন্তব্য করেন, "রাজ্য যেখানে অন্য ক্ষেত্রে অনুসন্ধান ছাড়াই এফআইআর করে দেয় ৷ সেখানে পুলিশ অনুসন্ধানের জন্য অভিযোগ ঝুলিয়ে রেখেছে ৷ ওসি-কে 15 দিনের মধ্যে জানাতে হবে, কেন এক মাসের উপর এফআইআর না করে, অভিযোগ ফেলে রেখেছেন ? এসপি সুন্দরবন পুলিশ জেলাকে নির্দেশ, কোনোভাবে অভিযোগকারীদের নিরাপত্তা যাতে বিঘ্নিত না হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে ৷"
আরও পড়ুন: