ETV Bharat / state

'আগামী পাঁচ বছর রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রেখে দিতে হয়', ভোট পরবর্তী হিংসায় ক্ষুব্ধ আদালত - Post Poll Violence

Cal HC on Post Poll Violence: নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হতেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে হিংসার ঘটনার খবর আসছে ৷ এতে ক্ষোভ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷

Calcutta High Court
কলকাতা হাইকোর্ট (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 6, 2024, 5:26 PM IST

Updated : Jun 6, 2024, 8:25 PM IST

কলকাতা, 6 জুন: ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ আগামী পাঁচ বছর রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা দরকার বলে রাজ্য সরকারের আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করলেন দুই বিচারপতির বেঞ্চ ৷ বৃহস্পতিবার ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলার শুনানিতে বিচারপতি কৌশিক চন্দ বলেন, "আমরা দেখতে পাচ্ছি সব সংবাদমাধ্যমে ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটছে ৷ এটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে ৷" এরপর পাঁচ মিনিটের মধ্যে রাজ্য পুলিশের ডিজি'র ই-মেইল আইডি দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ৷

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত অবশ্য বলেন, "যাকে ভোট-পরবর্তী হিংসা বলা হচ্ছে, তা আদৌ ভোট-পরবর্তী হিংসা নয় ৷ যে সব ঘটনা ঘটেছে, সেই ব্যাপারে রাজ্যকে তার বক্তব্য প্রমাণ-সহ আদালতে পেশ করার সময় দেওয়া হোক ৷"

ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে মামলাকারী পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য (ইটিভি ভারত)

এর উত্তরে বিচারপতি কৌশিক চন্দ তাঁকে ভর্ৎসনা করেন ৷ তিনি বলেন, "আমরা লজ্জিত ৷ আমরা গত বিধানসভা নির্বাচনেও একই জিনিস লক্ষ্য করেছি ৷ আর আপনি এখানে বিভিন্ন মামলার টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে কথা বলছেন ? আমরা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা, সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত ৷ আপনারা যদি না পারেন, তাহলে আমাদের কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর ভরসা করতে হবে ৷ রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে বলতে হবে ৷"

এজি বলেন, "রাজ্যে বর্তমানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তারক্ষীরা রয়েছে ৷" তখন বিচারপতি কৌশিক চন্দ রাজ্যের উদ্দেশ্যে বলেন, "আপনি যা বলতে চাইছেন, তাতে আগামী পাঁচ বছর ধরেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রেখে দিতে হয় ৷"

বিচারপতি কৌশিক চন্দ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের উদ্দেশ্যে বলেন, "কতগুলি ঘটনা ঘটেছে আপনাদের কাছে তার রেকর্ড আছে ? অবিলম্বে রাজ্যকে জানাতে হবে কেউ অনলাইনে অভিযোগ জানাতে পারবে কি না ৷ পুলিশ এফআইআর দায়ের করবে তার ভিত্তিতে ৷" বিচারপতি অপূর্ব সিনহা মামলাকারীর আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্তর কাছে জানতে চান, 11 জনের মৃত্যু হয়েছে ? কোথা থেকে এই তথ্য পেলেন ?

আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত বলেন, "পুরো নির্বাচনের সময়ে 11 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ কোনও এফআইআর নেওয়া হচ্ছে না ৷ এই 11 জন শুধু বিজেপির বলে দাবি করছি না । মৃতদের মধ্যে সব দলের সদস্য আছে ৷" এদিকে বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় প্রশ্ন করেন, "লোকজন ইমেইল করে জানাতে পারছে ৷ আর পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানাতে পারছে না ? আপনার এই তথ্যের ভিত্তি কী ? বিচারপতি কৌশিক চন্দ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বলেন, "রাজ্যকে অবিলম্বে অভিযোগ যাতে নেওয়া হয়, তার ব্যবস্থা করতে হবে ৷ যে কেউ যাতে স্থানীয় থানায় না গিয়েও এফআইআর করতে পারে, তার বন্দোবস্ত করতে হবে রাজ্যকে ৷"

আদালত বলে, "অবিলম্বে 10 মিনিটের মধ্যে আমাদের জানান একজন আক্রান্ত যিনি, স্থানীয় থানায় না গিয়েও যাতে এফআইআর করতে পারবে ? একজন ভিক্টিম ফের ভিক্টিম হোক, এটা আমরা চাই না ৷
নাহলে আমাদের অন্য বিকল্প ভাবতে হবে ৷ রাজ্য অবিলম্বে কোনও ইমেইল আইডি তৈরি করুক রাজ্য ৷ সাধারণ জনগণ যেখানে অভিযোগ জানাতে পারবে ৷ আগে সুনিশ্চিত করতে হবে কোনও ব্যাক্তি ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্ত হলে তিনি অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন ৷ আমরা সেই রেকর্ডের ভিত্তিতে যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে পারি ৷"

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, "আগে আদালত রাজ্যের বক্তব্য শুনুক ৷ যা হয়েছে তা ভোট পরবর্তী হিংসা নয় ৷" বিচারপতি কৌশিক চন্দ তখন রীতিমতো ভর্ৎসনা করে বলেন, "ভোটের পর যা ঘটে, সাধারণত সেটা ভোটের সঙ্গেই সম্পর্কিত ৷ তাকে ভোট পরবর্তী হিংসাই বলা হয় ৷ কোনও অভিযোগ দায়ের না হলে রাজ্য দেখাবে যে কিছু হয়নি ৷ সব শান্তিপূর্ণ ৷ আর আড়ালে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হবে, আমরা সহ্য করব না ৷ আগে যাতে এফআইআর নেওয়া হয়, সেটা সুনিশ্চিত করুন ৷"

তখন অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, "সব থানার আলাদা আলাদা ইমেইল আইডি রয়েছে ৷" এরপরেই বিচারপতি কৌশিক চন্দ পালটা তাঁকে প্রশ্ন করেন, "তাহলে ডিজির ইমেইল আইডি দিন ৷ যাতে যে কেউ আক্রান্ত হলে ডিজির কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন ৷ 5 মিনিটের মধ্যে জানান ৷" এরপর সেই ইমেইল আইডি আদালতকে জানান রাজ্যের আইনজীবী ৷

কলকাতা, 6 জুন: ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট ৷ আগামী পাঁচ বছর রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা দরকার বলে রাজ্য সরকারের আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করলেন দুই বিচারপতির বেঞ্চ ৷ বৃহস্পতিবার ভোট-পরবর্তী হিংসার মামলার শুনানিতে বিচারপতি কৌশিক চন্দ বলেন, "আমরা দেখতে পাচ্ছি সব সংবাদমাধ্যমে ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনা ঘটছে ৷ এটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে ৷" এরপর পাঁচ মিনিটের মধ্যে রাজ্য পুলিশের ডিজি'র ই-মেইল আইডি দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ ও বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায়ের ডিভিশন বেঞ্চ ৷

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত অবশ্য বলেন, "যাকে ভোট-পরবর্তী হিংসা বলা হচ্ছে, তা আদৌ ভোট-পরবর্তী হিংসা নয় ৷ যে সব ঘটনা ঘটেছে, সেই ব্যাপারে রাজ্যকে তার বক্তব্য প্রমাণ-সহ আদালতে পেশ করার সময় দেওয়া হোক ৷"

ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে মামলাকারী পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য (ইটিভি ভারত)

এর উত্তরে বিচারপতি কৌশিক চন্দ তাঁকে ভর্ৎসনা করেন ৷ তিনি বলেন, "আমরা লজ্জিত ৷ আমরা গত বিধানসভা নির্বাচনেও একই জিনিস লক্ষ্য করেছি ৷ আর আপনি এখানে বিভিন্ন মামলার টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে কথা বলছেন ? আমরা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা, সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত ৷ আপনারা যদি না পারেন, তাহলে আমাদের কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপর ভরসা করতে হবে ৷ রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে বলতে হবে ৷"

এজি বলেন, "রাজ্যে বর্তমানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তারক্ষীরা রয়েছে ৷" তখন বিচারপতি কৌশিক চন্দ রাজ্যের উদ্দেশ্যে বলেন, "আপনি যা বলতে চাইছেন, তাতে আগামী পাঁচ বছর ধরেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী রেখে দিতে হয় ৷"

বিচারপতি কৌশিক চন্দ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের উদ্দেশ্যে বলেন, "কতগুলি ঘটনা ঘটেছে আপনাদের কাছে তার রেকর্ড আছে ? অবিলম্বে রাজ্যকে জানাতে হবে কেউ অনলাইনে অভিযোগ জানাতে পারবে কি না ৷ পুলিশ এফআইআর দায়ের করবে তার ভিত্তিতে ৷" বিচারপতি অপূর্ব সিনহা মামলাকারীর আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্তর কাছে জানতে চান, 11 জনের মৃত্যু হয়েছে ? কোথা থেকে এই তথ্য পেলেন ?

আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত বলেন, "পুরো নির্বাচনের সময়ে 11 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ কোনও এফআইআর নেওয়া হচ্ছে না ৷ এই 11 জন শুধু বিজেপির বলে দাবি করছি না । মৃতদের মধ্যে সব দলের সদস্য আছে ৷" এদিকে বিচারপতি অপূর্ব সিনহা রায় প্রশ্ন করেন, "লোকজন ইমেইল করে জানাতে পারছে ৷ আর পুলিশের কাছে গিয়ে অভিযোগ জানাতে পারছে না ? আপনার এই তথ্যের ভিত্তি কী ? বিচারপতি কৌশিক চন্দ রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বলেন, "রাজ্যকে অবিলম্বে অভিযোগ যাতে নেওয়া হয়, তার ব্যবস্থা করতে হবে ৷ যে কেউ যাতে স্থানীয় থানায় না গিয়েও এফআইআর করতে পারে, তার বন্দোবস্ত করতে হবে রাজ্যকে ৷"

আদালত বলে, "অবিলম্বে 10 মিনিটের মধ্যে আমাদের জানান একজন আক্রান্ত যিনি, স্থানীয় থানায় না গিয়েও যাতে এফআইআর করতে পারবে ? একজন ভিক্টিম ফের ভিক্টিম হোক, এটা আমরা চাই না ৷
নাহলে আমাদের অন্য বিকল্প ভাবতে হবে ৷ রাজ্য অবিলম্বে কোনও ইমেইল আইডি তৈরি করুক রাজ্য ৷ সাধারণ জনগণ যেখানে অভিযোগ জানাতে পারবে ৷ আগে সুনিশ্চিত করতে হবে কোনও ব্যাক্তি ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্ত হলে তিনি অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন ৷ আমরা সেই রেকর্ডের ভিত্তিতে যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে পারি ৷"

রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, "আগে আদালত রাজ্যের বক্তব্য শুনুক ৷ যা হয়েছে তা ভোট পরবর্তী হিংসা নয় ৷" বিচারপতি কৌশিক চন্দ তখন রীতিমতো ভর্ৎসনা করে বলেন, "ভোটের পর যা ঘটে, সাধারণত সেটা ভোটের সঙ্গেই সম্পর্কিত ৷ তাকে ভোট পরবর্তী হিংসাই বলা হয় ৷ কোনও অভিযোগ দায়ের না হলে রাজ্য দেখাবে যে কিছু হয়নি ৷ সব শান্তিপূর্ণ ৷ আর আড়ালে সাধারণ মানুষ আক্রান্ত হবে, আমরা সহ্য করব না ৷ আগে যাতে এফআইআর নেওয়া হয়, সেটা সুনিশ্চিত করুন ৷"

তখন অ্যাডভোকেট জেনারেল বলেন, "সব থানার আলাদা আলাদা ইমেইল আইডি রয়েছে ৷" এরপরেই বিচারপতি কৌশিক চন্দ পালটা তাঁকে প্রশ্ন করেন, "তাহলে ডিজির ইমেইল আইডি দিন ৷ যাতে যে কেউ আক্রান্ত হলে ডিজির কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন ৷ 5 মিনিটের মধ্যে জানান ৷" এরপর সেই ইমেইল আইডি আদালতকে জানান রাজ্যের আইনজীবী ৷

Last Updated : Jun 6, 2024, 8:25 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.