কলকাতা, 30 জানুয়ারি: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে প্রাথমিক শিক্ষা বিষয়ক সব মামলা সরিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট । পরিবর্তে তাঁকে দেওয়া হল শ্রম ও শিল্প সংক্রান্ত মামলার বিচারের দায়িত্ব ।
আগেই নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশের মামলা সরিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র যে সমস্ত মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ ছিল, কেবল সেই মামলাগুলিই ছিল বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে । পাশাপাশি প্রাথমিক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলাগুলি ছিল তাঁর বেঞ্চে । এবার প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা সরানো হল তাঁর বেঞ্চ থেকে । এর পরিবর্তে তাঁকে শ্রম ও শিল্প সংক্রান্ত মামলার দায়িত্ব দেওয়া হল । প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলা দেওয়া হয়েছে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে ।
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের স্বাক্ষর করা এক বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার জানানো হয়েছে, গত 9 নভেম্বর বিচারপতিদের শুনানি সংক্রান্ত যে রস্টার তৈরি করা হয়েছিল সেখানে কিছু পরিবর্তন করা হচ্ছে। এই পরিবর্তন আগামী 31 জানুয়ারি থেকে কার্যকরী বলে ধরা হবে। সেই বিজ্ঞপ্তিতেই স্পষ্ট জানানো হয়েছে, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় এবার থেকে শ্রম ও শিল্প সংক্রান্ত মামলাগুলি শুনবেন। উল্লেখ্য, সোমবার রাতেই কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীদের তরফে একটা চিঠি পাঠানো হয়েছিল প্রধান বিচারপতিকে। যে চিঠিতে প্রায় 253 জন আইনজীবীর স্বাক্ষর রয়েছে । চিঠির বয়ানে লেখা হয় গত 25 জানুয়ারি বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তকে যে ভাষায় অপমান করেছেন তা আইনবিরুদ্ধ। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের পদটি সাংবিধানিক। তাঁকে অপমান করা মানে সংবিধানের অবমাননা করা। প্রধান বিচারপতি যেন অবিলম্বে পদক্ষেপ করেন ।
প্রসঙ্গত, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় মেডিক্যালে ভর্তি সংক্রান্ত মামলায় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে কথোপকথনের সময় বলেন, "আপনি কার পাদুকালেহন করে দ্বিতীয়বার রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল হয়েছেন তা আমার জানা আছে ।" পালটা রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, তিনি শুনেছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী হচ্ছেন । পাশাপাশি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বিচারপদ্ধতিকে নষ্ট করছেন । বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের থেকে নভেম্বর মাসেই স্কুল সার্ভিস কমিশন সংক্রান্ত সমস্ত মামলা সরিয়ে দিয়েছিলেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। এবার প্রাথমিক সংক্রান্ত মামলা থেকেও সরিয়ে দেওয়া হল তাঁকে । ফলে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের থেকে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত মামলাই সরিয়ে নেওয়া হল । তবে তিনি যে সমস্ত মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন সেগুলো যেহেতু পার্ট হার্ড (আংশিক শুনানি) হয়েছে। তাই সেই মামলাগুলো সরানো হবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয় ।
আরও পড়ুন :