কলকাতা, 26 সেপ্টেম্বর: আরজি কর-কাণ্ডের পর রাজ্যের হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজগুলিতে 'থ্রেট কালচার'-এর অভিযোগে রীতিমতো হইচই পড়ে গিয়েছে । এবার বিষয়টি নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করল কলকাতা হাইকোর্ট । চলতে থাকা থ্রেট কালচার এবং উত্তরবঙ্গ লবির প্রভাব নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছিল হাইকোর্টে । সেই মামলার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের পর্যবেক্ষণ, "অত্যন্ত গুরুতর অভিযোগ । যার সত্যতা থাকলে তা মারাত্মক ।"
হাসপাতালগুলিতে থ্রেট কালচার-সহ একাধিক দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে জনস্বার্থ মামলাটি দায়ের করেন চিকিৎসক অর্চিস্মান ভট্টাচার্য ও এক সমাজকর্মী । প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি বিভাস পট্টনায়েকের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার আজ শুনানি হয় ৷ শুনানি চলাকালীন রীতিমত উদ্বেগ প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছে প্রধান বিচারপতিকে ।
তিনি বলেন, "অভিযোগ গুরুতর । এমনকি এর জন্য উত্তরবঙ্গের মেডিক্যাল কলেজে আরএমও, সার্জেন, হাউস স্টাফ-সহ মোট চারজনকে বরখাস্ত করা হয়েছে । প্রিন্সিপালের রিপোর্টে তার উল্লেখ রয়েছে ।"
চরম বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, "একজন মহিলা চিকিৎসক বলছেন, নিরাপত্তার জন্য তাঁকে তাঁর বাবা ছুরি দিয়ে হাসপাতালে পাঠাচ্ছেন ! অন্য মহিলা চিকিৎসক আবার পেপার স্প্রে সঙ্গে নিয়ে কর্মক্ষেত্রে যান । এটা চরম বিস্ময়কর । হাসপাতালের 60 শতাংশ মহিলা চিকিৎসক বিভিন্নভাবে দুর্ব্যবহারের শিকার হন ।"
এ দিন শুনানিতে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেলের উপস্থিতি প্রয়োজন ছিল বলে জানায় আদালত । প্রধান বিচারপতি বলেন, "এই মামলায় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের উপস্থিত থাকা প্রয়োজন ।" অভিযোগের প্রেক্ষিতে আপাতত রাজ্যের কাছে হলফনামা তলব করেছে ডিভিশন বেঞ্চ । 21 নভেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি ।
উল্লেখ্য, আরজি করের ঘটনা ও থ্রেট কালচারে বর্ধমান মেডিক্যালের আরএমও অভীক দে ও আর একজন চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাসের নাম জড়িয়েছে । যাঁদের দাপটে রীতিমতো ভয়ে থাকতেন জুনিয়র চিকিৎসক থেকে সিনিয়র চিকিৎসকরা । মেডিক্যাল কলেজগুলোয় থ্রেট কালচারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিটি গড়ুক আদালত । এই মর্মেই আবেদন করেন মামলাকারী আইনজীবী ।