কলকাতা, 12 ফেব্রুয়ারি: ক্যাগ রিপোর্টে ঘিরে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। কেন্দ্র হকের টাকা দিচ্ছে না বলে দাবি করেছে রাজ্য সরকার। একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে ধরনা থেকে শুরু করে প্রতিবাদ সবই করেছে তৃণমূল। পালটা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতিয়ার এই ক্যাগ রিপোর্ট। তাতে দাবি করা হয় কেন্দ্রীয় বরাদ্দের টাকা কোথায় খরচ হয়েছে তার নথি (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) দেয়নি রাজ্য। আগেই এই দাবি খারিজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যসচিব বিপি গোপালিকাও বলেছেন, এই রিপোর্টে যে দাবি করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এবার সোমবার বিধানসভায় পঞ্চায়েত দফতরের বাজেট পেশ করেও ক্যাগের রিপোর্টে আনা অভিযোগ খারিজ করলেন বিভাগীয় মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার।
এদিন দফতর ওয়ারি বাজেটে পঞ্চায়েত এবং কৃষি দফতর নিয়ে আলোচনা ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে পঞ্চায়েত দফতরের বাজেট নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ক্যাগের তোলা এই অভিযোগ খণ্ডন করার চেষ্টা করেন মন্ত্রী। একইসঙ্গে কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে 100 দিনের টাকা না দেওয়া নিয়েও সরব হন এই প্রাক্তন আমলা।
ক্যাগ রিপোর্টে রাজ্য সরকার ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা না দেওয়া নিয়ে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। দফতরগুলি থেকে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার মধ্যে রয়েছে পঞ্চায়েত এবং গ্রামোন্নয়ন দফতরও। এই নির্দিষ্ট দফতরের বাজেট নিয়ে বলতে গিয়ে প্রদীপ মজুমদার বলেন, "সাম্প্রতিক সময়ে বারবার শোনা যাচ্ছে আমরা নাকি কেন্দ্রীয় সরকারকে ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট জমা করিনি।"
মন্ত্রী বলেন, "আমি ইউসি দেওয়ার তথ্য আগেও দিয়েছি। ইউসি না দিলে পরবর্তী ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আসে না।" এদিন প্রদীপ মজুমদার 65টি ইউসি বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে জমা দিয়েছেন। সেখানে কেন্দ্রীয় সরকার এই ইউসিগুলি পেয়েছে বলে প্রাপ্তি স্বীকারও করেছে। এসঙ্গে এদিন প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ইউসিও জমা করা হয়েছে তার প্রাপ্তি স্বীকারের কাগজও তিনি বিধানসভায় লে করেছেন। আলাদা ফাইল করে এই ইউসিগুলি অধ্যক্ষের কাছে জমা করেছেন তিনি। তিনি জানিয়েছেন, এই ইউসি গুলো যে দেওয়া হয়েছে। যাঁরা দেখতে চান তাঁরা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। ইউসি কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক রাজ্যের অডিটর জেনারেলকেও পাঠানো হয়েছে।
একইসঙ্গে এদিন 100 দিনের কাজ নিয়েও কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের কাছ থেকে যে হিসাব দেওয়ার কথা, তাও বিধানসভায় জমা করা হয়েছে ৷ প্রদীপ মজুমদার জানান, বৈদ্যুতিন মাধ্যমে বিভিন্ন সময় বিজেপি নেতারা বলেন হিসেব না দেওয়ার কারণে কেন্দ্র নাকি টাকা দিচ্ছে না। অথচ 20-21 সালের সম্পূর্ণ হিসাব, অডিট রিপোর্ট এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট পাঠানো হয়েছিল 2021 সালের 27 সেপ্টেম্বর, 5টা 35 মিনিটে। সেই তথ্য তুলে ধরে রাজ্যকে বঞ্চনা করার লক্ষ্য নিয়েই কেন্দ্র পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি ৷ প্রসঙ্গত এই দু'টি জিনিস বিধানসভায় 'লে' করার অর্থ এত দিন ধরে বিরোধী রাজনৈতিক দল থেকে যে অভিযোগগুলো তোলা হচ্ছিল তার জবাব দিল রাজ্য। এখন দেখার এই তথ্য দেখার পর বিজেপি এই নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া দেয়।
আরও পড়ুন
1. অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন, ভবানীপুরে স্কুল উদ্বোধনে এসে জানালেন মমতা
2. ফের রাজ্যে শাহী-আগমন, 29 ফেব্রুয়ারি বঙ্গ সফরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী