দার্জিলিং, 23 জুলাই: কেন্দ্রীয় বাজেট থেকে ব্রাত্য চা শিল্প । আর এতেই হতাশ চা রাজ্যের পাশাপাশি গোটা উত্তরের ব্যবসায়ী মহল । রাজ্যের মধ্যে বিশেষ করে উত্তরে চা শিল্পের জন্য এবার অন্তত কেন্দ্রীয় বাজেট দিশা দেখাবে বলে আশা করেছিল ব্যবসায়ীমহল । কিন্তু গোটা বাজেটে চা শিল্প তো বটেই, রাজ্যের পরিকাঠামোগত উন্নয়নে কোনও বরাদ্দই রাখেননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন । হতাশ উত্তরের চা শিল্পমহল ।
এর আগে একাধিকবার কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে উত্তরের চা শিল্পের হাল ফেরাতে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি জানিয়েছিল একাধিক চা সংগঠন । কিন্তু প্রত্যেকবারের মতো এবারের বাজেটেও চা শিল্প নিয়ে কোনও উল্লেখই নেই ।
এই বিষয়ে স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, "উত্তরের একমাত্র আর্থসামাজিক উন্নয়নের সম্বল চা শিল্প । প্রতিবার আমরা চা শিল্পের হাল ফেরাতে স্পেশাল প্যাকেজের দাবি রাখি । কিন্তু এবারও বাজেটে তার কোনও উল্লেখ নেই । অনেক রুগ্ন চা বাগান রয়েছে । একাধিক বন্ধ চা বাগান রয়েছে । সেগুলোর হাল ফেরাতে এবারের বাজেটেও কোনও প্যাকেজ রাখা হল না । এই বাজেটে বিহার, অরুণাচলপ্রদেশ, অসম এমনকি সিকিম উপকৃত হল । আমরা চূড়ান্ত হতাশ ।"
ফেডারেশন চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, "চা শিল্প তো বটেই । উত্তরের উন্নয়নে কোনও বাজেটই রাখা হয়নি । এই বাজেটে বাংলার খাতে কোনও কিছু রাখা হয়নি । উত্তরের ব্যবসায়ীমহল খুব হতাশ ।"
ইন্ডিয়ান চেম্বার অ্যান্ড কমার্সের উত্তরবঙ্গের চেয়ারম্যান সঞ্জয় গোয়েল বলেন, "এই বাজেট মধ্যবিত্তদের জন্য লাভজনক । কিন্তু উত্তরের চা শিল্পে বহুদিন ধরে যে সুনামি এসেছে তা থেকে বাঁচাতে এই বাজেটে কিছু দেখা গেল না । এইজন্য আমরা হতাশ ।"
মূলত, গোটা দেশের মোট চায়ের 30 শতাংশ উত্তরবঙ্গে উৎপাদিত হয় । 13 কোটি কেজি চায়ের মধ্যে প্রায় সাড়ে চার কোটি কেজি চা উত্তরবঙ্গ থেকে সরবরাহ করা হয়ে থাকে । উত্তরবঙ্গে 16টি বন্ধ ও রুগ্ন চা বাগান রয়েছে । গত দুটো পর্যায়ে ক্ষমতায় থাকাকালীন বিজেপি সরকার ডানকানসের মতো বন্ধ ও রুগ্ন চা বাগান অধিগ্রহণ ও চা শিল্পের জন্য স্পেশাল প্যাকেজের আশ্বাস দিলেও তা করা হয়নি । স্পেশাল প্যাকেজ বা চা শিল্পের জন্য এবার বাজেটে বরাদ্দ হলে বাংলার পাশাপাশি অসম, সিকিম-সহ গোটা উত্তর ভারত উপকৃত হত বলে মনে করছে ব্যবসায়ী মহল ।