কলকাতা, 23 জানুয়ারি: দক্ষিণবঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বিপুল পরিমাণ সোনা চোরাচালানের চেষ্টা চেষ্টা বানচাল করল বিএসএফ ৷ সোমবার সন্ধেয় 2টি সোনার ইট এবং 30টি সোনার বিস্কুট-সহ একজন ভারতীয় পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ চোরাকারবারীরা এই সোনার বিস্কুট ও ইট বাংলাদেশ থেকে ভারতে নিয়ে আসছিল ৷ বিএসএফ-এর তরফে জানানো হয়েছে, বাজেয়াপ্ত হওয়া সোনার মোট ওজন 4 কেজি 829 গ্রাম ৷ যার আনুমানিক বাজারমূল্য 3 কোটি 9 লক্ষ 70 হাজার 273 টাকা ৷
ধৃত পাচারকারীর নাম প্রসেনজিৎ মণ্ডল ৷ তিনি উত্তর 24 পরগনার হালদার পাড়ার বাসিন্দা ৷ তাঁকে বাজেয়াপ্ত সোনা-সহ কলকাতার ডিআরআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ৷ বিএসএফ সূত্রে খবর, উত্তর 24 পরগনার আংরাইলে বিএসএফের বাহিনী সীমান্ত তিনজনের গতিবিধি লক্ষ করে ৷ তাঁরা ইছামতি নদী সংলগ্ন (আন্তর্জাতিক সীমান্ত) জঙ্গল এবং বাঁশ ঝাড়ের ঘন বনের মধ্য দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল ৷ এই এলাকায় হালদারপাড়া গ্রাম রয়েছে ৷ সেখানে ইছামতি নদীর তীর পর্যন্ত বাড়িঘর থাকায় দুর্বৃত্তরা অবৈধ কর্মকাণ্ডের সুযোগ পায় ৷
জানা গিয়েছে, বিএসএফ জওয়ানরা চোরাকারবারীদের দেখতে পেয়ে তাড়া করতে থাকে ৷ অনেক চেষ্টার পর বিএসএফ জওয়ানরা সোনা-সহ একজন পাচারকারীকে ধরতে সফল হয় ৷ ধৃতের কাছ থেকে একটি কাপড়ের বেল্ট থেকে 2টি সোনার ইট ও 30টি সোনার বিস্কুট বাজেয়াপ্ত করে বিএসএফ ৷
জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত জানান, 21 জানুয়ারি আংরাইল গ্রামের এক ব্যক্তি তাঁর বাড়িতে আসেন ৷ বাংলাদেশ থেকে সোনা আনতে বলেন ৷ যা একজন বাংলাদেশি নাগরিক সেখানে নিয়ে আসবেন ৷ এরপর দু’জনে ইছামতি নদীর তীরে পৌঁছালে, আরও দু’জনের সঙ্গে দেখা হয় ৷ তাদের সঙ্গে তিনি সোনার পাচারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ৷ তাঁকে একটি মোবাইল ফোন সঙ্গে রাখতে বলা হয়েছিল ৷ যাতে লোকটি তাঁকে সাহায্য করতে পারেন ৷
ধৃত আরও জানায়, তাঁদের মধ্যে এক বাংলাদেশি ইছামতি নদী সাঁতরে পার হয়ে এসে, তাঁর হাতে সোনা তুলে দেন ৷ এরপর বাংলাদেশি নাগরিক ফের ওপারে ফিরে যান ৷ যখন তাঁরা ভারতের দিকে ফিরতে শুরু করেন, তখন ফোনে জানানো হয় যে, বিএসএফ জওয়ানরা তাঁদের উপর নজর রাখছে ৷ অবিলম্বে পালিয়ে যেতে বলা হয় ৷ এ কথা শুনে অন্য দুই ব্যক্তি সেখান থেকে পালিয়ে যান ৷ তবে, বিএসএফ জওয়ানরা প্রসেনজিৎ মণ্ডলকে সোনা-সহ ধরে ফেলে ৷
জিজ্ঞাসাবাদের সময় প্রসেনজিৎ জানিয়েছেন, কাজ সফলভাবে করতে পারলে তাঁকে 500 টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল ৷ তবে, যে বা যাদের তাঁর কাছ থেকে সোনা নেওয়ার কথা ছিল, তাদের সম্পর্কে কোনও তথ্য প্রসেনজিৎ মণ্ডলের কাছে ছিল না ৷ সবকিছু তাঁকে ফোন করে নির্দিষ্ট স্থানে গেলে জানানোর কথা ছিল ৷
বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের জনসংযোগ আধিকারিক তথা ডিআইজি এ.কে. আর্য বলেন, "কুখ্যাত চোরাকারবারিরা দরিদ্র ও নিরীহ মানুষকে সামান্য অর্থের প্রলোভন দিয়ে ফাঁদে ফেলে ৷ পাচারকারী চক্র সরাসরি চোরাচালানের মতো অপরাধে জড়িত হয় না ৷ তাই তাঁরা দরিদ্র মানুষকে টার্গেট করে ৷" তিনি সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী লোকজনদের কাছে আবেদন করেছেন, তাঁরা যদি সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত কোনও তথ্য পান তবে, বিএসএফের সীমা সাথী হেল্পলাইন নম্বর 14419 নম্বরে ফোন করে তথ্য দিতে পারবে ৷
আরও পড়ুন: