সর্দারপাড়া, 7 অগস্ট: ওপার বাংলায় উত্তাল পরিস্থিতি । প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন শেখ হাসিনা । আর বাংলাদেশে অরাজকতার কারণে তটস্থ বিএসএফ । ওই দেশে যেভাবে হত্যা ও লুঠ চলছে, তাতে আতঙ্কে ঘরছাড়া অনেকে । এরই মাঝে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা করছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক । ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে বিএসএফ । অনুপ্রবেশ রুখতে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সেনা জওয়ান । এবার সীমান্তবর্তী এলাকায় অনুপ্রবেশ রুখতে কাঁটাতার লাগোয়া গ্রামগুলোতে গ্রামবাসীদের সতর্ক করল বিএসএফ ।
টানা দু'দিন ধরে গ্রামগুলোতে ঘুরে ঘুরে বিএসএফয়ের জওয়ানরা গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনা করছেন, সতর্ক করছেন । কোনও অপরিচিত মানুষকে গ্রামে কিংবা গ্রামের আশপাশে ঘোরাঘুরি করতে দেখলেই সেনা, ডিআইবি অথবা পুলিশকে খবর দিতে বলা হয়েছে । তবে এসবের মাঝে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা যে বিএসএফ করছে তা কার্যত স্পষ্ট । যে কারণে সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি অনুপ্রবেশ রুখতে গ্রামবাসীদের সহযোগিতা চাইছে বিএসএফ ।
বিএসএফের নর্থবেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি সুর্যকান্ত শর্মা বলেন, "সম্প্রতি বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে । অনুপ্রবেশ, অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি । সীমান্তে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে । সীমান্তবর্তী এলাকাতেও গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হচ্ছে যাতে কোনও সন্দেহজনক কারওকে বা অপরিচিত কারওকে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে আমাদের বা পুলিশকে জানানো হয় ।"
সর্দারপাড়ার বাসিন্দা রোশন হাবিব বলেন, "সকালে বিএসএফ জওয়ানরা এসেছিলেন । তাঁরা আমাদের সতর্ক করেছেন । অপরিচিত কারওকে দেখলে তাঁরা জানাতে বলেছেন ।" আসিফ আলি বলেন, "আমরা সেরকম কোনও চিন্তায় নেই । বিএসএফ আমাদের সবসময় সুরক্ষা দিচ্ছে । তবে রাত ন'টার পর চলাফেরায় রাশ টানতে বলেছেন তাঁরা । খুব দরকার না-থাকলে মাঝরাতে কয়েকদিন সীমান্ত এলাকায় যেতে মানা করেছেন ৷" জাহেদা খাতুন বলেন, "আমাদের কোনও চিন্তা নেই । তবে আমাদের বিএসএফ এসে সতর্ক করে গিয়েছে। আমরাও চোখ-কান খোলা রাখছি ।"
জানা গিয়েছে, ফুলবাড়ি সংলগ্ন ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে সর্দারপাড়া, ধদাগছ, জুমাগছ, লক্ষ্মীস্থান, ভুরিভিটা, নারায়ণজোতের মতো 12টি গ্রাম রয়েছে । প্রায় 10 থেকে 12 হাজার মানুষ ওই সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাস করেন । যাঁদের নিরাপত্তার প্রাথমিক ও মূল দায়িত্ব বিএসএফয়ের । বাংলাদেশে অশান্ত পরিস্থিতির পর সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়াতে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে । দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে কোচবিহার পর্যন্ত উত্তরের পাঁচ জেলার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের প্রায় চার হাজার কিলোমিটার সীমান্তের মধ্যে 936 কিলোমিটার নর্থবেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের অধীনে । সীমান্তে নজরদারির জন্য চারটি সেক্টরে মোট 18টি বিএসএফ ব্যাটেলিয়ন মোতায়েন করা হয়েছে ।