কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি: বিধানসভায় বাজেট-ভাষণ চলাকালীন বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র বাগযুদ্ধ চরম আকার নিল। আলাদা করে জবাব দিতে চাইলেও বাবুলকে অবশ্য সময় দেয়নি তৃণমূল। বক্তব্য রাখার সুযোগ দিলেন না অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বাবুল আলাদা করে বলার সুযোগ পেলে এই বিবাদ যে আরও বড় আকার নিত তা বলাই যায়।
বাজেট নিয়ে আলোচনা হবে আর বিজেপির তরফে রায়গঞ্জের বিধায়ক অশোক লাহিরী বলবেন না এমনটা আশা করাও ভুল। আগে থেকেই বিজেপি জানিয়ে দিয়েছিল শুক্রবার দলের তরফে বাজেট বক্তৃতা শুরু করবেন অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী। আর এই অশোক লাহিড়ীকেই এদিন দেখা গেল বক্তব্য রাখার সময় বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে।
এদিন বাজেট বক্তৃতা উপর আলোচনা "কাহি পে নিগাহে, কাহি পে নিশানা" গান দিয়েই শুরু করেন অশোক। তৃণমূল কংগ্রেসকে কটাক্ষ করতেও ছাড়েননি অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, " বাজেটে সবার জন্য কিছু না কিছু আছে ৷ এটা রূপকথার দেশের বাজেট। সব দেবতাকে খুশি করার চেষ্টা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ যদি এটা বাস্তবায়িত হয় তাহলে কিছু বলার নেই। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস যখন আর্থিক দুরবস্থার কথা বলে তখন মনে হয় এত টাকা আসবে কোথা থেকে ! সব সময় সরকার বলছে টাকা নেই। শেষ পর্যন্ত এই জনমোহিনী বাজেট সামলাতে পারবেন তো ? বাজেট বিবৃতিটা পড়তে গিয়ে মনে হয়েছে, এটা বাজেট বিবৃতি কম, অনেক বেশি নির্বাচনী ইস্তেহার।"
অশোক লাহিড়ী এই বক্তব্য রাখার সময়ই শাসক শিবিরের বিভিন্ন পক্ষ থেকেই বিভিন্ন টিপ্পনি ভেসে আসতে থাকে। কখনও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, কখনও অরূপ বিশ্বাস আবার কখনও অন্যান্য তৃণমূল বিধায়করাও নানা টিপ্পনি করতে থাকেন। এসবের মাঝেই হঠাৎ বলতে ওঠেন রাজ্যের তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। তাঁর মন্তব্য শোনা মাত্রই বাবুলকে উদ্দেশ্য করে বিজেপি বিধায়ক বলেন, "আপনার গান শুনতে আমি ভালবাসি। আপনি গান ভাল বোঝেন। গান নিয়ে কথা বলুন। চাইলে একটা গান শোনান।"
এরপরই বাবুল উঠে পালটা জবাব দিতে শুরু করেন অশোক লাহিড়ীকে। তিনি বলেন, "আপনি অর্থনীতিবিদ ৷ আপনার গলায় অর্থনীতির কথাই শুনতে ভালো লাগে, গানের নয়।" আরও কিছু বলতে যাচ্ছিলেন তিনি কিন্তু বাবুলকে থামিয়ে দেন স্পিকার। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠতে অনুমান করেই বাবুল এবং অশোক দু'জনকেই থামানোর চেষ্টা করেন।
তৃণমূল পরিষদীয় দলের তরফ থেকে অরূপ বিশ্বাসও বাবুলকে চুপ করার কথা বলেন। তবে মন্ত্রী দাবি জানাতে থাকেন তিনি কিছু বলতে চান, এই অবস্থায় অরূপ বলেন, "যদি কিছু বলার থাকে তাহলে মুখ্য সচেতকের কাছ থেকে সময় চেয়ে নাও।" যদিও শেষ পর্যন্ত তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে এই ব্যাপারে বলার সুযোগ দেননি। অধ্যক্ষও আলাদা করে তাঁকে সময় দেননি। ফলে এই বিতর্ক আর বেশি দূরে এগোয়নি।
আরও পড়ুন
'চা বাগানে পাট্টা নয়, চাই মালিকানা'; মুলতুবি প্রস্তাব না মানায় বিধানসভা ওয়াক আউট বিজেপির
দিল্লি থেকে ফিরেই দল ছাড়া বা পদত্যাগ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন অভিনেতা-সাংসদ দেব
রাতেই বিজেপির নির্বাচনী কমিটির বড় বৈঠক, থাকছেন সুকান্ত-শুভেন্দু-দিলীপ