কলকাতা, 30 সেপ্টেম্বর: আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় বিচারের দাবিতে রবিবার মশাল মিছিল করেন জুনিয়র ডাক্তাররা । শহরের একাধিক জায়গা থেকে এ দিনের মিছিলে যোগ দেন সাধারণ মানুষও ৷ যাদবপুরে একটি মিছিল থেকে 'কাশ্মীর মাঙ্গে আজাদি' স্লোগান ওঠে ৷ এই নিয়ে বাম-তৃণমূলকে একযোগে আক্রমণ শানালেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার ৷
তিনি এ দিন দমদম বিমানবন্দরের দাঁড়িয়ে বলেন, "অতি বামেরা মূল আন্দোলনকে হাইজ্যাক করার চেষ্টা করছে । আর এটা তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অঙ্গুলিহেলনেই করছে । কারণ, তারা জানে যে এই স্লোগানগুলো উঠলে সাধারণ মানুষ আন্দোলন থেকে পিছিয়ে আসবে । সাধারণ মানুষ কাশ্মীরের আজাদি চায় না । তারা ভারতবর্ষকে নিয়ে খুশি আছে । এরাই নির্বাচনের সময় নো ভোট টু বিজেপি স্লোগান তুলেছিল । এরা সামনে বামপন্থী ৷ কিন্তু পেছন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী সমর্থক ।"
'কাশ্মীর মাঙ্গে আজাদী ' স্লোগান প্রসঙ্গে মুখ খোলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও ৷ তিনি বলেন, "পুলিশ তো এই নিয়ে কিছুই করবে না । এরাই নির্বাচনের সময় নো ভোট টু মোদি স্লোগান তোলে । এরা তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চাষ করা । মুখ্যমন্ত্রী এই রাজ্যে দেশবিরোধী-রাষ্ট্রদ্রোহীদের লালিত পালিত করে রেখেছেন । এই কাজের সঙ্গে তাঁর দলেরও একটা অংশ যুক্ত রয়েছে । এটা আসলে দেশের মধ্যে আরেকটা দেশ তৈরি করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে ।"
চা-বাগানের শ্রমিকদের পুজো বোনাসের দাবিতে 12 ঘণ্টার বন্ধ চলছে পাহাড়ে । এই নিয়ে সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, "চা-শ্রমিকদের দাবিগুলো অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক । গতবার যত বোনাস দেওয়ার কথা ছিল, ততটা দেওয়া হয়েছিল ৷ এই বছর মালিকপক্ষ অতটা বোনাসের কথাও ভাবছে না । বরং তার থেকে আরও কম বোনাস দেওয়ার কথা বলছে । এইবার 13 শতাংশ বোনাস দেওয়ার কথা বলছে ৷ আগের বার 18 থেকে 19 শতাংশ বোনাস দেওয়া হয়েছিল । চা-শ্রমিকদের দাবিদাওয়াগুলি পূরণ হওয়া উচিত । এই সরকার চা বাগানের মালিকদের হয়ে দালালি করছে । আর যারা এখন চা বাগানগুলি চালায় তারা সবাই কালীঘাটে থাকেন । মুখ্যমন্ত্রীর পাড়ায় থাকেন এরা সবাই । এরা মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিবেশী । মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এদের খুব ভালো সম্পর্ক আছে ৷ তাই তো এরা চা-শ্রমিকদের বঞ্চিত করতে পাড়ছে ।"
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেছেন, বাংলা একমাত্র রাজ্য যে কেন্দ্রের বন্যার টাকার থেকে বঞ্চিত । এমনকী কেউ কেন্দ্র থেকে তাঁর সঙ্গে এই বিষয় কেউ যোগাযোগ করেনি । এ বিষয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, "আমফানের সময় হাজার কোটি টাকা রাজ্যে এসেছিল । কিন্তু টাকা কোথায় উড়ে গেল ? তৃণমূলের নেতার অ্যাকাউন্টে এবং পঞ্চায়েতের প্রধানের স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে সেই টাকা ঢুকেছে ৷ কিন্তু যারা আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল, তাদের জিজ্ঞেস করলেই জানা যাবে যে তারা সেই টাকা পাননি । প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে প্রথমে প্রধানমন্ত্রী কিংবা তাঁর দফতরে যোগাযোগ করতে হয় । মুখ্যমন্ত্রী কি প্রধানমন্ত্রীকে কোনও চিঠি লিখেছেন ? উনি তো সারা জীবন লড়াই করতেই ব্যস্ত ।"
সবজির দাম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য টাস্ক ফোর্স বাজারে হানা দিচ্ছে । তবু জিনিসপত্রের দাম কমছে না বলে অভিযোগ ৷ এই নিয়ে সুকান্ত মজুমদার বলেন, "এটা সবার জানা যে তৃণমূল নেতাদেরকে টাকা দিলে যা ইচ্ছে তাই রেট নেওয়া যায় । সব বাজারগুলো থেকে তোলাবাজি হয় । কোথায় কে দোকান বসাবে এবং সেই দোকান থেকে কী বিক্রি হবে, সব কিছুই তৃণমূল নেতারা সিদ্ধান্ত নেন । স্বাভাবিকভাবে এবার যারা কাটমানি দেবে তারা তো আর ওই টাস্ক ফোর্সকে মানবে না ।"