কলকাতা, 16 জুন: ভোট পরবর্তী হিংসায় আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের নিয়ে রাজভবনে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের সঙ্গে দেখা করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ৷ আর রবিবার রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সন্ধ্যায় রাজভবনের বাইরে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা দাবি করেন, দুর্গাপুজো পর্যন্ত রাজ্যে রেখে দিতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী ৷
এদিন রাজভবনের ভিতরে শুভেন্দুকে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের সঙ্গেই বসে থাকতে দেখা যায় ৷ এদিন অবশ্য রাজভবনে আক্রান্তদের নামের তালিকা মিলিয়ে ঢুকতে দেয় পুলিশ ৷ পরে রাজ্যপাল আনন্দ বোস জানান, মোট 1 হাজার 25টি অভিযোগ পেয়েছেন তিনি ৷ একই সঙ্গে এই হিংসার শেষ দেখে ছাড়বেন বলেও কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দেন রাজ্যপাল ৷ বক্তব্য রাখতে গিয়ে এদিন রাজ্যপাল বাংলাতে বলেন, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টে একটা পর্যবেক্ষণ সামনে এসেছে ৷ তাতে তারা আশ্চর্য যে, রাজ্যপাল গৃহবন্দি রয়েছেন। যাঁদের উপর হিংসাত্মক ঘটনা ঘটেছে, তাঁরা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে পারেননি।"
অন্যদিকে, পরে রাজভবন থেকে বেরিয়ে নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "রাজ্যপালকে বলেছি বাংলায় গণতন্ত্রের চারটি স্তম্ভই আক্রান্ত ৷ পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষের রেশন কার্ড নিয়ে নেওয়া হয়েছে ৷ গবাদি পশু পর্যন্ত নিয়ে নেওয়া হয়েছে।" যে জায়গাগুলিতে হিংসার ঘটনা ঘটছে, রাজ্যপালকে সেই এলাকাগুলি পরিদর্শন করতেও অনুরোধ করেছেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ একই সঙ্গে শুভেন্দু এও বলেন, "রাজ্যপাল কথা দিয়েছেন যা করার তিনি করবেন ৷" এদিন আক্রান্তদের সঙ্গে একপ্রস্থ কথাও বলেন রাজ্যপাল ৷ পরে তিনি বলেন, "আমরা বাংলাকে হিংসামুক্ত করব। আমি নেতাজির নামে শপথ করে বলছি, রবীন্দ্রনাথ, স্বামী বিবেকানন্দের নামে শপথ করে বলছি, শেষ পর্যন্ত লড়াই করব।"
এর আগে শুক্রবার, 14 জুন রাজভবনের যাওয়ার পথে শুভেন্দু অধিকারীকে আটকে দেয় পুলিশ ৷ তাঁর সঙ্গেই ছিলেন ভোট পরবর্তী হিংসার আক্রান্তদের পরিবার-পরিজন ৷ এরপরই কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ৷ পরে কড়া বিবৃতি দিয়েছিলেন রাজ্যপালও ৷ তিনি এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে জানান, "আক্রান্তরা আমার সঙ্গে যতক্ষণ না দেখা করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র দফতরের কেউ দেখা করতে পারবেন না ৷" এদিন শুভেন্দু তাঁর দলের কর্মীদের উপর হিংসার ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন রাজ্যপালকে। দুর্গাপুজো পর্যন্ত বাংলায় যাতে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকে, সেই আর্জিও জানান রাজ্যপালকে।