কলকাতা, 28 অগস্ট: আজ রাজ্যে বিজেপির তরফে 12 ঘণ্টার বাংলা বনধে দেখা গেল মিশ্র প্রভাব ৷ কোথাও কর্মব্যস্ত দিন ৷ আবার কোথাও, দোকানপাট বন্ধ রেখে বিজেপির বনধকে সফল করার ছবি ধরা পড়ল ৷ আবার কোথাও বনধ সফল করতে নেমে পুলিশ ও শাসকদলের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ালেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা ৷ রাজ্যের দক্ষিণ প্রান্তে সব মিলিয়ে বুধবারের বনধ ছিল ঘটনাবহুল ৷
কলকাতা
বিজেপির 12 ঘণ্টার বনধে খুব একটা প্রভাব পড়ল না কলকাতায় ৷ যান চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও, কলকাতার রাস্তাঘাটে লোকজনের সংখ্যা খানিকটা কম ছিল ৷ তবে, জনজীবন ব্যাহত হয়নি ৷ শুধুমাত্র শিয়ালদা, বড়বাজার-সহ উত্তর কলকাতায় বিজেপির তরফে বনধ সফল করার চেষ্টা হয় ৷ তবে, পুলিশি তৎপরতায় সেই সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় বলেই দাবি করা হয়েছে ৷
পশ্চিম মেদিনীপুর
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার 15টি বিধানসভায় বিজেপির ডাকা বনধে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ৷ বনধের সমর্থনে বিজেপির তরফে কোথাও টায়ার জ্বালানো হল ৷ তো কোথাও তৃণমূলের কর্মীদের সঙ্গে গণ্ডগোল ৷ আবার কোথাও কোথাও দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপি নেতা, কর্মীদের তরফে ৷ তবে, রাস্তায় বাসের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম থাকায়, লোকজনকে হয়রানির শিকার হতে হয় ৷ এইদিন সকাল থেকেই মেদিনীপুরে জেলা বিজেপি পার্টি অফিস পুলিশে ছয়লাপ ছিল ৷
আসানসোল
বনধ ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায় আসানসোলের জামুড়িয়ায় ৷ জামুড়িয়া বাজারে বনধ সমর্থক এবং তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি বেঁধে যায় ৷ দু’পক্ষের বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে জামুড়িয়া থানার পুলিশ ৷ আসানসোল শহরে তেমনভাবে বনধ সমর্থকদের দেখা না-গেলেও, রেল অবরোধের চেষ্টা হয়েছে বার্নপুরে ৷ নিয়ামতপুর, রানিগঞ্জে বনধ সমর্থকরা রাস্তায় নেমে বনধ করার চেষ্টা করে ৷ তবে, সব জায়গায় পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে দেয় ৷
দুর্গাপুর
বুধবার সকাল থেকে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে দফায়-দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থকদের ৷ দুর্গাপুর বাস স্ট্যান্ডে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার টিকিট কাউন্টারে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে ৷ অন্যদিকে দুর্গাপুরের মুচিপাড়ায় 19 নম্বর জাতীয় সড়কে বিজেপি কর্মীরা বনধ করাতে গেলে, তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা বাধা দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ৷
বীরভূম
12 ঘণ্টার বনধের সমর্থনে সিউড়িতে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করা হয় বিজেপির তরফে ৷ যার জেরে ভোগান্তিতে পড়েন পথচলতি মানুষজন ৷ রাস্তায় বসে পড়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির স্থানীয় নেতারা ৷ সিউড়িতে পুলিশের সঙ্গে রীতিমতো ধস্তাধস্তি হয় বিজেপির ৷ সকাল থেকে বেশকয়েক ঘণ্টা অবরোধের জেরে যান চলাচল স্তব্ধ হয়ে যায় ৷ রামপুরহাট স্টেশনেও রেল অবরোধ করেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা ৷ প্রায় 3 ঘণ্টা অবরোধ চলে সেখানে ৷ যার জেরে সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রীরা ৷
পূর্ব বর্ধমান
বিজেপির ডাকা 12 ঘণ্টার বাংলা বনধে পূর্ব বর্ধমান জেলায় মিশ্র প্রভাব পড়ল ৷ সকাল থেকে অন্যান্য দিনের মতো দোকানপাট খোলা থাকলেও, ছবিটা কিছুটা হলেও অন্যরকম ছিল আজ ৷ রেল চলাচল স্বাভাবিক হলেও, কাটোয়া-ব্যান্ডেল শাখায় বেশ কিছু বিজেপি সমর্থক রেললাইনের নেমে রেল অবরোধ করে ৷ পরে রেল পুলিশের সব থেকে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেওয়া হয় ৷ বর্ধমান শহরের বীরহাটা এলাকায় বিজেপি নেতা কর্মীরা পথ অবরোধ করেন ৷ অন্যদিকে, বিজেপির অভিযোগ সাধারণ মানুষ তাদের বনধকে সমর্থন করে দোকানপাট বন্ধ রাখলেও, তৃণমূলের তরফে জোর করে দোকান খোলানো হয়েছে ৷ বাস চলাচল বন্ধ রাখা হলেও, শাসকদলের তরফে হুমকি দিয়ে বাস চালানো হয় ৷
পুরুলিয়া
পুরুলিয়া শহরেও বনধের সমর্থনে মিছিল বিজেপির ৷ যার নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির জেলা সভাপতি ও সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো ৷ ব্যবসায়ীদের দোকান বন্ধ রাখতে এবং পুরুলিয়া সরকারি বাসস্ট্যান্ডে কাউন্টার বন্ধ করতে অনুরোধ করেন বিজেপি নেতা, কর্মীরা ৷ বনধের প্রতিবাদে শহরে পালটা মিছিল করে তৃণমূল ৷ সেই মিছিলকে ঘিরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে ৷ এদিন পুরুলিয়া শহরে শাসক ও বিরোধী দুই পক্ষ মিছিল করার সময় বচসায় জড়িয়ে পড়ে ৷ পুলিশ পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ৷
বাঁকুড়া
বাঁকুড়া বিজেপির ডাকা বনধকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়াল বাঁকুড়ার দুর্লভপুর মোড়ে ৷ বুধবার বিজেপির কর্মী সমর্থকরা দুর্লভপুর মোড়ে 60 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন ৷ অবরোধস্থলে জমায়েত করে তৃণমূল ৷ দু’পক্ষের মধ্যে সাময়িক উত্তেজনা তৈরি হয় ৷ এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধকারীদের আটক করে থানায় নিয়ে যায় ৷ পরে 60 নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধমুক্ত হয় ৷