ETV Bharat / state

শপথগ্রহণে মিটবে কি রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত, দীর্ঘদিন পর বিধানসভায় আনন্দ বোস - OATH TAKING CEREMONY IN ASSEMBLY

প্রায় 2 বছর পর রাজ্য বিধানসভায় পা-রাখবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ উপনির্বাচনে জয়ী ছয় তৃণমূল প্রার্থীকে শপথবাক্য পাঠ করাবেন তিনি ৷

OATH TAKING CEREMONY IN ASSEMBLY
সোমবার রাজ্য বিধানসভায় নবনির্বাচিত বিধায়কদের শপথবাক্য পাঠ করাবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ (নিজস্ব চিত্র)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 1, 2024, 8:16 PM IST

কলকাতা, 1 ডিসেম্বর: গত কয়েকটি বিধানসভা উপনির্বাচনের পর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে কম টানাপোড়েন হয়নি রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের মধ্যে ৷ অবশেষে সেই টানাপোড়েনের পরিস্থিতির অবসানের ইঙ্গিত পাওয়া গেল ৷ কারণ, সোমবার সদ্য নির্বাচিত ছয় বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করাতে বিধানসভায় আসছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ শনিবারই রাজভবনের তরফ একথা জানানো হয়েছিল ৷

সূচি মেনে দুপুর 12টায় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে ৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে 2023 সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর আবারও রাজ্য বিধানসভায় আসবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হয়ে আসার পর, বিধানসভা চলাকালীন রাজ্যপালের ভাষণে 2023 সালে মাত্র একবার যোগ দিয়েছেন তিনি ৷

তারপর নানা ইস্যুতে রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের সংঘাত ক্রমশ বেড়েছে ৷ দু’তরফের সম্পর্ক এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, রাজ্যপাল পরবর্তী সময়ে আর ভাষণে যোগ দিতেও আসেননি বিধানসভায় ৷ 2024 সালের বাজেট অধিবেশনও রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৷ ফলে দীর্ঘ সময় বাদে আগামিকাল অর্থাৎ, সোমবার রাজ্য বিধানসভায় আসবেন রাজ্যপাল ৷

প্রসঙ্গত, গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে ধূপগুড়ির বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করাতে রাজ্যপালকে বিধানসভায় আসতে বলা হয়েছিল ৷ সেই সময় রাজ্যপাল পাল্টা রাজভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছিলেন ৷ যা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার ৷ ফলে দু’তরফের টানাপোড়েন শুরু হয় ৷

একই পরিস্থিতি তৈরি হয় এ বছরের জুন মাসে ৷ সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেন সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানও বিধানসভায় করতে চেয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দেওয়া হয় ৷ সেখানেও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানিয়ে দেন, শপথ গ্রহণ রাজভবনেই হবে ৷ সেই সময় অবশ্য রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজভবনের অস্থায়ী মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে ৷ যা নিয়ে রাজ্যপালকে প্রতিনিয়ত নিশানা করছিলেন তৃণমূলের একাংশ নেতানেত্রী ৷ বাদ যাননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ৷

সেই ইস্যুকে হাতিয়ার করে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে শপথ গ্রহণে যেতে রাজি হননি ৷ তিনি জানিয়েছিলেন, রাজভবনে গিয়ে শপথ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে তিনি নিরাপদ বোধ করছেন না ৷ পরবর্তী সময়ে বিধানসভার উপাধ্যক্ষ তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন ৷ তবে, সেই সব বিতর্ক দূরে সরিয়ে ফের একবার রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালকে এক ফ্রেমে দেখা যাবে ৷

মূলত অধ্যক্ষ এবং পরিষদীয় মন্ত্রীর চিঠির পরেই রাজ্যপাল উদ্যোগী হয়ে বিধানসভায় আসার কথা জানিয়েছেন ৷ এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ ৷ কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য সরকার ও বিধানসভার সঙ্গে সম্পর্কের যে শিথিলতা, তা কি এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে কাটবে ৷ প্রশ্নটা ঘোরাফেরা করছে বিধানসভার অলিন্দে ৷

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূল কংগ্রেসের এক বিধায়ক বলছেন, "রাজ্যপাল বিধানসভায় আসছেন, তাঁকে স্বাগত ৷ কিন্তু, বিধানসভায় যদি অধ্যক্ষকে শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য অনুমতি দিতেন, তাহলে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হত ? একটা দিকে ভালো, ঊর্ধ্বতন থাকতে অধস্তন শপথবাক্য পাঠ করাবেন এমনটা মেনে নেওয়া যায় না ৷ রায়াত-সায়ন্তিকাদের ক্ষেত্রে যেভাবে অধ্যক্ষের উপস্থিতিতেই উপাধ্যক্ষকে শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছিল, তা আদতে অধ্যক্ষের চেয়ারের অপমান ৷ এবার অন্তত তা হচ্ছে না ৷ যদি সত্যি সরকারের সঙ্গে সু-সম্পর্ক চান রাজ্যপাল ৷ তাহলে রাজভবনে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা বিলগুলি এবার ছেড়ে দিন ৷ তাহলে সম্পর্কের আরও উন্নতি হবে ৷"

কলকাতা, 1 ডিসেম্বর: গত কয়েকটি বিধানসভা উপনির্বাচনের পর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান নিয়ে কম টানাপোড়েন হয়নি রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের মধ্যে ৷ অবশেষে সেই টানাপোড়েনের পরিস্থিতির অবসানের ইঙ্গিত পাওয়া গেল ৷ কারণ, সোমবার সদ্য নির্বাচিত ছয় বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করাতে বিধানসভায় আসছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ শনিবারই রাজভবনের তরফ একথা জানানো হয়েছিল ৷

সূচি মেনে দুপুর 12টায় শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হওয়ার কথা রয়েছে ৷ সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে 2023 সালের ফেব্রুয়ারি মাসের পর আবারও রাজ্য বিধানসভায় আসবেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ৷ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হয়ে আসার পর, বিধানসভা চলাকালীন রাজ্যপালের ভাষণে 2023 সালে মাত্র একবার যোগ দিয়েছেন তিনি ৷

তারপর নানা ইস্যুতে রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের সংঘাত ক্রমশ বেড়েছে ৷ দু’তরফের সম্পর্ক এমন পর্যায়ে চলে যায় যে, রাজ্যপাল পরবর্তী সময়ে আর ভাষণে যোগ দিতেও আসেননি বিধানসভায় ৷ 2024 সালের বাজেট অধিবেশনও রাজ্যপালের ভাষণ ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৷ ফলে দীর্ঘ সময় বাদে আগামিকাল অর্থাৎ, সোমবার রাজ্য বিধানসভায় আসবেন রাজ্যপাল ৷

প্রসঙ্গত, গতবছর সেপ্টেম্বর মাসে ধূপগুড়ির বিধায়ককে শপথবাক্য পাঠ করাতে রাজ্যপালকে বিধানসভায় আসতে বলা হয়েছিল ৷ সেই সময় রাজ্যপাল পাল্টা রাজভবনে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছিলেন ৷ যা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার ৷ ফলে দু’তরফের টানাপোড়েন শুরু হয় ৷

একই পরিস্থিতি তৈরি হয় এ বছরের জুন মাসে ৷ সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রায়াত হোসেন সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানও বিধানসভায় করতে চেয়ে রাজ্যপালকে চিঠি দেওয়া হয় ৷ সেখানেও রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস জানিয়ে দেন, শপথ গ্রহণ রাজভবনেই হবে ৷ সেই সময় অবশ্য রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজভবনের অস্থায়ী মহিলা কর্মীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠে ৷ যা নিয়ে রাজ্যপালকে প্রতিনিয়ত নিশানা করছিলেন তৃণমূলের একাংশ নেতানেত্রী ৷ বাদ যাননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ৷

সেই ইস্যুকে হাতিয়ার করে সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজভবনে শপথ গ্রহণে যেতে রাজি হননি ৷ তিনি জানিয়েছিলেন, রাজভবনে গিয়ে শপথ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে তিনি নিরাপদ বোধ করছেন না ৷ পরবর্তী সময়ে বিধানসভার উপাধ্যক্ষ তাঁদের শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন ৷ তবে, সেই সব বিতর্ক দূরে সরিয়ে ফের একবার রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালকে এক ফ্রেমে দেখা যাবে ৷

মূলত অধ্যক্ষ এবং পরিষদীয় মন্ত্রীর চিঠির পরেই রাজ্যপাল উদ্যোগী হয়ে বিধানসভায় আসার কথা জানিয়েছেন ৷ এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ ৷ কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে রাজ্য সরকার ও বিধানসভার সঙ্গে সম্পর্কের যে শিথিলতা, তা কি এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে কাটবে ৷ প্রশ্নটা ঘোরাফেরা করছে বিধানসভার অলিন্দে ৷

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক তৃণমূল কংগ্রেসের এক বিধায়ক বলছেন, "রাজ্যপাল বিধানসভায় আসছেন, তাঁকে স্বাগত ৷ কিন্তু, বিধানসভায় যদি অধ্যক্ষকে শপথবাক্য পাঠ করানোর জন্য অনুমতি দিতেন, তাহলে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হত ? একটা দিকে ভালো, ঊর্ধ্বতন থাকতে অধস্তন শপথবাক্য পাঠ করাবেন এমনটা মেনে নেওয়া যায় না ৷ রায়াত-সায়ন্তিকাদের ক্ষেত্রে যেভাবে অধ্যক্ষের উপস্থিতিতেই উপাধ্যক্ষকে শপথবাক্য পাঠ করানোর দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছিল, তা আদতে অধ্যক্ষের চেয়ারের অপমান ৷ এবার অন্তত তা হচ্ছে না ৷ যদি সত্যি সরকারের সঙ্গে সু-সম্পর্ক চান রাজ্যপাল ৷ তাহলে রাজভবনে দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা বিলগুলি এবার ছেড়ে দিন ৷ তাহলে সম্পর্কের আরও উন্নতি হবে ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.