বাসন্তী, 25 ফেব্রুয়ারি: ঘড়ির কাঁটায় তখন প্রায় সকাল 8টা ৷ সাইকেল চালিয়ে রওনা দিয়েছেন জনৈক ব্যক্তি ৷ মনে হতে পারে যেন, নিত্যদিনের কাজের সন্ধানে বেরিয়েছেন ৷ বাসন্তী ব্লকের বিভিন্ন গ্রামে পৌঁছে গিয়ে সাধারণ মানুষের সুখ-দুঃখ, চাওয়া-পাওয়ার খোঁজখবর নিচ্ছেন ৷ কখনও যক্ষ্মা রোগীর বাড়িতে যাচ্ছেন। কখনও সরকারি পরিষেবার মান খতিয়ে দেখছেন। কখনও আবার গ্রাহকরা অনুদান সঠিক সময়ে পাচ্ছেন কি না তার হিসেব রাখছেন ৷ কখনও আবার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ঢুঁ মারছেন ৷
অনেকেই ওই ব্যক্তির পরিচয় জানেন। কেউ কেউ আবার তাঁকে চেনেনই না ৷ ওই ব্য়ক্তি স্বয়ং বাসন্তী ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারীক সঞ্জীব সরকার ৷ এই প্রসঙ্গে বাসন্তীর বিডিও সঞ্জীব সরকারকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "আমি প্রায় প্রতিদিনই সকালে কখনও পায়ে হেঁটে আবার কখনও বা সাইকেল চালিয়ে পৌঁছে যাই গ্রামের মানুষের কাছে ৷ তাঁদের সঙ্গে যদি মিশতে না-পারি, তাহলে তাদের সমস্যার কথা জানতে পারব কী করে ?"
অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে গিয়ে শিশুদের খাবারের গুণগত মান ঠিক আছে কি না, তা নিজে চেখে পরীক্ষা করে বিডিও সঞ্জীব সরকার ৷ পড়াশোনা ঠিকঠাক হচ্ছে কি না, তাও যাচাই করছেন তিনি ৷ কেউ কেউ জানাচ্ছেন, বার্ধক্য ভাতা কিংবা বিধবা ভাতার জন্য একাধিকবার ব্লক অফিসে গিয়েও কোনও কাজের কাজ হয়নি ৷ সেই সমস্যার কথাও সরাসরি শুনছেন সঞ্জীব ৷
বাসন্তী ব্লকের কয়েকটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সদস্যরা বলেন, "প্রায় প্রতিদিনই সকালে কোনও না কোনও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে গিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন বিডিও ৷ সমস্যা থাকলে তা সমাধানের পথ বাতলে দিচ্ছেন ৷ আমাদের বিভিন্ন সময়ে নানারকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে ৷ আগে এই অভাব, অভিযোগের কথা জানাতে সিডিপিও কিংবা বিডিও-র অফিসে যেতে হতে ৷ আর এখন স্বয়ং বিডিও আমাদের কেন্দ্রে হাজির হয়ে সুবিধা অসুবিধার কথা জানতে চাইছেন ৷" সঞ্জীব সরকারের আগে কোনও বিডিও বাসন্তী ব্লক কেন সমগ্র ক্যানিং মহকুমা এলাকায় এমনভাবে জনসংযোগের কাজ করেননি বলে মত স্থানীয়দের ৷
আরও পড়ুন: