বর্ধমান, 4 জুলাই: সামনের সপ্তাহেই বিয়ে। নিয়ম মেনে তাই আইবুড়ো ভাতের আয়োজন করা হল অফিসে ৷ বর্ধমান 1-এর বিডিও রজনীশ কুমার যাদবকে আইবুড়ো ভাত খাওয়ালেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী কাকলি তা গুপ্ত। এরপর বিডিও পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেন তৃণমূল নেত্রীকে। সেই ভিডিয়ো সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক ৷
বিডিও রজনীশ যাদব বলেন, "সামনের সপ্তাহে আমার বিয়ে। পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে আমাকে ভালোবেসে একটা খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন করেছিল। অফিসের একটা ওয়েটিং রুমে আয়োজন করা হয় ৷ সেখানে পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষরা ছিলেন। উনি আমার মায়ের বয়সি। তিনি আমাকে আশীর্বাদ করেন। তাই তাঁকে প্রণাম করে আশীর্বাদ নিয়েছি। আমার সরকারি চেম্বারে এই অনুষ্ঠান হয়নি ৷ তাই পারিবারিক শিক্ষা থেকেই মাতৃস্থানীয় নেত্রী আশীর্বাদ করলে তাঁকে প্রণাম করি। এখানে রাজনীতি করা অমূলক ৷"
তৃণমূল কংগ্রেসের নেত্রী তথা বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কাকলি তা গুপ্ত বলেন, "আইবুড়ো ভাত যেমন হয় তেমনই আয়োজন করা হয় পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে। উনি সরকারি আধিকারিক ৷ শুনলাম এটা নিয়ে মুখরোচক কথাবার্তা হচ্ছে। এটা একটা সৌজন্যবোধ। উনি নতুন জীবনে পা দিচ্ছেন। ফলে একসঙ্গে কাজ করার জন্য একটা ভ্রাতৃত্ববোধ তৈরি হয়। তিনি আমাদের নিমন্ত্রণ করেছেন। আর ওনার বয়সি আমার ছেলে আছে। ফলে তিনি আধিকারিক হলেও একটা সৌজন্যতার খাতিরে আমরা বিশেষ খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করি। যাদের কাজ নেই তাঁরা এটা নিয়ে তিলকে তাল করছে। সমালোচনা করা সহজ কাজ। আমাকে মাতৃসমা মনে করে প্রণাম করার জন্য উনি হেঁট হয়েছিলেন ৷"
বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, "অফিস সময়ে আমরা মনে করি সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়া উচিত। সেখানে পঞ্চায়েত সমিতির অফিসে বিডিওকে বিয়ে উপলক্ষে আইবুড়ো ভাত খাওয়ানো হচ্ছে। সেখানে প্রশাসনিক কাজ হয়। আবার বিডিও তৃণমূল নেত্রীকে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করছেন। এটা তৃণমূল কংগ্রেসের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।"
জানা গিয়েছে, আগামী সপ্তাহে বর্ধমান-1 বিডিও রজনীশ কুমার যাদবের বিয়ের দিন ঠিক করা হয়েছে। সেই উপলক্ষে বর্ধমান-1 পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে বিডিও রজনীশ যাদবকে আইবুড়ো ভাত খাওয়ানোর একটা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান কাকলি তা গুপ্ত। তিনি আইবুড়ো ভাত খাইয়ে তাঁর কপালে চন্দনের ফোঁটা দেন। এরপর বিডিও তাঁকে প্রণাম করেন। এই ভিডিও শুভেন্দু অধিকারী সোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করার পরেই শুরু হয় বিতর্ক।