ETV Bharat / state

বাঁকুড়ার লালমাটিতে কি ফের পদ্ম ফোটাতে পারবেন সুভাষ সরকার ? - Lok Sabha Election 2024

Lok Sabha Election 2024: লালদুর্গ বাঁকুড়ায় ঘাসফুল ফুটিয়েছিলেন মুনমুন সেন ৷ কিন্তু 2019 সালে তৃণমূলের হাত থেকে ওই কেন্দ্র ছিনিয়ে নেয় বিজেপি ৷ সাংসদ হন ড. সুভাষ সরকার ৷ 2024 সালেও তিনি প্রার্থী ৷ গত পাঁচ বছরে কী কাজ করেছেন তিনি ? কী বলছে তাঁর উন্নয়নের খতিয়ান ৷ সাধারণ মানুষেরই বা কী মত ? খতিয়ে দেখল ইটিভি ভারত ৷

Lok Sabha Election 2024
Lok Sabha Election 2024
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Apr 10, 2024, 10:53 PM IST

Updated : Apr 11, 2024, 10:30 AM IST

বাঁকুড়ার লালমাটিতে কি ফের পদ্ম ফোটাতে পারবেন সুভাষ সরকার

বাঁকুড়া, 10 এপ্রিল: ড. সুভাষ সরকার ৷ বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ৷ এক সময়ের লালদুর্গ বাঁকুড়ায় 2019 সালে তাঁর হাত ধরেই পদ্ম ফুটেছিল ৷ এবারও তিনিই বিজেপির প্রার্থী ৷ পাঁচবছর বাম ও তৃণমূলের অনুন্নয়নই ছিল তাঁর হাতিয়ার ৷ তবে এবার তাঁকে প্রচারে রাখতে হচ্ছে নিজের রিপোর্ট কার্ডও ৷

কী বলছে সেই রিপোর্ট কার্ড ৷ সুভাষ সরকার জানিয়েছেন, কোভিডের কারণে দুই বছর সাংসদ তহবিলের কোনও টাকা পাওয়া যায়নি । গত পাঁচ বছরে সাংসদ তহবিলে তাঁর মোট প্রাপ্ত টাকা হল 16 কোটি 66 হাজার টাকা । যার মধ্যে 28 হাজার টাকা মতো পড়ে রয়েছে বাকি সব টাকা মানুষের উন্নয়নমূলক খাতে খরচ হয়ে গিয়েছে ।

তবে তাঁর উন্নয়নের কাজ এর থেকে বেশি হতে পারত, এমনটাই দাবি করেছেন তিনি ৷ সুভাষ সরকারের কথায়, তিনি সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্য প্রথম দেড় বছর কোনও কাজই করতে পারেননি । তাঁর পূর্ববর্তী তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ অর্থাৎ মুনমুন সেন 2 কোটি 42 লাখ টাকা অ্যাকাউন্টে রেখে চলে গিয়েছিলেন, সেটা পুনরায় আবার ফিরে এসেছে । পুরো বাঁকুড়া লোকসভা এলাকায় প্রায় 1480টি ভিন্নভিন্ন প্রজেক্ট হয়েছে ৷

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, আর কী কী কাজ করেছেন বাঁকুড়ার সাংসদ -

  • কেশরায় কাটজুড়িডাঙা হল্ট স্টেশন ।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুল, যা সারা ভারতবর্ষে মোট ছ’টি রয়েছে ।
  • কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের অনুমোদন বাঁকুড়াতে ।
  • বাঁকুড়ার উপর দিয়ে বারাণসী কলকাতা এক্সপ্রেসওয়ে, যার কস্ট ভ্যালু 35 হাজার কোটি টাকা ৷
  • তাঁর সংসদীয় ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় সোলার স্ট্রিট লাইট, সৌরচালিত পানীয় জলের ব্যবস্থা, নলকূপ ইত্যাদি ব্যবস্থা করেছেন ।
  • বেশ কয়েকটি সভাগৃহ ও কমিউনিটি হলের উদ্বোধন করেছেন ।

যদিও কিছু আক্ষেপও আছে বিজেপি সাংসদের ৷ কী সেই আক্ষেপ ? ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথ, দ্বারকেশ্বর-গন্ধেশ্বরী নদীবাঁধ ও ন্যাশনাল ট্রাইবাল ইউনিভার্সিটির ব্রাঞ্চ বাঁকুড়াতে না করতে পারা ৷ যদিও এর দায় তিনি চাপিয়েছেন রাজ্য সরকারের উপরই ৷ তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণে সহায়তা না করায়, তিনি এই কাজগুলি করতে পারেননি ৷

তবে সাংসদের সমস্ত দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার চেয়ারাপার্সন অলকা সেন মজুমদার ৷ তাঁর দাবি, সুভাষ সরকার পাঁচ বছরে কোনও কাজ করেননি ৷ তাই তিনি সুভাষ সরকারের কাছে সমস্ত কাজের খতিয়ান প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন ৷ তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল যখন কাজ করে, তখন তা মানুষ জানতে পারেন ৷ এক্ষেত্রেও মানুষের জানা উচিত ৷

বাঁকুড়ায় 1980 থেকে 2014 সাল পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন সিপিএমের বাসুদেব আচারিয়া ৷ তাঁকে হারিয়ে 2014 সালে সাংসদ হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুনমুন সেন ৷ কিন্তু 2019 সালে মুনমুনকে আর প্রার্থী করেনি তৃণমূল ৷ সেবার ওই আসনে লড়াই করেন অধুনা প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায় ৷ এবার জেলার নেতা অরূপ চক্রবর্তীকে প্রার্থী করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে ৷ তাঁকে সামনে রেখে লালমাটির জেলায় আবার ঘাসফুল ফোটাতে মরিয়া তৃণমূল ৷ সেই কারণেই সুভাষ সরকারের উন্নয়নের সব দাবিকেই নস্যাৎ করে দিচ্ছে ঘাসফুল শিবির ৷

কিন্তু মানুষ কী বলছে ? তাঁরা কী সুভাষ সরকারের কাজে খুশি ? নাকি ঘাসফুলে আবার তাঁদের ভরসা ফিরতে চলেছে ! বাঁকুড়ার বাসিন্দা পীযূষ গোস্বামী বলেন, ‘‘ভালো কাজ করেছেন ৷ সবসময়ই দেখতে পাওয়া যায় ৷’’ বাঁকুড়ার আরেক বাসিন্দা সৌমেন মণ্ডল বলেন, ‘‘ভালো কাজ করেছেন ৷ তাঁকেই আবার সাংসদ হিসেবে চাই ৷’’

আরও পড়ুন:

  1. পাঁচ বছরে যাদবপুরের মানুষের প্রত্যাশা কি পূরণ করতে পেরেছেন মিমি চক্রবর্তী ?
  2. বিরোধীদের অভিযোগের মাঝে মতুয়া গড়ে পুরো তহবিল খরচের দাবি শান্তনুর
  3. সব টাকা খরচ করলেও দেবশ্রীকে নিয়ে রায়গঞ্জে 'ক্ষোভের পাহাড়', দেখুন রিপোর্ট কার্ড

বাঁকুড়ার লালমাটিতে কি ফের পদ্ম ফোটাতে পারবেন সুভাষ সরকার

বাঁকুড়া, 10 এপ্রিল: ড. সুভাষ সরকার ৷ বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ ৷ এক সময়ের লালদুর্গ বাঁকুড়ায় 2019 সালে তাঁর হাত ধরেই পদ্ম ফুটেছিল ৷ এবারও তিনিই বিজেপির প্রার্থী ৷ পাঁচবছর বাম ও তৃণমূলের অনুন্নয়নই ছিল তাঁর হাতিয়ার ৷ তবে এবার তাঁকে প্রচারে রাখতে হচ্ছে নিজের রিপোর্ট কার্ডও ৷

কী বলছে সেই রিপোর্ট কার্ড ৷ সুভাষ সরকার জানিয়েছেন, কোভিডের কারণে দুই বছর সাংসদ তহবিলের কোনও টাকা পাওয়া যায়নি । গত পাঁচ বছরে সাংসদ তহবিলে তাঁর মোট প্রাপ্ত টাকা হল 16 কোটি 66 হাজার টাকা । যার মধ্যে 28 হাজার টাকা মতো পড়ে রয়েছে বাকি সব টাকা মানুষের উন্নয়নমূলক খাতে খরচ হয়ে গিয়েছে ।

তবে তাঁর উন্নয়নের কাজ এর থেকে বেশি হতে পারত, এমনটাই দাবি করেছেন তিনি ৷ সুভাষ সরকারের কথায়, তিনি সাংসদ নির্বাচিত হওয়ার পর রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্য প্রথম দেড় বছর কোনও কাজই করতে পারেননি । তাঁর পূর্ববর্তী তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ অর্থাৎ মুনমুন সেন 2 কোটি 42 লাখ টাকা অ্যাকাউন্টে রেখে চলে গিয়েছিলেন, সেটা পুনরায় আবার ফিরে এসেছে । পুরো বাঁকুড়া লোকসভা এলাকায় প্রায় 1480টি ভিন্নভিন্ন প্রজেক্ট হয়েছে ৷

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক, আর কী কী কাজ করেছেন বাঁকুড়ার সাংসদ -

  • কেশরায় কাটজুড়িডাঙা হল্ট স্টেশন ।
  • ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুল, যা সারা ভারতবর্ষে মোট ছ’টি রয়েছে ।
  • কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের অনুমোদন বাঁকুড়াতে ।
  • বাঁকুড়ার উপর দিয়ে বারাণসী কলকাতা এক্সপ্রেসওয়ে, যার কস্ট ভ্যালু 35 হাজার কোটি টাকা ৷
  • তাঁর সংসদীয় ক্ষেত্রে বিভিন্ন জায়গায় সোলার স্ট্রিট লাইট, সৌরচালিত পানীয় জলের ব্যবস্থা, নলকূপ ইত্যাদি ব্যবস্থা করেছেন ।
  • বেশ কয়েকটি সভাগৃহ ও কমিউনিটি হলের উদ্বোধন করেছেন ।

যদিও কিছু আক্ষেপও আছে বিজেপি সাংসদের ৷ কী সেই আক্ষেপ ? ছাতনা-মুকুটমণিপুর রেলপথ, দ্বারকেশ্বর-গন্ধেশ্বরী নদীবাঁধ ও ন্যাশনাল ট্রাইবাল ইউনিভার্সিটির ব্রাঞ্চ বাঁকুড়াতে না করতে পারা ৷ যদিও এর দায় তিনি চাপিয়েছেন রাজ্য সরকারের উপরই ৷ তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণে সহায়তা না করায়, তিনি এই কাজগুলি করতে পারেননি ৷

তবে সাংসদের সমস্ত দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বাঁকুড়া সাংগঠনিক জেলার চেয়ারাপার্সন অলকা সেন মজুমদার ৷ তাঁর দাবি, সুভাষ সরকার পাঁচ বছরে কোনও কাজ করেননি ৷ তাই তিনি সুভাষ সরকারের কাছে সমস্ত কাজের খতিয়ান প্রকাশ করার দাবি জানিয়েছেন ৷ তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূল যখন কাজ করে, তখন তা মানুষ জানতে পারেন ৷ এক্ষেত্রেও মানুষের জানা উচিত ৷

বাঁকুড়ায় 1980 থেকে 2014 সাল পর্যন্ত সাংসদ ছিলেন সিপিএমের বাসুদেব আচারিয়া ৷ তাঁকে হারিয়ে 2014 সালে সাংসদ হয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুনমুন সেন ৷ কিন্তু 2019 সালে মুনমুনকে আর প্রার্থী করেনি তৃণমূল ৷ সেবার ওই আসনে লড়াই করেন অধুনা প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায় ৷ এবার জেলার নেতা অরূপ চক্রবর্তীকে প্রার্থী করা হয়েছে তৃণমূলের তরফে ৷ তাঁকে সামনে রেখে লালমাটির জেলায় আবার ঘাসফুল ফোটাতে মরিয়া তৃণমূল ৷ সেই কারণেই সুভাষ সরকারের উন্নয়নের সব দাবিকেই নস্যাৎ করে দিচ্ছে ঘাসফুল শিবির ৷

কিন্তু মানুষ কী বলছে ? তাঁরা কী সুভাষ সরকারের কাজে খুশি ? নাকি ঘাসফুলে আবার তাঁদের ভরসা ফিরতে চলেছে ! বাঁকুড়ার বাসিন্দা পীযূষ গোস্বামী বলেন, ‘‘ভালো কাজ করেছেন ৷ সবসময়ই দেখতে পাওয়া যায় ৷’’ বাঁকুড়ার আরেক বাসিন্দা সৌমেন মণ্ডল বলেন, ‘‘ভালো কাজ করেছেন ৷ তাঁকেই আবার সাংসদ হিসেবে চাই ৷’’

আরও পড়ুন:

  1. পাঁচ বছরে যাদবপুরের মানুষের প্রত্যাশা কি পূরণ করতে পেরেছেন মিমি চক্রবর্তী ?
  2. বিরোধীদের অভিযোগের মাঝে মতুয়া গড়ে পুরো তহবিল খরচের দাবি শান্তনুর
  3. সব টাকা খরচ করলেও দেবশ্রীকে নিয়ে রায়গঞ্জে 'ক্ষোভের পাহাড়', দেখুন রিপোর্ট কার্ড
Last Updated : Apr 11, 2024, 10:30 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.