জয়নগর, 21 জুন: জয়নগর মানেই মোয়া ৷ তবে মোয়ার পাশাপাশি এবার জয়নগরকে আরও একটি বিষয়ের জন্য চিনতে চলেছে মানুষ । তা হল ব্যাম্বু সল্ট ৷ আগে এই লবণ বিদেশে তৈরি হত ৷ এবার দেশেও প্রস্তুত হচ্ছে ব্যাম্বু সল্ট ৷ বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয় ৷ দক্ষিণ 24 পরগনার জয়নগরের নিমপীঠে এক সংস্থা এই লবণ তৈরি করছে ৷ এই লবণের বিদেশি নাম জাইকম সল্ট ৷
কী এই জাইকম সল্ট?
প্রস্তুতকারক সংস্থার তরফে জানা গিয়েছে, জাকুয়াম নামে পরিচিত বাঁশে তৈরি হয় এই লবণ ৷ মূলত 1400 বছর আগে প্রথম কোরিয়ান সন্ন্যাসী এই লবণ তৈরি করেন বলে জানা যায়। উন্নতমানের বাঁশ এবং সামুদ্রিক লবণ উচ্চ তাপমাত্রায় মিলিয়ে প্রস্তুত করা হয় ব্যাম্বু সল্ট বা জাইকম সল্ট ।
এই লবণের উপকারিতা:
এই লবণ মানবদেহে হজম শক্তি, ইমিউনিটি সিস্টেম এবং অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ করে। ব্যাম্বু সল্টে রয়েছে অধিক মাত্রায় মিনারেলস, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং পটাসিয়াম । যা হার্টকে ভালো রাখে এবং চর্ম রোগ দূর করে । প্রতিদিন এই লবণ ব্যবহারে ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাকের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এই লবণে রয়েছে অ্যালকালাইন প্রপাটিস, যা মানবদেহে পিএইচ-এর মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
কীভাবে তৈরি হয় এই লবণ?
সামুদ্রিক লবণ আর বাঁশ হল ব্যাম্বু সল্ট তৈরির মূল উপকরণ ৷ প্রথমে নির্দিষ্ট মাপে বাঁশ কাটা হয় ৷ তারপর সেই ফাঁপা বাঁশের মধ্যে লবণ ঢুকিয়ে কাদা দিয়ে মুখ বন্ধ করে উচ্চ তাপমাত্রায় আগুনে পোড়ানো হয় । এতে বাঁশের সমস্ত উপাদান লবণের সঙ্গে মিশে যায়। এই প্রক্রিয়া তিন বার করা হয় ৷ পরবর্তীতে এই লবণ থেকে প্রস্তুত হয় ব্যাম্বু সল্ট।
এই লবণ ভারতের বাজারে দুষ্প্রাপ্য বলেই জানান প্রস্তুতকারী সংস্থার মালিক । তবে মানব শরীরে এই লবণের গুণাগুণ অনেক। প্রস্তুতকারী সংস্থার মালিক প্রভাত কুমার নাটুয়া বলেন, "এই লবণ বহু মূল্যবান ৷ মানব দেহের জন্য অত্যন্ত উপকারী ৷ এই লবণ বানিয়ে আমি বর্তমানে লাভের মুখ দেখেছি ৷ আমি চাই, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হোক। এর ফলে কর্মসংস্থানও বাড়বে এবং মানুষের শারীরিক রোগব্যাধির কমানোর এক নতুন দিশা খুলে যাবে ।" তবে এই লবণের প্রচার বাড়লেই মানুষ তৈরি করতে ও কিনতে এগিয়ে আসবেন বলে আশাবাদী তিনি। যদিও বাংলার বাজারে এই লবণ তৈরি করে এখন ভারতীয় বাজারে আনার ব্যবস্থাও করছে ওই সংস্থা।