ঝাড়গ্রাম, 1 নভেম্বর: জমিতে কাজ করার সময় চন্দ্রবোড়া ছোবল মারার পর ওঝার কাছে গিয়েছিলেন কৃষক ৷ পরে হাসপাতালে গিয়েও প্রাণ বাঁচেনি ৷ এমন ঘটনা একবার নয়, বহুবার ঘটেছে ঝাড়গ্রামের বিনপুরের রাজপাড়া গ্রামে ৷ তাই এবার সাপের কামড় নিয়ে গ্রামবাসীদের সচেতন করার উদ্যোগ নিল রাজপাড়া গ্রামের সবুজপল্লি জনকল্যাণ সংঘ ৷ তাদের লক্ষ্য, কালীপুজোর থিমের মাধ্যমে সাপের ছোবলে সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দেওয়া ৷
গ্রামবাংলায় চন্দ্রবোড়া সাপের ছোবল খাওয়ার ঘটনা প্রায়শই ঘটে থাকে ৷ বিশেষত, চাষের জমিতে কাজ করতে গিয়ে বহু মানুষকে সাপে কাটার ঘটনা ঘটে ৷ এমন অবস্থায় সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াটা অত্যন্ত জরুরি ৷ গ্রামবাসীদের সচেতন করে এই বার্তা দিতেই শক্তির আরাধনায় মণ্ডপ সজ্জার থিম 'গ্রাম বাংলার আতঙ্ক রাসেলস ভাইপার'। বিনপুরের রাজপাড়া গ্রামের সবুজপল্লি জনকল্যাণ সংঘের 18 তম বর্ষের কালীপুজোর মণ্ডপ ভাবনায় সাপের ছোবল ও তাকে ঘিরে কুসংস্কারের বিরোধিতা ৷
একটি পাহাড় ও সেটিকে জড়িয়ে রয়েছে বিশালাকৃতির চন্দ্রবোড়া, এভাবেই পুজো মণ্ডপটি তৈরি করা হয়েছে । সঙ্গে পাহাড়ের কোলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে একাধিক চন্দ্রবোড়া সাপ ৷ মণ্ডপের প্রবেশদ্বার চন্দ্রবোড়ার মুখ ৷ আর ভিতরে ঢুকলেই দেখা যাবে, সাপের ছোবল ও তার সম্পর্কে নানা সতর্কবার্তা ৷
কৃষক, চিকিৎসক ও ওঝার মডেল তৈরি করে সতর্কবার্তা লেখা পোস্টার ঝোলানো রয়েছে মণ্ডপের ভিতরে ৷ কোথাও লেখা, "অসেচতন ও কুসংস্কার সাপে কাটা ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ ৷" আবার এক জায়গায় লেখা রয়েছে, "কুসংস্কার ছাড়ুন ৷ সাপে কামড়ালে গুনিন বা ওঝার কাছে যাবেন না ৷" এমনকি সাপের ছোবল খাওয়ার 100 মিনিটের মধ্যে নিকটবর্তী হাসপাতালে পৌঁছে যাওয়ার আবেদন করা হয়েছে ৷ পাশাপাশি, মাঠে কাজ করতে যাওয়ার সময়, খালি পায়ে বা চটি পড়ে নয়, সবসময় গামবুট পরে কাজ করার বার্তা দেওয়া হয়েছে মণ্ডপ সজ্জায় ৷
পুজো কমিটির উদ্যোক্তা রাজকুমার সেনাপতি বলেন, "আমাদের এই জঙ্গলমহলের লাল মাটিতে প্রচুর চন্দ্রবোড়া সাপ পাওয়া যায় ৷ প্রায়ই জমিতে কাজ করতে গিয়ে সাপের ছোবল খান মানুষজন ৷ আমরা দেখেছি অনেকেই আজও গুনিন বা ওঝার উপর ভরসা করেন ৷ কিন্তু, শেষ পর্যন্ত সেই মানুষটির মৃত্যু হয় ৷ মানুষের যদি জানা থাকে, তাহলে দ্রুততার সঙ্গে হাসপাতালে গেলে প্রাণ বাঁচতে পার ৷ আমাদের গ্রাম-সহ পার্শ্ববর্তী গ্রামের 6-7 জনের সাপের কামড়ে মৃত্যু হয়েছে ৷ তাই গ্রামবাসীদের এবং দর্শনার্থীদের সাপের কামড় থেকে কীভাবে বাঁচানো যায়, সেই ভাবনা থেকে আমরা এ বছরে থিম রেখেছি 'গ্রাম বাংলার আতঙ্ক রাসেলস ভাইপার' ৷