কলকাতা, 28 জুলাই: হাতের ছাপেও জালিয়াতি ! এবার তেমন অভিযোগই তুলল জাতীয় মেডিক্যাল কমিশন । অভিযোগের আঙুল উঠেছে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের অধ্যাপক চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ।
জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের তরফে কিছুদিন আগেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজগুলিকে । তাতে বলা হয়েছিল, প্রত্যেকটি কলেজেই বায়োমেট্রিকের ব্যবস্থা করতে হবে । এছাড়াও আরও বেশকিছু বিষয়ের উপর নজর দেওয়া হয়েছিল । কিন্তু সেই সমস্ত কিছুই করা হয়নি দেখে পরবর্তীকালে বিরাট অংকের জরিমানাও করা হয় মেডিক্যাল কমিশনের তরফে । কিন্তু এরপরে যখন বায়োমেট্রিক বসিয়ে তার কাজ চালু করা হয়, সেখানেও দেখা যাচ্ছে জালিয়াতি । রাজ্যের সরকারি হাসপাতালের অধ্যাপক চিকিৎসকরা জালিয়াতি করছেন বলে অভিযোগ ।
জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের তরফে যে চিঠি দেওয়া হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, কিছু মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠানে ফ্যাকাল্টি সদস্যরা জাল আঙুলের ছাপ ব্যবহার করে এইবিএএস-এ বায়োমেট্রিক চিহ্নিত করছেন । যদি বিষয়টি নজর না-দেওয়া হয়, তবে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কমিশন ।
কিন্তু কীভাবে এই জালিয়াতি হতে পারে ? সেই বিষয়ে সাইবার বিশেষজ্ঞ এবং এথিক্যাল হ্যাকার মহম্মদ রেজা আহমেদ বলেন, "সিলিকনের সাহায্যে যার আঙুলের ছাপ দেখাতে চাইছে, সেই আঙুলের ছাপ যদি নিয়ে নেওয়া যায়, তাহলেই একজনের জায়গায় অন্যজনের বায়োমেট্রিক পড়বে । এছাড়াও আধারের মতো একটা জালিয়াতি চলে । আমার মনে হয় এভাবেই জালিয়াতি এখানে হচ্ছে ।"
এই বিষয়ে হেলথ সার্ভিস ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি চিকিৎসক উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "এটা কীভাবে সম্ভব আমরা জানি না । কারণ আমাদের সুপারের ঘরে গিয়ে বায়োমেট্রিক দিতে হয় । যদি এরকম সত্যি কিছু হয়, তাহলে কমিশন তার পূর্ণ তদন্ত করুক ।"
তবে এর পাশাপাশি তিনি একটি প্রশ্নও তুলেছেন কমিশনের বিরুদ্ধে । তাঁর কথায়, প্রত্যেকবার কমিশন এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে বিরাট অংকের একটি জরিমানা করছে । আমার মনে হয়, এই সব দিকে বেশি নজর না-দিয়ে, যদি আমরা আমাদের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার দিকে নজর দিই তাহলে ভালো হয় । কী পড়ানো হচ্ছে হবু ডাক্তারদের, মেডিক্যাল কলেজগুলিতে পড়ানোর জন্য কী কী পরিকাঠামো রাখা হয়েছে, সেইসবের উপর নজর দিয়ে দেখলে ভালো হবে । কিন্তু এত কিছু না-করে বারবার জরিমানা করা হচ্ছে । যেন জরিমানা করলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায় ।"