বর্ধমান, 20 জানুয়ারি: প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ডিএলএড পরীক্ষায় মহিলা পরীক্ষার্থীদের হেনস্থার অভিযোগ ৷ পোশাক খুলিয়ে তল্লাশি করলেন পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দু’জন ৷ শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের তালিতের গৌড়েশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ে ৷ পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে দুই মহিলা তাঁদের পোশাক খুলিয়ে তল্লাশি করছিলেন ৷ এ নিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তাঁরা ৷
শুক্রবার প্রাথমিকের চাকরির ক্ষেত্রে ডিএলএড পার্ট টু পরীক্ষা ছিল ৷ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের এই পরীক্ষার সিট পড়েছিল পূর্ব বর্ধমানের তালিত গৌড়েশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ে ৷ পরীক্ষার হলে ঢোকার সময় সকল পরীক্ষার্থীদের চেক করা হচ্ছিল ৷ যাতে কেউ সঙ্গে করে নকল করার কোনও বস্তু নিয়ে যেতে না পারেন ৷ কিন্তু, অভিযোগ উঠেছে মহিলা পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা দুই মহিলা ৷ তাঁরা প্রত্যেক মহিলা পরীক্ষার্থীকে পোশাক খুলিয়ে দেহ তল্লাশি করেন বলে অভিযোগ ৷
তবে, ছেলেদের ক্ষেত্রে কোনও কড়াকড়ি ছিল না বলে অভিযোগ ৷ তাদের মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করে ছেড়ে দেওয়া হয় ৷ কিন্তু, মহিলাদের দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড় করিয়ে পোশাক খুলিয়ে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠেছে ৷ এ নিয়ে ওই দুই মহিলাকে প্রশ্ন করা হলে তাঁরা জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ রয়েছে তল্লাশির ৷ কিন্তু, তাহলে এভাবে প্রকাশ্যে কেন ? আর ছেলেদের কেন মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে ? যার কোনও জবাব দেয়নি তারা ৷
তবে, এর জেরে মহিলা পরীক্ষার্থীদের অনেকটা সময় নষ্ট হয় বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ পরীক্ষা শুরু হয়ে যাওয়ার অনেক পরে তাঁরা ক্লাসে ঢোকেন ৷ এ নিয়ে এক পরীক্ষার্থী বলেন, "লম্বা লাইন দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছিল ৷ তারপর এইভাবে পোশাক খোলা খুবই লজ্জাজনক ৷ এদিকে ঘণ্টা পড়ে গেছে, অনেকেই খাতা প্রশ্নপত্র পেয়ে গিয়েছিল ৷ কিন্তু, অনেকে ভিতরেই যেতে পারেনি ৷ অথচ বাইরে এইভাবে নোংরামি করা হচ্ছিল ৷ কাদের অর্ডারে এই নোংরামি করা হল জানি না ৷ আমাদের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটল, সেই বিষয়টি প্রশাসনের দেখা উচিত ৷ কারা এইভাবে চেক করল ? তাঁরা লেডি পুলিশ কনস্টেবল কি না তাও জানি না !"
আরেক পরীক্ষার্থী সম্মানহানির অভিযোগ করে বলেন, "কড়া চেকিংয়ের নামে নোংরামি করা হয়েছে ৷ এটা অসভ্যতা ৷ আমরা প্রতিবাদ করেও কিছু হয়নি ৷ অন্যান্য বন্ধুদের অন্য সেন্টারে সিট পড়েছে ৷ কাউকে তো এইভাবে সব খুলে চেক করা হয়নি ৷ কিন্তু, ছেলেদের ক্ষেত্রে শুধু মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে চেক করা হয়েছে ৷ অথচ মেয়েদের ক্ষেত্রে সব খুলে এই নোংরামি করল ৷ দু’জন মহিলা চেক করছিলেন ৷ এটা তো আমাদের সম্মানহানি করা হয়েছে ৷"
যদিও এই ঘটনার দায় এড়িয়ে গিয়েছেন গৌড়েশ্বর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিখিল কুমার খাঁ ৷ তিনি বলেন, " প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের তরফে পরীক্ষা পরিচালনা করেছে ৷ তাই কী ঘটেছে তা জানা নেই ৷" এ নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মধুসূদন ভট্টাচার্য বলেন, "এমন ঘটনা ঘটে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে ৷"
আরও পড়ুন: