দার্জিলিং, 20 মে: রামকৃষ্ণ মিশনের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠল তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ৷ আশ্রমের নিরাপত্তা রক্ষীকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে হুমকি এবং সন্ন্যাসীদের অপহরণ করে শহরের বাইরে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শহরে। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করে বাংলার শাসকদলের সমালোচনায় সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ ঘটনার নিন্দা করেছেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ ৷ পাশাপাশি, যথাযথ পুলিশি তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র তথা তৃণমূল নেতা গৌতম দেব ৷
এই বিষয়ে শিলিগুড়ির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার তন্ময় সরকার বলেন, "অভিযোগ মিলেছে। সব খতিয়ে দেখা হবে।" বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেন, "একদিকে মুখ্যমন্ত্রী ইসকন, রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রমের মতো প্রতিষ্ঠানগুলিকে অপমান করছেন। অন্যদিকে, তাঁর গুণ্ডারা জমি দখল করছে। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি ৷ আমরা জেলা ও গোটা রাজ্যে এই ঘটনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগঠিত করব।" অন্যদিকে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব জানিয়েছেন, দোষীদের রেয়াত করা হবে না ৷ তিনি অভিযোগ পেয়েছেন ৷ যাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে পুলিশ ৷
এই ঘটনার তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ ঝাড়গ্রামের প্রচারসভা থেকে তিনি বলেন, "ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ থেকে শুরু করে ইসকন বাংলার আধ্যাত্মিকতার প্রতীক। কিন্ত আমরা দেখছি মুখ্যমন্ত্রী সন্ন্যাসীদের হুমকি দিচ্ছেন। বাংলায় ইতিমধ্যেই একটি ঘটনা হয়েছে। রামকৃষ্ণ মিশনে গিয়ে ভাঙচুর হয়েছে। কর্মীদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। মারধরও করা হয়েছে। এই বাংলাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে তৃণমূল ? এখানে রামকৃষ্ণ মিশনকে হুমকি দেওয়া হবে ! এটা দেশ কখনও ভাবেনি। বাংলা কখনও এটা সহ্য করবে না । পুরো দেশ জানে, আমার জীবন তৈরিতে রামকৃষ্ণ মিশনের কত বড় ভূমিকা আছে, কতটা ঘণিষ্ঠ সম্পর্ক আছে ।"
জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ির সেভক রোডে অবস্থিত চার বিঘা জমি এক ভক্ত রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃপক্ষকে দান করেছিলেন। সেখানে গড়ে ওঠা 'সেবক হাউস'-এ দীর্ঘদিন ধরেই বসবাস করে আসছেন রামকৃষ্ণ আশ্রমের আবাসিকরা। আশ্রমটি জলপাইগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশন দ্বারা পরিচালিত ৷ অভিযোগ, রবিবার ভোররাতে এলাকার এক জমি মাফিয়া প্রদীপ রায় ও আরও প্রায় ত্রিশ-চল্লিশ জন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র ও অন্যান্য ধারালো অস্ত্র নিয়ে ওই সম্পত্তিতে ঢুকে তা দখল নেওয়ার চেষ্টা করে।
নিরাপত্তারক্ষী ও সেখানে বসবাসকারী আশ্রমিকদের মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দেয়। অভিযোগ সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলার পাশাপাশি সকলের মোবাইল ফোন ছিনতাই করে নিয়ে যায় তাঁরা। পরবর্তীতে আশ্রম কর্তৃপক্ষ পুরো ঘটনার বিবরণ দিয়ে ভক্তিনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন