আলিপুরদুয়ার, 5 সেপ্টেম্বর: চা-বাগান এলাকায় শিক্ষার আলো তেমন পৌঁছয় না ৷ স্কুলছুটের সংখ্যাও প্রচুর ৷ ফলে প্রাথমিক শিক্ষার অভাবে প্রান্তিক শ্রেণিতেই আনাগোনা করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ৷ এলাকার অর্থনৈতিক, ভৌগলিক, সামাজিক সমস্ত গুরুত্বই দাঁড়িয়ে চা শিল্পের উপর ৷ ফলে চা-বাগানের ঝাঁপ বন্ধ হলে থমকে যায় পড়াশোনাও ৷ সেখানেই আঁধার ঘুচিয়ে আলো আনার কাজটা শুরু করেছিলেন জয়ব্রত ৷
কর্মজীবন শুরু হয়েছিল পুলিশের চাকরি দিয়ে । তিনবছর সাব-ইন্সপেক্টর পদে কাজ করেছেন ৷ কিন্তু মানুষ গড়াকেই জীবনের ব্রত করেছিলেন জয়ব্রত ভট্টাচার্য ৷ ফলে ঈর্ষণীয় মাইনে, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ছেড়ে দিতে দু’বার ভাবেননি ৷ তারপর কেটে গিয়েছে প্রায় দু’দশক ৷ দীর্ঘ 22 বছর ধরে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত তিনি ৷ শিক্ষাক্ষেত্রে অবদানের কারণে এবছর শিক্ষারত্নে ভূষিত হচ্ছেন তিনি ।
1999 সালে পুলিশের চাকরি পান জয়ব্রত । সাব-ইন্সপেক্টর পদে ছিলেন । যদিও ছোট থেকে চাইতেন শিক্ষকতা করতে ৷ ফলে পুলিশের কাজের পাশাপাশি সেই স্বপ্নের চারাগাছে জল দিতে ভোলেননি ৷ সেইমতো 2002 সালে সরকারি পরীক্ষায় বসেন, একেবারেই পাশ করেন । সেই থেকে শুরু হয় জয়ব্রতর শিক্ষকতার জীবন ।
বর্তমানে তিনি বীরপাড়া হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক । লক্ষ্য, চা বলয়ের ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তোলা । স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করতে তিনি নিরলস প্রয়াস চালাচ্ছেন । তাঁর কথায়, আগামীতেও তিনি এই কাজ করে যাবেন ।
আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট ব্লকের বীরপাড়া এলাকায় রয়েছে প্রচুর চা বাগান । প্রত্যন্ত এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়াতে বদ্ধপরিকর তিনি । সরকারি স্কুল বলতে বীরপাড়া হাই স্কুল । কোনও চা বাগান বন্ধ হলে সেখানকার শিক্ষা থমকে যায় । এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করে পড়ুয়াদের স্কুলে নিয়ে আসছেন এই শিক্ষক । জয়ব্রত ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘মানুষ ও সমাজ গড়ব বলেই শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলাম । আমার পড়ুয়ারা সহায়তা করেছে দেখে সম্মান পাচ্ছি । আমার এই সম্মান সকলের জন্য ।’’