মহেশতলা, 5 ডিসেম্বর: দূর থেকে দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটি কোনও স্বাস্থ্য কেন্দ্র নাকি হানা বাড়ি ! দূর থেকে দেখে অন্য কিছু মনে হলেও এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপরই নিরুপায় হয়ে বছরের পর বছর ধরে স্বাস্থ্য পরিষেবার ক্ষেত্রে ভরসা করতে হচ্ছে এলাকার মানুষকে ৷ নেই কোনও নজরদারি, কোনও নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেই বলেও অভিযোগ ৷ আর সন্ধ্যা নামলেই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যেই চলে মদ, জুয়া ও গাঁজার আসর। বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে তারই প্রমাণ। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মধ্যে মদের বোতল, গ্লাস থেকে শুরু করে নানা আবর্জনা পড়ে থাকে বলেও অভিযোগ এলাকাবাসীর।
চারিদিকে জমা জল ৷ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে হলে জমা জল পেরিয়ে যেতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের ৷ চরম অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভগ্নপ্রায় দশা মহেশতলা পুরসভার 24 নম্বর ওয়ার্ডের চক কৃষ্ণনগর মণ্ডলপাড়া সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র।
2000 সালে এলাকার মানুষদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হয়েছিল। গর্ভবতীদের জন্য এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রেরই পাশে একটি হাসপাতালও নির্মাণ করা হয়। সেটিরও ভগ্ন প্রায় দশা ৷ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জীর্ণ হয়ে গিয়েছে হাসপাতাল। আগাছার জঙ্গলে দখল নিয়েছে গোটা হাসপাতাল ৷ শেখ শাহাবুদ্দিন নামে এক এলাকাবাসী বলেন, "এমনই যন্ত্রণার মধ্যে আমরা রয়েছি। একটু বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান জল হয়ে যায়। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে এখনও জল জমে রয়েছে।"
স্বাস্থ্য কর্মীদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে প্রথমেই দিনের শুরুটা হয় মদের গ্লাস, মদের বোতল এবং অন্যান্য জিনিসপত্র সরিয়ে, পরিষ্কার করে চিকিৎসার পরিষেবার কাজ শুরু করা ৷ দীর্ঘদিন ধরে এভাবেই চলে আসছে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও রকম সুরাহা হয়নি বলে দাবি।
এমনই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর তারক সাহা। তিনি বলেন, "স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অসামাজিক কাজকর্মের কথা দীর্ঘদিন ধরে আমরা শুনে আসছি। পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তার কারণ, যারা এই অসামাজিক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত, তারা প্রত্যেকেই স্থানীয়। স্থানীয় মানুষদেরই প্রতিবাদ করতে হবে। স্থানীয় মানুষদের আরও সোচ্চার হতে হবে এই অসামাজিক কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ৷"