মেদিনীপুর, 8 জুন: মেদিনীপুর লোকসভা থেকেই 2019 সালে জিতেছিলেন দিলীপ ঘোষ ৷ বিজেপির এই জেতা সিট এবার হাতছাড়া হয়েছে । বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পল এই আসনে জয় ধরে রাখতে পারেননি ৷ মানুষ তাঁর উপর ভরসা রাখেনি ৷ বরং, ভোটাররা তৃণমূলের উপর আস্থা রেখেছে । এই আসনে জিতেছেন মেদিনীপুরের বিধায়ক তথা অভিনেত্রী জুন মালিয়া । তবে তাঁর ভোটের ব্যবধান 27 হাজারের মতো ।
যেখানে আগেরবার বিজেপি প্রায় লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে মেদিনীপুরে জিতেছিল ৷ সেই জেতা সিট হাতছাড়া হতে হল কেন, তাই নিয়ে গেরুয়া শিবিরে চলছে গভীর বিশ্লেষণ । তবে এই ভোটের হারার কারণ নিয়ে এবার প্রকাশ্যে মন্তব্য করলেন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পল । বৃহস্পতিবার রাতে তিনি এসেছিলেন মেদিনীপুরে বিজেপি কার্যালয়ে ৷ ভোট পরবর্তী হিংসার জেরে যেসব বিজেপি নেতা ও কর্মীরা ঘরছাড়া রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে এ দিন দেখা করেন অগ্নিমিত্রা । তাঁদের সঙ্গে কথা বলার পরেই তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন ৷
সেখানেই মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে হারার কারণ নিয়ে তিনি বলেন, "ভোটের পর সময় করে উঠতে পারিনি, বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত ছিলাম । কিন্তু, এখন আমরা ভোটে হারার কারণ বিশ্লেষণ করতে শুরু করেছি । মেদিনীপুর লোকসভার সাতটি বিধানসভার মধ্যে অন্যতম ছিল খড়গপুর গ্রামীন যা সংখ্যালঘু অধ্যুষিত । এই সংখ্যালঘুরা বিজেপিকে ভোট দেয়নি । যার জন্য প্রায় 32 হাজার ভোটের লিড দিয়েছে এই খড়গপুর গ্রামীণ থেকে । এরই সঙ্গে মেদিনীপুরেও বিজেপি ব্যবধান বাড়াতে পারেনি । তার কারণ ভাবতে হচ্ছে । পাশাপাশি কেশিয়াড়িতেও বিজেপির ভোট-ব্যবধান হয়নি, হেরেছে নারায়ণগড়ে । খড়গপুর সদরে যে ভোটের ব্যবধান হয়েছে তা-ও অত্যন্ত কম ৷ কেন অবাঙালিরা পিছু হটল বিজেপি থেকে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।"
অগ্নিমিত্রার আরও সংযোজন,"আমার হারার পেছনে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার একটা বড় কারণ ।" তিনি এও ব্যক্ত করেন, "মা-বোনেরা কেন হাজার টাকার বিনিময়ে নিজেদের ভোটটা তৃণমূলকে দিল তা বুঝতে পারছি না । একদিকে হাজার টাকা দিচ্ছে আর অন্যদিকে নরেন্দ্র মোদির দেওয়া বাড়ি ঘরের টাকা কেড়ে নিচ্ছে ।" দিলীপ ঘোষ মন্তব্য করেছিলেন, নতুনদের তাড়াতাড়ি ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিজেপির এই বিপর্যয় ৷ এ বিষয়ে অগ্নিমিত্রা পল বলেন, "দিলীপ ঘোষ আমাদের প্রবীণ নেতা । তিনি কেন এ কথা বলেছেন তাঁর উত্তর দিতে পারব না ।"
তবে নিজের হার প্রসঙ্গে তিনি বলেন," আমি এই মেদিনীপুরে অনেক কিছু পেয়েছি প্রায় 6 লক্ষ 74 হাজার ভোট পেয়েছি । যেখানে অন্যান্য প্রার্থীরা পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ লক্ষ ভোটে জিতে আসে । মেদিনীপুরের প্রতি আমার কাজ জারি থাকবে । ভাতা'র বাংলা হতে দেব না ৷" এইসঙ্গে তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, "আমি তো অনেক কিছু হারালাম । কারণ আমার ইচ্ছে ছিল মেদিনীপুরে এমইসের মতো একটি হাসপাতাল করার ৷ সঙ্গে শিল্প স্থাপন করারও ৷ কিন্তু মেদিনীপুরের মানুষ একজন ভালো সাংসদকে হারালো ।" এ দিন অগ্নিমিত্রা এও ঘোষণা করেছেন, মেদিনীপুরে তিনি দু'মাস থাকবেন । এরপর দল যেমন নির্দেশ দেবেন তেমনভাবে তিনি কাজ করবেন ।