বারুইপুর, 18 জুলাই: কুলতলির প্রতারণাকাণ্ডে পুলিশের উপর হামলা, কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে অবশেষে গ্রেফতার মূল পাণ্ডা সাদ্দাম সর্দার (লস্কর) ৷ আর তাকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে মান্নান খান নামে এক স্থানীয় সিপিএম নেতাকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ ৷ আর সিপিএম নেতা গ্রেফতারের ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা। পুলিশের অবশ্য দাবি, এলাকাতেই গা ঢাকা দিয়েছিল সাদ্দাম ৷
বুধবার গভীর রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে চুপড়িঝাড়া গ্রামের একটি মাছের ভেড়ির চালা ঘর থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ একইসঙ্গে মূলত সাদ্দামকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় সিপিএম নেতাকেও গ্রেফতার করা হয় ৷ এখনও পর্যন্ত সাদ্দামের ভাই সাইরুল সর্দার অধরা ৷ বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ৷ বৃহস্পতিবার বারুইপুরের পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালী জানান, মূলত প্রতারণা কাণ্ডের অভিযোগ পাওয়ার পর কুলতলী থানার পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে যায় ৷ তাঁর কথায়, "ওই এলাকায় পৌঁছলে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি এবং পুলিশকে কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনার পর থেকেই গা-ঢাকা দিয়েছিল অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন সর্দার।"
পুলিশ সুপারের কথায়, "সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতেও পুলিশি তৎপরতা ও ঘেরাটোপে থাকার কারণে বেশি দূর পালাতে পারেনি অভিযুক্ত। স্থানীয় একটি মাছের ভেড়ির চালা ঘরে গা ঢাকা দিয়েছিল সে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রতারণা-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলার রুজু করা হয়েছে।" এদিন অভিযুক্তকে বারুইপুর মহকুমার আদালতে পেশ করে পুলিশ। এই ঘটনার সঙ্গে প্রায় 12 থেকে 14 জনের একটি প্রতারণা চক্র যুক্ত রয়েছে বলেও পুলিশের দাবি। পুলিশ সুপারের কথায়, "অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই প্রতারণার চক্রের শিকড়ে পৌঁছতে চাই আমরা।"
এই বিষয়ে সিপিএমের নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, "তৃণমূলের আমলে এই সমস্ত প্রতারণাকাণ্ড ঘটছে। কুলতলিতে সিপিএম বলতে কিছু নেই ৷ নিজেদের ঘাড় থেকে অভিযোগ নামানোর জন্য সিপিএম নেতা বলে মান্নান খানকে দেখানো হচ্ছে। মান্নান খান আসলে তৃণমূলের লোক ৷ রাজনৈতিক চক্রান্ত করেছে তৃণমূল। পুলিশের উচিত দলমত নির্বিশেষে এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকা সকল অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া।" অন্যদিকে, আদালত এদিন সাদ্দামকে 14 দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে ৷ প্রসঙ্গত, প্রথম থেকেই পুলিশের ধারণা ছিল সাদ্দাম বেশি দূর পালাতে পারেনি। আশপাশের সবক'টি থানাকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছিল আগেই। পাশাপাশি সিভিক ভলান্টিয়ারদের কাছেও সাদ্দামের ছবি পাঠিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়েই বুধবার রাতে অভিযান চালায় পুলিশ। এরপরই ধরা পড়ে সাদ্দাম।