মালদা, 29 জানুয়ারি: মাঝে আর একটামাত্র দিন ৷ তারপরেই মালদায় ঢুকছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাহুল গান্ধি ৷ একইদিনে দুই হেভিওয়েটের উপস্থিতি নিয়ে ঘুম উড়েছে জেলা প্রশাসনের ৷ এরই মধ্যে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ তুলল কংগ্রেস ৷ ওইদিন রতুয়ার ভালুকায় সেচ দফতরের বাংলোয় রাহুলের মধ্যাহ্নভোজ করার ব্যবস্থা করেছিল জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ তার জন্য আবেদনও জানানো হয়েছিল ৷ কিন্তু প্রশাসনের তরফে সেই আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন কংগ্রেসের নেতৃত্ব ৷ যা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা শুরু হলেও প্রশাসনের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ৷ তবে ওই বাংলো ব্যবহারের অনুমতি না-পেয়ে কংগ্রেসের তরফে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে ৷
স্থানীয় একটি মাঠে রাহুলের মধ্যাহ্নভোজের ব্যবস্থা করা হয়েছে ৷ মধ্যাহ্নভোজের মেনুও ঠিক হয়ে গিয়েছে ৷ বুধবার সকাল 11টায় হরিশ্চন্দ্রপুরের লাভা দিয়ে বিহার থেকে মালদায় ঢুকবে রাহুল গান্ধির 'ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা' ৷ সেখান থেকে যাত্রা যাবে রতুয়া 1 নম্বর ব্লকে ৷ দুপুরে সেখানেই মধ্যাহ্নভোজ সারবেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি ৷ মেনুতে থাকছে সবুজ স্যালাড, মটরশুঁটির কচুরি, ছোলার ডাল, ভাত, ভেটকি মাছের পাতুরি, চিংড়ির মালাইকারি, আড় মাছ, চিকেন কষা, খেজুর দিয়ে টম্যাটোর চাটনি, মালদার কানসাট আর দই ৷ খুব কম তেলে সমস্ত রান্না করা হবে বলেও জানা গিয়েছে ৷ খাবার পরিবেশন করা হবে আখের ছিবড়ে দিয়ে তৈরি প্লেটে ৷ থাকবে আখের ছিবড়ের চামচও ৷ সেদিন সুজাপুরেই রাত কাটাবেন রাহুল ৷ তবে ডিনারের মেনু এখনও ঠিক করা হয়নি বলেই দলীয় সূত্রে খবর ৷
এদিকে এখনও পর্যন্ত ভালুকায় সেচ দফতরের বাংলো ব্যবহারের অনুমতি না-পাওয়ায় প্রশাসনের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি ভূপেন্দ্রনাথ হালদার ৷ তিনি বলেন, “আমরা সেচ দফতরের ভালুকা ডাকবাংলোয় আমাদের নেতা রাহুল গান্ধির মধ্যাহ্নভোজনের ব্যবস্থা করেছিলাম ৷ তার জন্য অনেক আগেই সেচ দফতরের মহানন্দা এমব্যাংকমেন্ট ডিভিশনে চিঠি দিয়েছিলাম ৷ সচিবের সঙ্গেও এ নিয়ে কথা হয়েছিল ৷ তিনি পরে জানাবেন বলেছেন ৷ এখনও পর্যন্ত তাঁরা কোনও অনুমতি দেননি ৷ আমাদের মনে হচ্ছে, আধিকারিকদের মধ্যে একটা ভীতি কাজ করছে ৷ তাঁরা ভাবছেন, রাহুল গান্ধিকে সরকারি বাংলো ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে তাঁরা রোষানলে পড়তে পারেন ৷ আমরা শুনলাম, সেদিনই মুখ্যমন্ত্রী মালদায় সভা করতে আসছেন ৷ তাই সমস্ত সরকারি বাংলো তাঁরা দখলে নিয়েছেন ৷ আমরা মানুষকে নিয়েই আমাদের কর্মসূচি সফল করব ৷”
এই ইস্যুতে তৃণমূলের জেলা সহসভাপতি দুলাল সরকারের প্রতিক্রিয়া, “নির্বাচন আসলেই শুধু মালদা জেলার কংগ্রেস নেতৃত্বের ঘুম ভাঙে ৷ আগামী ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা ৷ তাই এবার বিভিন্ন প্রকল্পের মেলাগুলি জানুয়ারিতেই সেরে ফেলছে রাজ্য সরকার ৷ তার জন্য জেলার সমস্ত সরকারি অতিথিশালাগুলি মন্ত্রী ও আমলাদের জন্য সরকার বুক করে রেখেছে ৷ হঠাৎ করে রাহুল গান্ধি জেলায় আসবেন বলে কংগ্রেস নেতৃত্ব অতিথিশালার আবেদন জানালে চলবে না ৷ এসব অভিযোগ করে কংগ্রেস মানুষের মন ভেজাতে পারবে না ৷ রাহুল গান্ধির কর্মসূচি অনেকদিন আগেই নির্ধারিত হয়েছে ৷ এতদিন কংগ্রেস ঘুমিয়ে ছিল কেন ?”
আরও পড়ুন: