কলকাতা, 15 অগস্ট: আরজি কর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে আরও একবার তীব্র আক্রমণ করলেন কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী ৷ রবিবার প্রাক্তন সাংসদ বলেন, "দিদি বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন ৷" রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ মনে করছে, আরজি কর-কাণ্ডে বেকাদায় রাজ্যের সরকার। ইতিমধ্যে, টালা থানার ওসি ও আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। এতে কিছুটা হলেও সিবিআইয়ের প্রতি অধীরের আস্থা ফিরেছে বলেই মনে করেন অধীর।
রবিবার প্রদেশ কংগ্রেস সদর দফতর বিধানভবনের সাংবাদিক সম্মেলন থেকে লাগাতার রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ শানিয়েছেন অধীর চৌধুরী। তিনি বলেন, "মমতার গ্রহণযোগ্যতা নেই। তাঁর উচিত সরে যাওয়া। অন্য কাউকে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দিন। খোকাবাবুকেও দিতে পারেন। উনি ফেসপাউডার মেখে তৈরি আছেন। আমাদের কোনও আপত্তি নেই।"
এরই পাশাপাশি অধীর চৌধুরী বলেন, "টালা থানার ওসি গ্রেফতার হতেই সব ভেস্তে গেল। দিদির কাছের ভাই সন্দীপ ঘোষ। এই দুই ব্যক্তির গ্রেফতারের খবর পৌঁছতেই দিদির কাছে অপশন ছিল না। দিদি সব সময় চাইছেন ডাক্তারার বৈঠক রিফিউজ করুক। তাঁর কথা শুনে মনে হচ্ছে, ওঁর মতো মানুষ হয় না। উনি অনেক কথা বলেছিলেন। কিন্তু, ডাক্তারদের 5 দফা দাবি নিয়ে কোনও কথা বললেন না। রাজনৈতিক তাস খেলে বেরিয়ে গেলেন। দিদির একটাই লক্ষ্য আন্দোলনকারীদের ভিলেন বানিয়ে মানুষের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছে দেওয়া। ছাত্ররা যে আন্দোলন করছেন তা চমৎকার। স্নায়ুর লড়াই চলছে।"
আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়িয়ে অধীরের বার্তা, "নৈতিকতার লড়াইয়ে আন্দোলনকারীরা জানেন কখন এগোতে হয়, কখন পিছতে হয় ৷ তাঁরা সবটাই জানেন। দিদির চালাকি ওঁরা ধরে ফেলেছেন। এখন সেভাবেই এগোচ্ছেন। দিদি কল্পনাই করতে পারেনি, ডাক্তাররা বৈঠকের সরাসরি সম্প্রচার না হওয়ায় ফিরে আসবেন। "
এরপর শনিবার রাতে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যে ঘটনা ঘটেছে তাও তুলে ধরেন অধীর। ঘটনাচক্রে প্রবল বৃষ্টির মধ্যে প্রায় 3 ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন আন্দোলনকারীরা। প্রথমে বৈঠকের ভিডিয়োগ্রাফির কথা বললেও পরে নিজেদের দাবি থেকে সরে আসেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁরা জানান, বৈঠকে কী কী আলোচনা হল তা লিখিত আকারে দিলেই তাঁরা কথা বলবেন । তবে ততক্ষণে প্রশাসনের তরফে আন্দোলনকারীদের জানিয়ে দেওয়া হয়-তিনঘণ্টা হয়ে গিয়েছে আর বৈঠক হবে না। এই সময়ে রাজ্যের ,স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য থেকে শুরু করে মুখ্যসচিব ও ডিজিপিকে সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়।
এর সামান্য কিছুক্ষণ বাদেই খবর আসে আরজি করের ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং কলকাতা পুলিশের কর্তা অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। চিকিৎসকদের দাবি, এই গ্রেফতারির খবর পেয়েছেন বলেই বৈঠক করতে রাজি হননি মমতা । এই বিষয়েও প্রতিক্রিয়া দেন অধীর । তিনি বলেন, "দিদি বিপাকে পড়তেই প্রাণের সখী হাজির। 3 ঘন্টা পেরিয়ে গিয়েছে ! এদিকে দিদির বিদায়ের ঘন্টাও বেজে গিয়েছে। টালা থানার ওসি গ্রেফতার হয়েছেন। দিদি ঘরের মধ্যে 3 ঘন্টা মন্ত্রী-সন্ত্রী নিয়ে অপেক্ষা করলেন। আর আন্দোলনকারীরা ছিলেন রাস্তায়।"