কলকাতা, 20 অগস্ট: আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে স্বাস্থ্যভবন অভিযান অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) ৷ এই অভিযানকে ঘিরে মঙ্গলবার তুলকালাম কাণ্ড সল্টলেকে ৷ পুলিশের প্রতিরোধে স্বাস্থ্যভবন পর্যন্ত পৌঁছতেই পারল না মিছিল ৷
আন্দোলনকারীদের দাবি, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদত্যাগ চাই ৷ কেন তিনি আরজি কর-কাণ্ডে কোনও পদক্ষেপ করেননি ৷ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী একটা মেয়েকে রক্ষা করতে পারে না ৷ তবে কেন তিনি ওই চেয়ারে বসে রয়েছেন এখনও ৷"
এবিভিপি'র স্বাস্থ্যভবন অভিযান
এ দিন দুপুরে তুমুল বৃষ্টি শুরু হয় সল্টলেকে ৷ সেই বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেই জারি থাকে এবিভিপি'র আন্দোলন । চিকিৎসক ছাত্রীর ধর্ষণ ও খুনের প্রতিবাদে সল্টলেক সিটি সেন্টারের কাছে জমায়েত করে এবিভিপি । এরপর সল্টলেক সিটি সেন্টার থেকেই শুরু হয় মিছিল ৷ ইন্দিরা ভবনের সামনে সেই মিছিলকে আটকে দেয় বিধাননগর পুলিশ ।
অভিযোগ, ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে এগোনোর চেষ্টা করেন এবিভিপির সদস্যরা । পুলিশের সঙ্গে আন্দোলোনকারীদের ধস্তাধস্তি বাঁধে । আন্দোলনকারীদের আটকাতে লাঠিচার্জ করে বিধাননগর পুলিশ । আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান । বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে আটক করেছে পুলিশ ।
বারুইপুরে আইনজীবীদের প্রতিবাদ মিছিল
অন্যদিকে, আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে পথে নামলেন বারুইপুর মহকুমা আদালতের আইনজীবীরা । ন্যায্যবিচার ও মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি তোলেন তাঁরা । ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড হাতে আদালত চত্বর থেকে এ দিন বের হয় আইনজীবীদের মিছিল । বার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য সবিতা চৌধুরী বলেন, "আরজি করের ঘটনায় আমরা ন্যায্যবিচার যাই এবং যত দ্রুত সম্ভব দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি ৷"
বারুইপুর আদালত ফৌজদারি বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক জ্যোতিপ্রকাশ মণ্ডলের কথায়, "আমাদের আন্দোলন দেখে অভিযুক্তরা যেন হুঁশিয়ার হয়ে যায় ৷ আমরা ধর্ষকদের হয়ে আদালতে লড়ব না ৷ আমরা বিচার চাই ৷"
দক্ষিণ দিনাজপুরে আইনজীবীদের মিছিল
পাশাপাশি আরজি করের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে পথে নামেন দক্ষিণ দিনাজপুরের আইনজীবীরাও । এ দিন বালুরঘাট জেলা আদালত এবং গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালত উভয় জায়গাতেই দু'ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হয় ৷ একইসঙ্গে মহকুমা আদালতের সমস্ত আইনজীবী একত্রিত হয়ে আদালত চত্বর থেকে মিছিল করে সমগ্র বুনিয়াদপুর শহর পরিক্রমা করে । আইনজীবীদের মিছিল চলাকালীন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, তার জন্য বংশীহারি থানার পক্ষ থেকে আদালত চত্বর-সহ বুনিয়াদপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রচুর পুলিশ মোতায়েন ছিল ।
এই বিষয়ে গঙ্গারামপুর মহাকুমা আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি রঞ্জন মিত্র জানান, "আজকে আমরা মহাকুমা আদালতের আইনজীবী এবং ক্লার্ক অ্যাসোসিয়েশন সদস্যরা একত্রিত হয়ে আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে পথে নেমেছি । আমরা খুবই চিন্তিত ৷ কারণ ঘরের মা বোনেরা কিন্তু সুরক্ষিত নেই । আমাদের সবারই গর্জে ওঠা দরকার । সেই কারণেই আমরা আজকে পথে নেমেছি ।"
জেলা কংগ্রেসের লালবাজার অভিযান
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এদিন লালবাজার অভিযানের আগেই ধর্মতলায় দফায় দফায় আটক হন কংগ্রেস কর্মী সমর্থকেরা । মঙ্গলবার শেষ পর্যন্ত কারওকেই বিক্ষোভ মিছিল করে লালবাজার যেতে দেওয়া হয়নি । আটক করে প্রিজন ভ্যানে করে লালবাজারেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে বিক্ষোভকারীদের । এ দিন 3টে নাগাদ মধ্য কলকাতা জেলা কংগ্রেসের ডাকে লালবাজার অভিযান ছিল । আরজি কর-কাণ্ডে কলকাতা জেলা কংগ্রেস সভাপতি সুমন পালের নেতৃত্বে কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল ও সন্দীপ ঘোষেকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিতে লালবাজার অভিযানের ডাক দেওয়া হয় ৷
তাঁদের জমায়েতের স্থল ছিল টিপু সুলতান মসজিদ লাগোয়া এলাকা । কিন্তু প্রবল বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ে বিক্ষোভকারীরা জমায়েত করতে পারেননি । তাই সুমন পাল-সহ বেলা 3টে নাগাদ উপস্থিত সকল বিক্ষোভকারীকে পুলিশ আটক করে । এরপরে বৃষ্টি কমলে ধাপে ধাপে বিভিন্ন জায়গা থেকে ছোট বড় মিছিল আসতে শুরু করে । তাদেরও ধাপে ধাপে আটক করে কলকাতা পুলিশ ।