ETV Bharat / state

ছেলেকে জেতাতে আইএসএফকে প্রার্থী না-দেওয়ার আর্জি জানিয়ে চিঠি ডালুর - Abu Hasem Khan letter Nawsad - ABU HASEM KHAN LETTER NAWSAD

Lok Sabha Election 2024: লোকসভা নির্বাচনে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী করেছে ইশা খান চৌধুরীকে ৷ আর ছেলে ইশাকে জেতাতে এবার আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে চিঠি দিয়ে প্রার্থী না দেওয়ার আর্জি জানালেন আবু হাসেম খান চৌধুরী ৷

Etv Bharat
Etv Bharat
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Apr 2, 2024, 9:17 PM IST

প্রার্থী না দেওয়ার আর্জি জানিয়ে চিঠি ডালুর

মালদা, 2 এপ্রিল: তাঁকে নিয়ে অনেক কথা হয়েছে ৷ লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে তাঁকে নাকি গৃহবন্দি করে রেখেছিলেন তাঁরই ছেলে ৷ তাঁর স্বাক্ষরও নাকি জাল করা হয়েছিল ! মালদায় ফিরে এসব খবর কার্যত ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন দক্ষিণ মালদার বিদায়ী সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী ৷ উলটে তিনি দাবি করেছেন, ছেলে ইশা খান চৌধুরী এবার ওই কেন্দ্রে নিশ্চিতভাবে জিতবেন ৷ তবে ছেলেকে জেতাতে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে প্রার্থী না দেওয়ার জন্য তিনি আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে চিঠি দিয়েছেন ৷ চিঠির প্রাপ্তি স্বীকারও করেছেন নওশাদ ৷

বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরী ৷ দীর্ঘদিন কলকাতায় ছিলেন ৷ একাধিকবার হাসপাতালে ভরতিও করতে হয়েছে ৷ কলকাতা থাকাকালীনই তাঁর ছেলে ইশা খান চৌধুরীর নাম দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে কংগ্রেস ৷ অবশ্য তিনিই ছেলের নাম ওই কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে সুপারিশ করে দলের কাছে পাঠিয়েছিলেন ৷

খানিকটা সুস্থ হয়ে অবশেষে মালদায় ফিরেছেন ৷ শারীরিক পরিস্থিতিতে তিনি ছেলের হয়ে প্রচারে আদৌ অংশ নিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ৷ ডালুবাবু বলছেন, "এই কেন্দ্রে আমি চারবার লড়েছি ৷ এবার আমি অসুস্থ ৷ দীর্ঘদিন হাসপাতালে ছিলাম ৷ এই কেন্দ্রটি দেখাশোনার কেউ নেই ৷ বিধায়ক হিসেবে ইশা সুজাপুর কেন্দ্রে ভালো নাম করেছিল ৷ অনেকেই চায়, সে এলাকার সাংসদ হোক ৷ মানুষ ওকে চায়। আমিও চাইছি। ইশাকে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে এবার প্রার্থী করার ক্ষেত্রে সুবিধে হয়েছে ৷ এ নিয়ে বিতর্কের কোনও অবকাশ নেই ৷ কে কী বলছে, কে কাকে দিয়ে কী বলাচ্ছে, এসব আমি জানি না ৷ মানুষ জানে, আমাদের বাড়ির সদস্য মানেই সৎ ৷"

আবু হাসেম খানের কথায়, "বিরোধী সরকার থাকলে কাজ করার সুবিধে অনেকটা কমে যায় ৷ এখানে তৃণমূল। কেন্দ্রে বিজেপি ৷ এতে কাজ করার সুযোগ পাওয়া কঠিন ৷ তবে বরকত'দা আর আমার অভিজ্ঞতা নিয়ে ইশা ভালোই কাজ করবে ৷ এই পরিবারের কেউ টাকা কামাতে রাজনীতি করে না ৷ আমাদের স্বপ্ন, মানুষের সেবা করা ৷ এজন্যই 12 বার আমাদের পরিবারের সদস্যরা সাংসদ হয়েছেন ৷ আটবার বরকত'দা। চারবার আমি ৷ ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমরা 13 নম্বর ভোটেও জিতব ৷"

ছেলেকে জেতাতে আইএসএফ-এর নওশাদ সিদ্দিকীকেও চিঠি দিয়েছেন ডালুবাবু ৷ চিঠিতে প্রয়াত বরকত সাহেবের সঙ্গে নওশাদের পরিবারের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তিনি জানিয়েছেন, 1980 সাল থেকে বরকত গনি খান চৌধুরী এই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৷ তাঁর মৃত্যুর পর তিনি নিজে চারবার এই কেন্দ্রের সাংসদ ৷ এবার তাঁর ছেলে কংগ্রেস প্রার্থী ৷ তাই যাতে তারা ধর্মনিরপেক্ষ ভোট ভাগাভাগির সুযোগ না পায়, তার জন্য তিনি এই কেন্দ্রে আইএসএফের প্রার্থী না দেওয়ার জন্য আর্জি জানাচ্ছেন ৷

আইএসএফ উত্তর মালদা কেন্দ্রে ইতিমধ্যে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে ৷ ধর্মনিরপেক্ষতার স্বার্থে সেই প্রার্থীকেও তুলে নেওয়া হলে ভালো হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি ৷ ডালুবাবু ভালোই জানেন, দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে আইএসএফ প্রার্থী দিলে ভোট ভাগাভাগির খেলায় ছেলের জয় অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে ৷ আইএসএফ প্রধানকে লেখা চিঠি নিয়ে ডালু কিছু বলতে রাজি না হলেও খোদ নওশাদ বলেন, "একটি চিঠি এসেছে শুনেছি ৷ কিন্তু সেই চিঠি এখনও আমার হাতে এসে পৌঁছোয়নি ৷ আমি দু’দিন ধরে কর্মীসভা নিয়ে ব্যস্ত ৷ মালদা ও মুর্শিদাবাদ হয়ে আজ ঝাড়গ্রামে যাচ্ছি ৷ ব্যক্তি ডালুবাবু, বিশেষ করে প্রয়াত বরকত গনি খান চৌধুরীর সঙ্গে আমাদের পরিবারের একটা ভালোবাসার জায়গা রয়েছে ৷ তবে দলের বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা ৷ ডালুবাবুর চিঠি নিয়ে দলে নিশ্চয়ই আলোচনা হবে ৷ দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত ৷"

আরও পড়ুন

মমতাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, দিলীপ ঘোষকে সতর্ক করল কমিশন

কার ভয়ে ইন্ডিয়া জোট ভাঙলেন মমতা, প্রশ্ন অধীরের

প্রার্থী না দেওয়ার আর্জি জানিয়ে চিঠি ডালুর

মালদা, 2 এপ্রিল: তাঁকে নিয়ে অনেক কথা হয়েছে ৷ লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে তাঁকে নাকি গৃহবন্দি করে রেখেছিলেন তাঁরই ছেলে ৷ তাঁর স্বাক্ষরও নাকি জাল করা হয়েছিল ! মালদায় ফিরে এসব খবর কার্যত ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন দক্ষিণ মালদার বিদায়ী সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী ৷ উলটে তিনি দাবি করেছেন, ছেলে ইশা খান চৌধুরী এবার ওই কেন্দ্রে নিশ্চিতভাবে জিতবেন ৷ তবে ছেলেকে জেতাতে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে প্রার্থী না দেওয়ার জন্য তিনি আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীকে চিঠি দিয়েছেন ৷ চিঠির প্রাপ্তি স্বীকারও করেছেন নওশাদ ৷

বেশ কিছুদিন ধরে অসুস্থ জেলা কংগ্রেস সভাপতি আবু হাসেম খান চৌধুরী ৷ দীর্ঘদিন কলকাতায় ছিলেন ৷ একাধিকবার হাসপাতালে ভরতিও করতে হয়েছে ৷ কলকাতা থাকাকালীনই তাঁর ছেলে ইশা খান চৌধুরীর নাম দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে কংগ্রেস ৷ অবশ্য তিনিই ছেলের নাম ওই কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে সুপারিশ করে দলের কাছে পাঠিয়েছিলেন ৷

খানিকটা সুস্থ হয়ে অবশেষে মালদায় ফিরেছেন ৷ শারীরিক পরিস্থিতিতে তিনি ছেলের হয়ে প্রচারে আদৌ অংশ নিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে ৷ ডালুবাবু বলছেন, "এই কেন্দ্রে আমি চারবার লড়েছি ৷ এবার আমি অসুস্থ ৷ দীর্ঘদিন হাসপাতালে ছিলাম ৷ এই কেন্দ্রটি দেখাশোনার কেউ নেই ৷ বিধায়ক হিসেবে ইশা সুজাপুর কেন্দ্রে ভালো নাম করেছিল ৷ অনেকেই চায়, সে এলাকার সাংসদ হোক ৷ মানুষ ওকে চায়। আমিও চাইছি। ইশাকে দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে এবার প্রার্থী করার ক্ষেত্রে সুবিধে হয়েছে ৷ এ নিয়ে বিতর্কের কোনও অবকাশ নেই ৷ কে কী বলছে, কে কাকে দিয়ে কী বলাচ্ছে, এসব আমি জানি না ৷ মানুষ জানে, আমাদের বাড়ির সদস্য মানেই সৎ ৷"

আবু হাসেম খানের কথায়, "বিরোধী সরকার থাকলে কাজ করার সুবিধে অনেকটা কমে যায় ৷ এখানে তৃণমূল। কেন্দ্রে বিজেপি ৷ এতে কাজ করার সুযোগ পাওয়া কঠিন ৷ তবে বরকত'দা আর আমার অভিজ্ঞতা নিয়ে ইশা ভালোই কাজ করবে ৷ এই পরিবারের কেউ টাকা কামাতে রাজনীতি করে না ৷ আমাদের স্বপ্ন, মানুষের সেবা করা ৷ এজন্যই 12 বার আমাদের পরিবারের সদস্যরা সাংসদ হয়েছেন ৷ আটবার বরকত'দা। চারবার আমি ৷ ঈশ্বরের ইচ্ছায় আমরা 13 নম্বর ভোটেও জিতব ৷"

ছেলেকে জেতাতে আইএসএফ-এর নওশাদ সিদ্দিকীকেও চিঠি দিয়েছেন ডালুবাবু ৷ চিঠিতে প্রয়াত বরকত সাহেবের সঙ্গে নওশাদের পরিবারের সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তিনি জানিয়েছেন, 1980 সাল থেকে বরকত গনি খান চৌধুরী এই কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৷ তাঁর মৃত্যুর পর তিনি নিজে চারবার এই কেন্দ্রের সাংসদ ৷ এবার তাঁর ছেলে কংগ্রেস প্রার্থী ৷ তাই যাতে তারা ধর্মনিরপেক্ষ ভোট ভাগাভাগির সুযোগ না পায়, তার জন্য তিনি এই কেন্দ্রে আইএসএফের প্রার্থী না দেওয়ার জন্য আর্জি জানাচ্ছেন ৷

আইএসএফ উত্তর মালদা কেন্দ্রে ইতিমধ্যে নিজেদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে ৷ ধর্মনিরপেক্ষতার স্বার্থে সেই প্রার্থীকেও তুলে নেওয়া হলে ভালো হয় বলেও জানিয়েছেন তিনি ৷ ডালুবাবু ভালোই জানেন, দক্ষিণ মালদা কেন্দ্রে আইএসএফ প্রার্থী দিলে ভোট ভাগাভাগির খেলায় ছেলের জয় অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে ৷ আইএসএফ প্রধানকে লেখা চিঠি নিয়ে ডালু কিছু বলতে রাজি না হলেও খোদ নওশাদ বলেন, "একটি চিঠি এসেছে শুনেছি ৷ কিন্তু সেই চিঠি এখনও আমার হাতে এসে পৌঁছোয়নি ৷ আমি দু’দিন ধরে কর্মীসভা নিয়ে ব্যস্ত ৷ মালদা ও মুর্শিদাবাদ হয়ে আজ ঝাড়গ্রামে যাচ্ছি ৷ ব্যক্তি ডালুবাবু, বিশেষ করে প্রয়াত বরকত গনি খান চৌধুরীর সঙ্গে আমাদের পরিবারের একটা ভালোবাসার জায়গা রয়েছে ৷ তবে দলের বিষয় সম্পূর্ণ আলাদা ৷ ডালুবাবুর চিঠি নিয়ে দলে নিশ্চয়ই আলোচনা হবে ৷ দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত ৷"

আরও পড়ুন

মমতাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য, দিলীপ ঘোষকে সতর্ক করল কমিশন

কার ভয়ে ইন্ডিয়া জোট ভাঙলেন মমতা, প্রশ্ন অধীরের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.