শিলিগুড়ি, 5 সেপ্টেম্বর: রাজ্যের শাসকদলের প্রভাবশালী চিকিৎসক নেতা অভীক দে'র হাসপাতাল ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ । পাশাপাশি পরীক্ষার নম্বরে কারচুপি, মার্কশিটের নম্বরে হেরফের, টুকলি, দুর্নীতি এবং বিশেষত পড়ুয়াদের হুমকির ঘটনার তদন্তে বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করল কর্তৃপক্ষ । তিনদিনের মধ্যে ওই কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে ।
এছাড়াও বুধবার কলেজে পড়ুয়া, পিজিটি, হাউজ স্টাফ ও অধ্যাপকদের তুমুল বিক্ষোভের পর রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের গর্ভনিং বডির মেম্বার তথা উত্তরবঙ্গ মেডিসিন বিভাগের প্রধান দীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন । সব মিলিয়ে বর্তমানে উত্তাল পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে ।
বুধবার সকাল থেকেই উত্তরবঙ্গ লবি নিয়ে সরব হন মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া, জুনিয়র ডাক্তার, হাউস স্টাফ ও অধ্যাপকরা । অধ্যাপকদের ফোনে হুমকি দিয়ে নম্বর বাড়ানো, মার্কশিটে সাদাকালি দিয়ে নম্বর মুছে নম্বর বাড়িয়ে দেওয়া, পরীক্ষা চলাকালীন ফোন করে হল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার হুমকি, পড়ুয়াদের আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন প্রত্যাহার করার জন্য প্রাণে মারা ও ধর্ষণের হুমকি-সহ একাধিক অভিযোগ উঠেছে অভীক দে ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে ।
বুধবার রাত পর্যন্ত তারই প্রতিফলন ঘটে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ক্যাম্পাসে । তুমুল বিক্ষোভের মুখে পড়ে পদত্যাগ করেন ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিন সুদীপ্ত শীল । অভীক দে ও উত্তরবঙ্গ লবির বিরুদ্ধে 30 জন এমবিবিএস পড়ুয়া ও 15 জন পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেনি কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন । উত্তরবঙ্গ লবির অন্যতম মাথা জলপাইগুড়ির চক্ষু বিশেষজ্ঞ সুশান্ত রায় ও অভীক দে কোভিডের সময় থেকে দাপট দেখাতে শুরু করেন বলে অভিযোগ । কোভিডের সময় স্বাস্থ্য দফতরের টাকাও নয়ছয়ের অভিযোগ রয়েছে ৷
এই বিষয়ে সুশান্ত রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি । উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রজিৎ সাহা বলেন, "রাতেই ডিন সন্দীপ সেনগুপ্ত ও অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিন সুদীপ্ত শীল পদত্যাগ করেছেন । একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য । পাশাপাশি যাঁদের নামে হুমকির অভিযোগ উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে ।"