ঝাড়গ্রাম, 21 সেপ্টেম্বর: জঙ্গল থেকে তোলা ছাতু অর্থাৎ মাশরুম রান্ন করে খাওয়ার পর অসুস্থ হলেন 6 জন ৷ শুক্রবার সন্ধ্যায় লালগড় থানার নেতাই গ্রামের একই পরিবারের জন অসুস্থ হয়ে পড়েন ৷ খবর পেয়ে লালগড় থানার পুলিশ তাঁদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে ৷ তাঁদের প্রথমে লালগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় ৷
6 জনের মধ্যে 3 জনকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে । অসুস্থদের মধ্যে রয়েছে 7 বছরের এক বালিকা, 12 বছরের এক বালক এবং 16 বছরের এক কিশোর ৷ এই ছ'জনই একই পরিবারের সদস্য। দীনবন্ধু দোলাই (30), জবা দোলাই (7) এবং মন্দিরা দোলাই (26) এই তিনজনকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে ৷ খবর পেয়ে রাজ্যের বনমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে তাঁদের দেখতে যান।
লালগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা হয় অনিমেষ দোলাই (16), মধূ দোলাই (70) এবং আনিক দোলাইয়ের (12) ৷ প্রাথমিক চিকিৎসার পর বেশ কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণে রাখার পর এদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গল থেকে ছাতু অর্থাৎ মাশরুম কুড়িয়ে এনে এদিন দুপুরে রান্না করে খাওয়ার পর বমি, পায়খানা, মাথা ঘোরা শুরু হয়। তারপরে লালগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এদের নিয়ে যাওয়া হলে তিন জনকে ঝাড়গ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানাস্তরিত করা হয়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, চিকিৎসাধীন তিন জনের বর্তমানে অবস্থা স্থিতিশীল। কাপগাড়ি সেবা ভারতী মহাবিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগের প্রধান তথা পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ডঃ প্রণব সাউ বলেন, "বর্ষার সময় জঙ্গলমহলে জঙ্গলগুলিতে আমাদের পরিচিত 6 থেকে 7 প্রকারের ছাতু হয়। বিশেষ করে কুড়কুড়ি বা পুটকা ছাতু, কাড়াং ছাতু, বালি ছাতু-সহ বিভিন্ন ধরনের ছাতু এই সময় পাওয়া যায়। এছাড়াও বলের মতো গোল গোল এক ধরনের ছাতুও হয়ে থাকে ৷ সেইসব ছাতু ভুল করে খেয়ে থাকলে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে ৷"
এছাড়াও আমরা যে সমস্ত ছাতুগুলি খাই বা যেগুলি আমাদের পরিচিত সেই ছাতুগুলিও দীর্ঘদিনের হলে বিষক্রিয়া ঘটতে পারে। তার কারণ, ছাতু দীর্ঘদিন হয়ে গেলে তার মধ্যে কিছু ছত্রাকের জন্ম নেই। যে ছত্রাক গুলি আমাদের পেটের বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে। তাই পরিচিত ছাতু এবং টাটকা ছাতু খাওয়া উচিত। বেশি পুরনো ছাতু খেলে এই ধরনের বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।