কলকাতা, 25 নভেম্বর: মৃত রোগীর পরিজনদের থেকে টাকা তুলতেন আরজি কর হাসপাতালের দুই ডোম ৷ সেই টাকার বখরা নিয়েই দিনকয়েক আগে মর্গের ভেতরে তাঁরা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন ৷ এমনই তথ্য এসেছে পুলিশের হাতে ৷ ওই দুই ডোমকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷
আরজি কর হাসপাতালে টাকার বখরা নিয়ে দুই ডোমের মধ্যে তর্কাতর্কি এবং হাতাহাতির জেরে সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে হয় ময়নাতদন্ত ৷ সেই ঘটনায় তদন্তে নেমে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে, আরজি কর হাসপাতালে মৃত রোগীর পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে একাধিক বাহানায় টাকা আদায় করতেন ডোম সন্তোষ মল্লিক । প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে, সেই টাকার বখরা নিয়েই মারামারি বাঁধে । সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের মর্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজ বন্ধ থাকা এবং সেখানে মারামারির ঘটনায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে দুই ডোমকে।
এই ঘটনায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, "হাসপাতালের তরফ থেকে ভাঙচুরের তথ্য পেয়ে আমরা তদন্তে নামি । পারিপার্শ্বিক তথ্যপ্রমাণ ও হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে আমরা এই দুই ডোমকে গ্রেফতার করেছি ।"
ধৃতদের নাম সন্তোষ মল্লিক এবং শম্ভু মল্লিক । টালা থানা সূত্রের খবর, তাঁদের গ্রেফতারির পর আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির বিষয়ে একাধিক তথ্য উঠে এসেছে । পুলিশের অনুমান, একাধিক অসাধু হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে এই ডোমেদের ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল । এছাড়াও ধৃত দুই ডোমের মধ্যে সন্তোষ মল্লিককের নামে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে অভিযোগ জমা পড়ে ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ঘটনার রাতে সন্তোষ মল্লিক হাতে মদের বোতল নিয়ে আরজি কর হাসপাতালের মর্গে আসেন । সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন অন্য দুই ডোম শম্ভু মল্লিক এবং গোপাল মল্লিক । তাঁদের নাকি মদ্যপান করার অফার দেন সন্তোষ । তারপর তিনি আচমকাই মর্গের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ । তবে এমনটা অভিযোগ উঠলেও পুলিশ জানাচ্ছে, তাঁদের মধ্যে টাকা লেনদেন নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল ।
তদন্ত নেমে প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানতে পেরেছে যে, আরজি কর হাসপাতালে মৃত রোগীর পরিজনদের থেকে নানা ভাবে টাকা আদায় করতেন ডোম সন্তোষ মল্লিক । এই ঘটনায় বেশ কয়েকজন চিকিৎসক এবং হাসপাতাল কর্মীরাও যুক্ত রয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে । ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তে নেমে সন্তোষ মল্লিক এবং শম্ভু মল্লিককে জেরা করে এই ঘটনায় আরও নতুন তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছে লালবাজার ।