সামশেরগঞ্জ, 4 অক্টোবর: পুজোর আগেই দশমীর সুর সামশেরগঞ্জে ৷ চোখের সামনে দেখতে দেখতে গঙ্গাবক্ষে তলিয়ে গেল দশটি পাকা বাড়ি ৷ শুক্রবার সকাল থেকে ফের ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ল মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জের গঙ্গা তীরবর্তী শিকদারপুর গ্রাম ৷ পুজোর আগে গঙ্গা ভাঙনের জেরে চোখের জলে ভাসছেন ঘরহারা মানুষজন ৷
গত কয়েকদিন ধরেই, একটু একটু করে বাড়ির কাছে এগিয়ে আসছিল গঙ্গা ৷ শুক্রবার সকাল হতেই গঙ্গার জলস্তর বৃদ্ধি পায় ৷ সেইসঙ্গে তীব্র হয় গঙ্গার ভাঙন ৷ আর তার জেরেই তলিয়ে গিয়েছে প্রায় দশটি বাড়ি ৷ নদীতে মিশে গিয়েছে প্রচুর পরিমাণে কৃষিজমি ও বাগান ৷ আচমকা ভাঙন শুরু হওয়ায় আসবাবপত্র সরানোর সুযোগও পাননি কেউ ৷ যাবতীয় আসবাবপত্র সবকিছু সমেত গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে গিয়েছে বাড়িঘর ৷ সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকা জুড়ে আতঙ্ক আর হাহাকার তৈরি হয়েছে ৷ যে কোনও দিন ঘর হারাতে হতে পারেন আরও অনেকে ৷
গঙ্গা গর্ভে বাড়ির যাবতীয় সামগ্রী ও আসবাবপত্র তলিয়ে যাওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন দুর্গত পরিবারের সদস্যরা ৷ এমনকি আতঙ্কে থাকা আশপাশের প্রায় শতাধিক পরিবার বাড়ির সব আসবাবপত্র নিয়ে অস্থায়ী কোনও জায়গায় সরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন ৷ গঙ্গা তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, কয়েকদিন ধরে লাগাতার জলস্তর কমলেও, গত দু’দিনে ব্যাপক পরিমাণে জলস্তর বেড়েছে ৷ যেভাবে জল বাড়ছে তাতে ভাঙনের আতঙ্কে উদ্বেগ আরও ছড়াচ্ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে ৷
অভিযোগ উঠেছে ফরাক্কা ব্যারেজের সব গেট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ ৷ ফলে 109টি গেট দিয়ে গঙ্গার নিম্ন অববাহিকা দিয়ে অনবরত জল বইছে ৷ এর ফলে গঙ্গা এবং পদ্মার জলস্তর বিপদসীমার প্রায় একফুট উপর দিয়ে বইছে ৷ উল্লেখ্য, গত রবিবার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ফরাক্কা বাঁধ থেকে 6 লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হবে ৷ তাই আগে থেকেই গঙ্গা এবং পদ্মা তীরবর্তী বাসিন্দাদের গত কয়েকদিন থেকে সতর্ক করা হচ্ছিল ৷ তবে, সেই জল বয়ে যাওয়ার পর গত কয়েকদিন ধরেই ভাঙন শুরু হয়েছে সামশেরগঞ্জ এলাকায় ৷
আর আজ সকালে ভাঙনের কবলে পড়েছে সেই সামশেরগঞ্জ ৷ ঘরহারাদের দাবি, তাঁরা সর্বহারা হয়ে গিয়েছেন ৷ এদিকে দুর্গত এলাকায় ত্রাণ ও প্রশাসনের কর্তারা পৌঁছাননি বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ যার জেরে ক্ষোভ বেড়েই চলেছে ৷ চার-পাঁচদিন আগে প্রশাসনের তরফে এলাকায় কিছু ত্রিপল দেওয়া হয়েছিল ৷ কিন্তু, আজকের ভাঙনের পর, প্রশাসনের তরফে কোনও উদ্ধারকাজ বা ত্রাণ পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ এ নিয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, কেউ কোনও মন্তব্য করতে চাননি ৷