কালনা, 31 অগস্ট: চলতি বছরেই নিউজিল্য়ান্ডের কুক প্রণালী জিতে লক্ষ্য স্থির করে ফেলেছিলেন ৷ আর শুক্রবার প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে নর্থ চ্যানেল পার করলেন কালনার সায়নী দাস ৷ ঐতিহাসিক কীর্তি গড়তে পূর্ব বর্ধমানের মেয়ে সময় নিলেন 13 ঘণ্টা 22 মিনিট ৷ নর্থ চ্যানেল বা উত্তর প্রণালী জিতে মহাদেশের প্রথম মহিলা হিসেবে সপ্ত সিন্ধুর (ওসিয়ান সেভেন সুইম) পঞ্চম সিন্ধু পার করে ফেললেন সায়নী ৷ সামনে রইল কেবল সুগারু ও জিব্রাল্টার প্রণালী ৷
অর্থাৎ, বাকি দুই প্রণালী পেরোলেই বাংলা শুধু নয়, এশিয়ার প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসেবে ওশিয়ান সেভেন চ্যালেঞ্জের মুকুট জিতবেন 26 বছরের সায়নী ৷ এর আগে 2017 সালে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়েছিলেন সায়নী। এরপর 2019 সালে আমেরিকার ক্যাটালিনা প্রণালী সাঁতরেছিলেন তিনি ৷ 2022 সালে মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের মলোকাই এবং চলতি বছর এপ্রিলে নিউজিল্যান্ডের কুক প্রণালী জয় করেন বাংলার মেয়ে।
সায়নীর মতে, প্রতিকূল পরিবেশে এই ধরনের চ্যানেল পার করা খুবই চ্যালেঞ্জের। বিশেষ করে ভীষণ ঠান্ডা, জলের প্রচণ্ড স্রোত, সামুদ্রিক ঝোড়ো হাওয়া ছাড়াও নর্থ চ্যানেলে আছে জেলিফিস কিংবা হাঙরের ভয়। সবকিছু উপেক্ষা করেই শেষমেশ ইতিহাসে নাম তুললেন সায়নী ৷ যেহেতু, নর্থ চ্যানেলকে ওসিয়ান সেভেন সুইমের সবচেয়ে কঠিন প্রণালী বলে ধরা হয়, তাই কালনা শহরের বারুইপাড়া এলাকার বাসিন্দা সায়নীর কাছে এটা ছিল সাঙ্ঘাতিক চ্যালেঞ্জর মতো। উত্তর আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের মধ্যে এই প্রণালীর দূরত্ব 34.5 কিলোমিটার হলেও আবহাওয়ার কারণে সেই দূরত্ব 45 কিলোমিটারের হয়ে যায়। তাছাড়া জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাপমাত্রা ঘোরাফেরা করে 10-14 ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে।
নর্থ চ্যানেল পার করে এক ভিডিয়োবার্তায় সায়নী দাস বলেন, "সপ্ত সিন্ধুর পঞ্চম সিন্ধু অর্থাৎ নর্থ চ্যানেল পার করেছি। আমার সময় লেগেছে 13 ঘন্টা 22 মিনিট। প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে এই চ্যানেল পার করলাম। পাঁচটা সিন্ধু পার করে এশিয়া মহাদেশের প্রথম মহিলা সাঁতারু হিসেবে আমার নাম যুক্ত হল। আর দু'টো চ্যানেল বাকি রয়েছে। স্পেনের জিব্রাল্টার ও জাপানের সুগারু। ভয়ঙ্কর জেলিফিসের আক্রমণ ও আবহাওয়ার কারণে আমি বিধ্বস্ত ৷ কিন্তু সাফল্য পেয়েছি তাই এটাই আমার কাছে বড়ো পাওনা।"