কলকাতা, 7 জুলাই: এক গোলে পিছিয়ে পড়েও তিন গোল করল ইস্টবেঙ্গল ৷ যার জেরে কলকাতা লিগে পরপর দু’ম্যাচে জয় পেল লাল-হলুদ ৷ ছয় দিন পরে কলকাতা লিগের প্রথম ডার্বি ৷ তার আগে বিনো জর্জের প্রশিক্ষণে ইস্টবেঙ্গলের এই জয় নিঃসন্দেহে আত্মবিশ্বাস বাড়াবে ৷
ঘরের মাঠে মরশুমের প্রথম ম্যাচ ছিল রবিবার ৷ রথযাত্রার বিকেলে লাল-হলুদ সমর্থকদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মত ৷ দিনের শেষে জর্জ টেলিগ্রাফের বিরুদ্ধে 3-1 গোলে জয় তুলে নিয়ে সমর্থকদের রেথের উপহার দিলেন লাল-হলুদ ফুটবলাররা ৷ সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের জোড়া গোলের পাশে স্কোরবোর্ডে নাম জেসিন টি কে-র ৷ জর্জ টেলিগ্রাফের হয়ে গোল অমিত এক্কার ৷
টালিগঞ্জ অগ্রগামীর বিরুদ্ধে সাত গোলে জেতার পরে, জর্জ টেলিগ্রাফের বিরুদ্ধে তিন গোল ৷ পরপর দু’টো জয়ের পরেও, বিনো জর্জের দলের খেলায় এখনও বোঝাপড়ার অভাব রয়েছে ৷ তিনটে ভালো মুহূর্ত, তিনটে গোল ৷ বাকি সময় ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল অগোছালো ছিল ৷ যা কোচ বিনো জর্জ ম্যাচ পরবর্তী সাংবাদিক বৈঠকে মানলেন ৷ একাধিক মিস পাস দেখে একসময় মনে হচ্ছিল না আমন সি কে, তন্ময় ঘোষ, নসিব, সুনীল বাথালারা পরস্পরকে চেনেন না ৷ 36 মিনিটে অমিত এক্কার শট সার্থক গলুইয়ের গায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায় ৷ জর্জ টেলিগ্রাফের গোল লাল-হলুদের খারাপ ফুটবলের কারণেই ৷ এর আগে যদিও 22 মিধিটে আমন সিকে-র শট পোষ্টে লেগে ফিরে আসে ৷ 45 মিনিটেও জেসিন টিকে সহজ সুযোগ থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন ৷
যদিও বিরতির পরে সায়ন, বিজয় মুর্মূ, সঞ্জীব ঘোষ নামতেই খেলা ঘোরে ইস্টবেঙ্গলের ৷ তন্ময় এবং নসিবের মাঝমাঠে বোঝাপড়া বাড়তেই আক্রমণের ঝাঁজ বাড়ে ৷ 47 মিনিটে গোল করেন জেসিন টিকে ৷ বক্সের বাইরে থেকে নসিবের শট পোস্টে লেগে ফিরলে, তা জালে পাঠান জেসিন ৷ এরপর সময় যত এগিয়েছে ইস্টবেঙ্গলের আক্রমণের চাপ বেড়েছে ৷ ছন্দহারা হয়েছে জর্জ টেলিগ্রাফ ৷ সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় এখন আইএসএলের জল-হাওয়া গায়ে লাগিয়ে অনেক বেশি ক্ষুরধার ৷ 65 মিনিটে তাঁর পা থেকেই ইস্টবেঙ্গলের দ্বিতীয় গোল আসে ৷ 89 মিনিটে ফের গোল করে সায়ন ইস্টবেঙ্গলের জয় নিশ্চিত করেন ৷
তবে খেলায় খামতি অনেক ৷ কোচ বিনো জর্জ বলছেন, "বর্ষার ভেজা মাঠ সমস্যা তৈরি করেছিল ৷ তার থেকেও বড় কথা লাল-হলুদ জার্সির চাপ সামলানোর মানসিকতা এখনও বেশিরভাগের গড়ে ওঠেনি ৷ ফলে আক্রমণ থেকে রক্ষণ, সবেতেই একটা বোঝাপড়ার সমস্যা ছিল ৷ বিরতির পরে ভুল শুধরে দল অনেক ভালো খেলেছে ৷" আগামী শনিবার ডার্বি ৷ ফুটবলার হিসেবে কৌশলের পাশাপাশি মানসিক চাপ সামলাতে হবে ফুটবলারদের ৷
গ্যালারিতে বসে এদিন কলকাতা লিগের খেলা দেখলেন হেড কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত ৷ ইস্টবেঙ্গলের ডেভলপমেন্ট দলের পারফরম্যান্স দেখে হয়তো আগামীতে কতজনকে সিনিয়র দলে নেওয়া যেতে পারে তা মেপে নিলেন ৷ কিংবা, ডুরান্ড কাপে এই দল থেকে কাদের খেলানো যায়, তা বোঝার চেষ্টা করলেন হয়তো ৷ দিনের শেষে জয়ই শেষ কথা ৷ পিছিয়ে পড়ে তিন গোলে স্বস্তি, ডার্বির আগে ফুটবলারদেরও মানসিক জোর বাড়াবে বলে মনে করছে ম্যানেজমেন্ট ৷