ETV Bharat / sports

আইএসএল প্রচার সর্বস্ব, মান শূন্য ! সন্তোষ জিতিয়ে ‘সেনসেশ্যনাল’ সেনমশাই - SANJOY SEN EXCLUSIVE INTERVIEW

বিমানবন্দরে যখন রাজ্যের মন্ত্রী, আমলা, বড় ক্লাবের কর্তাদের শুভেচ্ছার মাতামাতি চলছে, সঞ্জয় সেন কার্যত সবার অলক্ষ্যে নিজের গাড়িতে করে চেতলামুখী ।

Sanjoy Sen Exclusive Interview
সন্তোষ জিতিয়ে ‘সেনসেশ্যনাল’ সেনমশাই (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Sports Team

Published : Jan 2, 2025, 1:57 PM IST

Updated : Jan 2, 2025, 2:32 PM IST

কলকাতা, 2 জানুয়ারি: চেতলার সঞ্জয় সেন প্রচলিত ধারণার থেকে একটু আলাদা । নিজের কাজটি করতে ভালোবাসেন, নিজের বিশ্বাসে অটল থেকে । প্রচারের ঢঙ্কা-নিনাদে তিনি নেই । জাহির করার প্রবণতা নেই । প্রচার সর্বস্ব জগতে নির্লিপ্ত বাঙালি যে কাজে বিশ্বাসী, মুখে মারিতং জগতে নয় । বিমানবন্দরে যখন রাজ্যের মন্ত্রী, আমলা, বড় ক্লাবের কর্তাদের শুভেচ্ছার মাতামাতি চলছে, সঞ্জয় সেন কার্যত সবার অলক্ষ্যে নিজের গাড়িতে করে চেতলামুখী ।

সন্তোষ ট্রফি অভিযান শুরুর প্রথম দিন থেকে বলে এসেছেন, সাফল্যের আলোর দাবিদার ফুটবলাররা । ট্রফি নিয়ে শহরে ফিরেও একই কথা তাঁর মুখে । সন্তোষজয়ী কোচ বলছেন, “সব কৃতিত্ব ছেলেদের দিতে চাই । আমি খালি ওদের যাবতীয় নির্দেশ দিয়েছি । ওরাই আসল কাজ করেছে । ছেলেদের এটা প্রাপ্য । ওরা আড়াই মাস ধরে লড়াই করেছে । মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল বা মহমেডানের খেলা না-থাকা সত্ত্বেও এই যে এত দর্শক স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসে ওদের অভিনন্দন জানাচ্ছে, এতে ওরা অভিভূত । অধিকাংশ ছেলে গ্রাম্য গরিব ঘরের । তাঁরা কেউ বাবা-মা, কেউ পরিবারের অন্য কারও সঙ্গে আমার আলাপ করিয়ে দিচ্ছে, তাঁরা আমায় প্রণাম জানাচ্ছেন, এতেই আমি খুশি ।”

চেতলার সঞ্জয় সেন প্রচলিত ধারণার থেকে একটু আলাদা (ইটিভি ভারত)

আইএসএলের ভরা বাজারে বাংলার ফুটবলে নজর ঘোরাতে সন্তোষ ট্রফি জয় যেন জিওন কাঠির কাজ করেছে । বাঙালির ফুটবল নিয়ে লেখা বন্ধ করার সময় যে আসেনি তা নিজামের শহরের লিপিবদ্ধ হয়েছে । কল্যাণী থেকে হায়দরাবাদ, সোনালি দৌড়ে কোন সময় মনে হয়েছিল ট্রফি জয় সম্ভব ? সঞ্জয় বলেন, “একটা সময়ের পর নিজের মনে বিশ্বাস এসে যায় যে হ্যাঁ পারব । কিন্তু সেটা প্রকাশ করতে নেই, তাহলে লক্ষ্যচ্যূত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।আত্মত্যাগ তো অবশ্যই করতে হবে ৷ কাউকে বাবা-মাকে ছেড়ে থাকতে হবে, কারও স্ত্রী-সন্তানকে ছেড়ে থাকতে হবে । না-হলে সাফল্য আসে না । আমার ফুটবলাররা এই আত্মত্যাগেরই দাম পেয়েছে । প্রথম থেকেই আমি শৃঙ্খলায় দলকে বেঁধে ফেলেছিলাম ৷ শৃঙ্খলা না-থাকলে লক্ষ্যপূরণ হবে না ৷ তবে হিটলারী শাসন নয়, ভালোবাসা দিয়ে শৃঙ্খলায় বেঁধেছিলাম ৷”

ভারতীয় ফুটবলে সবচেয়ে বড় লিগ আইএসএল । অর্থ, গ্ল্যামার সবকিছুই এখন আইএসএলকে ঘিরে । অনেকেই বলছেন সঞ্জয় সেন আইএসএলে কোচিং করাতে পারেন । একসময় আইএসএলে এটিকের ডাগ আউটে ছিলেন । সাফল্যের আলো তাঁর গায়েও লেগেছে । এখন প্রশ্ন করলে তিনি স্বাধীন দায়িত্ব পাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করেন । তবে আইএসএল নিয়ে মোহভঙ্গ রয়েছে, সেটাও বেরিয়ে পড়ে তাঁর কথায় । বাগানের প্রাক্তনী বলছেন, “আইএসএল এর মান শূন্য ৷ শুধুমাত্রই চমক এবং প্রচার সর্বস্ব । পান মশলার বিজ্ঞাপন শাহরুখ খানকে দিয়ে করালে তাতে বিক্রি বাড়বে । উপকার হবে কি ? যেকোনও দেশের ফুটবল ক্রমপর্যায়সূচক সেই দেশের সর্বোচ্চ লিগের মান দেখলে বোঝা যায় । আইএসএল যদি ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি করবে, তাহলে দেশের ফুটবল এত পিছিয়ে থাকবে কেন ?”

ম্যাচর সংযুক্তি সময়ে এসেছে জয়ের গোল । পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে প্রতিপক্ষের ওপর স্টিম রোলার চালানোর পরে ফাইনালে গোল পাওয়ার জন্য অপেক্ষা । ছটফট করেনি মন ? মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে উদ্বিগ্ন হননি ? “ওরকমভাবে বলা সম্ভব নয় যে কোন সময় আমরা জয়ের গন্ধ পেতে শুরু করেছিলাম । কেরল শক্তিশালী প্রতিপক্ষ । গতবারের চ্যাম্পিয়ন সার্ভিসেস, তাদের আমরা দু’বার হারিয়েছি ৷ কিন্তু আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল যে হারার আগে হারব না । শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করে যাব ৷ প্রতিপক্ষ যেই আসুক না কেন মাঠে চোখে চোখ রেখে দেখা হবে । বিরতিতে বলেছিলাম ধৈর্য রাখ । আর নিজের স্বাভাবিক ছন্দে খেল । ফাইনালে রবির জয়সূচক গোলের পর প্রথম অনুভূতি এক কথায় অতুলনীয় । তখনই মনে হয়েছিল আমার বুক থেকে একটা বড় পাথর নেমে গেল,” বলছেন বাগানকে দেশের সেরা করা কোচ ৷

ক্লাব এবং রাজ্য পর্যায়ে সব সাফল্য পেয়েছেন সঞ্জয় সেন । তবুও তিনি রিসিভিং এন্ডে । ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, অমল দত্ত, সুভাষ ভৌমিক, সুব্রত ভট্টাচার্যের পরে সঞ্জয় সেন বাংলার সেরা কোচ । প্রশংসায় খুশি সঞ্জয় ৷ সন্তোষজয়ী কোচ বলছেন, “যারা নিন্দুক, যারা সমালোচক, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে তাঁদের উপর কোনও প্রতিশোধস্পৃহাই রাখতে চাই না । আমার কাজ আমি করেছি । দুনিয়ায় বাকিরা কে কী বলল, তা নিয়ে আদৌ মাথা ঘামাতে চাই না ।” তাঁর মাথায় শুধু বাংলা দলের এই ফুটবলারদের উজ্বল ভবিষ্যত গড়ে ওঠার চিন্তা । “আমি চাই এই ছেলেগুলো যেন আইএসএল ক্লাবে ডাক পায় । আশা করি এরাও বড় বড় দলগুলিতে খেলে নিজেদের জাত চেনাতে পারবে,” চিন্তার সুর সঞ্জয় সেনের গলায় ।

প্রচার সর্বস্ব দুনিয়ায় সঞ্জয় সেন গুটিয়ে থাকতে ভালোবাসেন । সঠিক কথা অপ্রিয় হলেও বলতে দ্বিধা করেননি । তা নিয়ে আক্ষেপ-অনুযোগ নেই । সেন বলছেন, “আমি চিরকালই প্রচারের আধারে থাকতে ভালোবাসি ৷ যারা খেলেছে তারা ট্রফি নিয়ে নাচানাচি করছে, করুক ৷ কিন্তু আমি সবসময় পিছনে থাকতে চাই । এটা আমার স্বভাব । কাল থেকেই আবার রোজকার জীবন শুরু হবে । সেই বাজার যাওয়া, সেই মাছ কেনা ৷ তাহলে কোন সঞ্জয় সেন আসল ? সাধারণ জীবন যাপনের সঞ্জয় সেন ।”

আরও পড়ুন

কলকাতা, 2 জানুয়ারি: চেতলার সঞ্জয় সেন প্রচলিত ধারণার থেকে একটু আলাদা । নিজের কাজটি করতে ভালোবাসেন, নিজের বিশ্বাসে অটল থেকে । প্রচারের ঢঙ্কা-নিনাদে তিনি নেই । জাহির করার প্রবণতা নেই । প্রচার সর্বস্ব জগতে নির্লিপ্ত বাঙালি যে কাজে বিশ্বাসী, মুখে মারিতং জগতে নয় । বিমানবন্দরে যখন রাজ্যের মন্ত্রী, আমলা, বড় ক্লাবের কর্তাদের শুভেচ্ছার মাতামাতি চলছে, সঞ্জয় সেন কার্যত সবার অলক্ষ্যে নিজের গাড়িতে করে চেতলামুখী ।

সন্তোষ ট্রফি অভিযান শুরুর প্রথম দিন থেকে বলে এসেছেন, সাফল্যের আলোর দাবিদার ফুটবলাররা । ট্রফি নিয়ে শহরে ফিরেও একই কথা তাঁর মুখে । সন্তোষজয়ী কোচ বলছেন, “সব কৃতিত্ব ছেলেদের দিতে চাই । আমি খালি ওদের যাবতীয় নির্দেশ দিয়েছি । ওরাই আসল কাজ করেছে । ছেলেদের এটা প্রাপ্য । ওরা আড়াই মাস ধরে লড়াই করেছে । মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল বা মহমেডানের খেলা না-থাকা সত্ত্বেও এই যে এত দর্শক স্বতঃস্ফূর্তভাবে এসে ওদের অভিনন্দন জানাচ্ছে, এতে ওরা অভিভূত । অধিকাংশ ছেলে গ্রাম্য গরিব ঘরের । তাঁরা কেউ বাবা-মা, কেউ পরিবারের অন্য কারও সঙ্গে আমার আলাপ করিয়ে দিচ্ছে, তাঁরা আমায় প্রণাম জানাচ্ছেন, এতেই আমি খুশি ।”

চেতলার সঞ্জয় সেন প্রচলিত ধারণার থেকে একটু আলাদা (ইটিভি ভারত)

আইএসএলের ভরা বাজারে বাংলার ফুটবলে নজর ঘোরাতে সন্তোষ ট্রফি জয় যেন জিওন কাঠির কাজ করেছে । বাঙালির ফুটবল নিয়ে লেখা বন্ধ করার সময় যে আসেনি তা নিজামের শহরের লিপিবদ্ধ হয়েছে । কল্যাণী থেকে হায়দরাবাদ, সোনালি দৌড়ে কোন সময় মনে হয়েছিল ট্রফি জয় সম্ভব ? সঞ্জয় বলেন, “একটা সময়ের পর নিজের মনে বিশ্বাস এসে যায় যে হ্যাঁ পারব । কিন্তু সেটা প্রকাশ করতে নেই, তাহলে লক্ষ্যচ্যূত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।আত্মত্যাগ তো অবশ্যই করতে হবে ৷ কাউকে বাবা-মাকে ছেড়ে থাকতে হবে, কারও স্ত্রী-সন্তানকে ছেড়ে থাকতে হবে । না-হলে সাফল্য আসে না । আমার ফুটবলাররা এই আত্মত্যাগেরই দাম পেয়েছে । প্রথম থেকেই আমি শৃঙ্খলায় দলকে বেঁধে ফেলেছিলাম ৷ শৃঙ্খলা না-থাকলে লক্ষ্যপূরণ হবে না ৷ তবে হিটলারী শাসন নয়, ভালোবাসা দিয়ে শৃঙ্খলায় বেঁধেছিলাম ৷”

ভারতীয় ফুটবলে সবচেয়ে বড় লিগ আইএসএল । অর্থ, গ্ল্যামার সবকিছুই এখন আইএসএলকে ঘিরে । অনেকেই বলছেন সঞ্জয় সেন আইএসএলে কোচিং করাতে পারেন । একসময় আইএসএলে এটিকের ডাগ আউটে ছিলেন । সাফল্যের আলো তাঁর গায়েও লেগেছে । এখন প্রশ্ন করলে তিনি স্বাধীন দায়িত্ব পাওয়ার দিকে ইঙ্গিত করেন । তবে আইএসএল নিয়ে মোহভঙ্গ রয়েছে, সেটাও বেরিয়ে পড়ে তাঁর কথায় । বাগানের প্রাক্তনী বলছেন, “আইএসএল এর মান শূন্য ৷ শুধুমাত্রই চমক এবং প্রচার সর্বস্ব । পান মশলার বিজ্ঞাপন শাহরুখ খানকে দিয়ে করালে তাতে বিক্রি বাড়বে । উপকার হবে কি ? যেকোনও দেশের ফুটবল ক্রমপর্যায়সূচক সেই দেশের সর্বোচ্চ লিগের মান দেখলে বোঝা যায় । আইএসএল যদি ভারতীয় ফুটবলের উন্নতি করবে, তাহলে দেশের ফুটবল এত পিছিয়ে থাকবে কেন ?”

ম্যাচর সংযুক্তি সময়ে এসেছে জয়ের গোল । পুরো টুর্নামেন্ট জুড়ে প্রতিপক্ষের ওপর স্টিম রোলার চালানোর পরে ফাইনালে গোল পাওয়ার জন্য অপেক্ষা । ছটফট করেনি মন ? মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে উদ্বিগ্ন হননি ? “ওরকমভাবে বলা সম্ভব নয় যে কোন সময় আমরা জয়ের গন্ধ পেতে শুরু করেছিলাম । কেরল শক্তিশালী প্রতিপক্ষ । গতবারের চ্যাম্পিয়ন সার্ভিসেস, তাদের আমরা দু’বার হারিয়েছি ৷ কিন্তু আমাদের মূল লক্ষ্য ছিল যে হারার আগে হারব না । শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়াই করে যাব ৷ প্রতিপক্ষ যেই আসুক না কেন মাঠে চোখে চোখ রেখে দেখা হবে । বিরতিতে বলেছিলাম ধৈর্য রাখ । আর নিজের স্বাভাবিক ছন্দে খেল । ফাইনালে রবির জয়সূচক গোলের পর প্রথম অনুভূতি এক কথায় অতুলনীয় । তখনই মনে হয়েছিল আমার বুক থেকে একটা বড় পাথর নেমে গেল,” বলছেন বাগানকে দেশের সেরা করা কোচ ৷

ক্লাব এবং রাজ্য পর্যায়ে সব সাফল্য পেয়েছেন সঞ্জয় সেন । তবুও তিনি রিসিভিং এন্ডে । ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেছেন, ‘‘প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, অমল দত্ত, সুভাষ ভৌমিক, সুব্রত ভট্টাচার্যের পরে সঞ্জয় সেন বাংলার সেরা কোচ । প্রশংসায় খুশি সঞ্জয় ৷ সন্তোষজয়ী কোচ বলছেন, “যারা নিন্দুক, যারা সমালোচক, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরে তাঁদের উপর কোনও প্রতিশোধস্পৃহাই রাখতে চাই না । আমার কাজ আমি করেছি । দুনিয়ায় বাকিরা কে কী বলল, তা নিয়ে আদৌ মাথা ঘামাতে চাই না ।” তাঁর মাথায় শুধু বাংলা দলের এই ফুটবলারদের উজ্বল ভবিষ্যত গড়ে ওঠার চিন্তা । “আমি চাই এই ছেলেগুলো যেন আইএসএল ক্লাবে ডাক পায় । আশা করি এরাও বড় বড় দলগুলিতে খেলে নিজেদের জাত চেনাতে পারবে,” চিন্তার সুর সঞ্জয় সেনের গলায় ।

প্রচার সর্বস্ব দুনিয়ায় সঞ্জয় সেন গুটিয়ে থাকতে ভালোবাসেন । সঠিক কথা অপ্রিয় হলেও বলতে দ্বিধা করেননি । তা নিয়ে আক্ষেপ-অনুযোগ নেই । সেন বলছেন, “আমি চিরকালই প্রচারের আধারে থাকতে ভালোবাসি ৷ যারা খেলেছে তারা ট্রফি নিয়ে নাচানাচি করছে, করুক ৷ কিন্তু আমি সবসময় পিছনে থাকতে চাই । এটা আমার স্বভাব । কাল থেকেই আবার রোজকার জীবন শুরু হবে । সেই বাজার যাওয়া, সেই মাছ কেনা ৷ তাহলে কোন সঞ্জয় সেন আসল ? সাধারণ জীবন যাপনের সঞ্জয় সেন ।”

আরও পড়ুন

Last Updated : Jan 2, 2025, 2:32 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.