ETV Bharat / sports

তাস 'পিটিয়ে' স্বর্ণপ্রাপ্তি, মেসির দেশে আন্তর্জাতিক ব্রিজ চ্যাম্পিয়ন আসানসোলের সঞ্জিত - INTERNATIONAL BRIDGE CHAMPIONSHIP

বুয়েনস আইরসে আন্তর্জাতিক ব্রিজ চ্যাম্পিয়শিপের পেয়ার্স ইভেন্টে সোনা ৷ আসানসোলের মহিশীলার সঞ্জিত সাফল্যের পর মুখোমুখি ইটিভি ভারতের ক্যামেরায় ৷

SANJIT DEY TALKS TO ETV BHARAT
পরিবারের সঙ্গে সঞ্জিত (ETV Bharat)
author img

By ETV Bharat Sports Team

Published : Nov 7, 2024, 6:41 PM IST

আসানসোল, 7 নভেম্বর: গ্রাম কিংবা মফস্বলের পাড়ায় বসে তাস হাতে বয়স্কদের গোল হয়ে বসে থাকা, ঝগড়া, অশান্তি এসব চেনা চিত্র। যুবকরা শীতের রোদে পিঠ দিয়ে তাস খেলায় মজলে প্রতিবেশীদের তাচ্ছিল্যও অতি পরিচিত দৃশ্য। তবে সেই তাচ্ছিল্যকে ফুৎকারে উড়িয়ে কন্ট্র্যাক্ট ব্রিজে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আসানসোলের সঞ্জিত দে এবং কলকাতার বিনোদ সাউয়ের জুটি। বুধবার রাতে সোনা জিতে আর্জেন্তিনা থেকে আসানসোলে ফিরেছেন সঞ্জিত। আর সঞ্জিত ফিরতেই আসানসোলের মহিশীলায় যেন বিলম্বিত দীপাবলি। বাজি ফাটিয়ে, মিষ্টি মুখে বরণ হলেন সোনাজয়ী সঞ্জিত।

আন্তর্জাতিক ব্রিজ চ্যাম্পিয়ন সঞ্জিত ইটিভি ভারতে (ETV Bharat)

সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ব্রিজ ফেডারেশনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক ব্রিজ চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আর্জেন্তিনার বুয়েনস আইরসে। 21 অক্টোবর- 3 নভেম্বর অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতে আসানসোল তথা ভারতের নাম ইতিহাসের পাতায় তুললেন মহিশীলার দক্ষিনপাড়া নিবাসী সঞ্জিত দে এবং কলকাতা নিবাসী বিনোদ সাউ।

সঞ্জিত জানিয়েছেন, কলেজ জীবনে তাঁর তাসে হাতেখড়ি। প্রথম প্রথম বন্ধুদের সঙ্গে 'টোয়েন্টি নাইন', 'কল ব্রে' ইত্যাদি খেলা শুরু করলেও আসানসোলের সিনিয়র ব্রিজ খেলোয়াড়রা তাঁকে 'কন্ট্রাক্ট ব্রিজ' খেলায় বেশি করে মনোনিবেশ করতে বলেছিল বলে মত সোনাজয়ীর। সেইমত তিনি প্রচুর পড়াশোনা শুরু করেন এবং বড় বড় প্লেয়ারদের পরামর্শ নিতে থাকেন। 2015 সালে প্রথমবার ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্স হন সঞ্জিত। তারপর তাঁকে আর ঘুরে তাকাতে হয়নি। চলতি বছর আমেদাবাদে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপের পরেই আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পেয়ে যান তিনি। সঞ্জিত বলেন, "আমার এই প্রথমবার আন্তর্জাতিক স্তরে খেলতে যাওয়া। প্রচণ্ড নার্ভাস ছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কী হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেয়ার্স ইভেন্টে কলকাতার বিনোদ কুমার সাউয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে আমরা সোনা জয় করি।"

তবে প্রথম প্রথম তাস খেলতে গিয়ে বাকিদের মত সঞ্জিতকেও একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। পরিবারের সদস্যরাও প্রথম প্রথম ঠিকভাবে মেনে নিতে পারেননি। পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছেও তাচ্ছিল্য শুনতে হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্যে স্থির ছিলেন সঞ্জিত। পরিবারকে বুঝিয়েছিলেন ৷ ধীরে ধীরে পরিবারও বিষয়টি বুঝে সঞ্জিতকে সমর্থন করতে শুরু করে। তবে সঞ্জিতের এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে পাড়ায় বেশ কিছু শুভানুধ্যায়ীদের অবদানও ৷ আগামিদিনে তাঁর লক্ষ্য এশিয়ান গেমস কিংবা আরও বড় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা।

সঞ্জিতের সাফল্যে যারপরনাই গর্বিত মা বুলা দে এবং বাবা রঞ্জিত দে ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, প্রথমদিকে সংকোচ বোধ হলেও আজ খুব আনন্দ হচ্ছে। প্রতিবেশী কল্যাণ মুখোপাধ্যায়ের সমর্থন ছিল যদিও প্রথম থেকেই। সঞ্জিতকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া, পরিবারকে বোঝানো আরও নানান ভাবে সহযোগিতা করে এসেছেন তিনি। কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, "ও আরও অনেক বড় জায়গায় যাবে। ওর একাগ্রতা এবং পরিশ্রম ওকে এই সাফল্য এনে দিয়েছে।"

আসানসোল, 7 নভেম্বর: গ্রাম কিংবা মফস্বলের পাড়ায় বসে তাস হাতে বয়স্কদের গোল হয়ে বসে থাকা, ঝগড়া, অশান্তি এসব চেনা চিত্র। যুবকরা শীতের রোদে পিঠ দিয়ে তাস খেলায় মজলে প্রতিবেশীদের তাচ্ছিল্যও অতি পরিচিত দৃশ্য। তবে সেই তাচ্ছিল্যকে ফুৎকারে উড়িয়ে কন্ট্র্যাক্ট ব্রিজে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন আসানসোলের সঞ্জিত দে এবং কলকাতার বিনোদ সাউয়ের জুটি। বুধবার রাতে সোনা জিতে আর্জেন্তিনা থেকে আসানসোলে ফিরেছেন সঞ্জিত। আর সঞ্জিত ফিরতেই আসানসোলের মহিশীলায় যেন বিলম্বিত দীপাবলি। বাজি ফাটিয়ে, মিষ্টি মুখে বরণ হলেন সোনাজয়ী সঞ্জিত।

আন্তর্জাতিক ব্রিজ চ্যাম্পিয়ন সঞ্জিত ইটিভি ভারতে (ETV Bharat)

সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ব্রিজ ফেডারেশনের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক ব্রিজ চ্যাম্পিয়নশিপ অনুষ্ঠিত হয়ে গেল আর্জেন্তিনার বুয়েনস আইরসে। 21 অক্টোবর- 3 নভেম্বর অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতে আসানসোল তথা ভারতের নাম ইতিহাসের পাতায় তুললেন মহিশীলার দক্ষিনপাড়া নিবাসী সঞ্জিত দে এবং কলকাতা নিবাসী বিনোদ সাউ।

সঞ্জিত জানিয়েছেন, কলেজ জীবনে তাঁর তাসে হাতেখড়ি। প্রথম প্রথম বন্ধুদের সঙ্গে 'টোয়েন্টি নাইন', 'কল ব্রে' ইত্যাদি খেলা শুরু করলেও আসানসোলের সিনিয়র ব্রিজ খেলোয়াড়রা তাঁকে 'কন্ট্রাক্ট ব্রিজ' খেলায় বেশি করে মনোনিবেশ করতে বলেছিল বলে মত সোনাজয়ীর। সেইমত তিনি প্রচুর পড়াশোনা শুরু করেন এবং বড় বড় প্লেয়ারদের পরামর্শ নিতে থাকেন। 2015 সালে প্রথমবার ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে রানার্স হন সঞ্জিত। তারপর তাঁকে আর ঘুরে তাকাতে হয়নি। চলতি বছর আমেদাবাদে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপের পরেই আন্তর্জাতিক চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ পেয়ে যান তিনি। সঞ্জিত বলেন, "আমার এই প্রথমবার আন্তর্জাতিক স্তরে খেলতে যাওয়া। প্রচণ্ড নার্ভাস ছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কী হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পেয়ার্স ইভেন্টে কলকাতার বিনোদ কুমার সাউয়ের সঙ্গে জুটি বেঁধে আমরা সোনা জয় করি।"

তবে প্রথম প্রথম তাস খেলতে গিয়ে বাকিদের মত সঞ্জিতকেও একই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। পরিবারের সদস্যরাও প্রথম প্রথম ঠিকভাবে মেনে নিতে পারেননি। পাড়া-প্রতিবেশীদের কাছেও তাচ্ছিল্য শুনতে হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্যে স্থির ছিলেন সঞ্জিত। পরিবারকে বুঝিয়েছিলেন ৷ ধীরে ধীরে পরিবারও বিষয়টি বুঝে সঞ্জিতকে সমর্থন করতে শুরু করে। তবে সঞ্জিতের এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে পাড়ায় বেশ কিছু শুভানুধ্যায়ীদের অবদানও ৷ আগামিদিনে তাঁর লক্ষ্য এশিয়ান গেমস কিংবা আরও বড় আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা।

সঞ্জিতের সাফল্যে যারপরনাই গর্বিত মা বুলা দে এবং বাবা রঞ্জিত দে ৷ তাঁরা জানিয়েছেন, প্রথমদিকে সংকোচ বোধ হলেও আজ খুব আনন্দ হচ্ছে। প্রতিবেশী কল্যাণ মুখোপাধ্যায়ের সমর্থন ছিল যদিও প্রথম থেকেই। সঞ্জিতকে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া, পরিবারকে বোঝানো আরও নানান ভাবে সহযোগিতা করে এসেছেন তিনি। কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, "ও আরও অনেক বড় জায়গায় যাবে। ওর একাগ্রতা এবং পরিশ্রম ওকে এই সাফল্য এনে দিয়েছে।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.