কলকাতা, 7 জুলাই: দু'টো ম্যাচ হয়ে গেলেও জয় অধরা মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের। শনিবার ব্যারাকপুর স্টেডিয়ামে রেনবোর সঙ্গে ড্র করল সবুজ-মেরুন। ম্যাচের ফল 2-2। মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের হয়ে জোড়া গোল সুহেল ভাটের। রেনবো অ্যাথলেটিক ক্লাবের হয়ে গোল সৌরভ দাশগুপ্ত এবং পেনাল্টি থেকে রাজন বর্মনের। ডার্বির আগে ফের পয়েন্ট নষ্ট নিশ্চিতভাবে ডেইজি কার্ডাজোকে চিন্তায় রাখবে।
অথচ প্রথম আধঘণ্টায় আশা করা যায়নি মোহনবাগান পয়েন্ট হারাতে পারে। প্রতিপক্ষকে ব্যাকফুটে রেখে একের পর এক আক্রমণ হানছিলেন ফারদিন আলি মোল্লা, সুহেল ভাটরা। টাইসন সিংয়ের সেন্টার থেকে দু'টো গোল সুহেল ভাটের। ম্যাচের বয়স তখন সবে 28 মিনিট। গতবছর এই কাশ্মীরি স্ট্রাইকার সবুজ-মেরুন আক্রমণে ফুল ফুটিয়ে ছিলেন। শনিবার তাঁর জোড়া গোলে মনে হয়েছিল সুহেল তাঁর স্কোরিং বুট খুঁজে পেয়েছেন। কিন্তু বিরতির আগে রেনবোর পাঁচ মিনিটের ঝড় পুরো ছবিটাই বদলে দিল।
Spoils shared in today’s clash. #MBSG #JoyMohunBagan #আমরাসবুজমেরুন pic.twitter.com/mn0pOzOOxh
— Mohun Bagan Super Giant (@mohunbagansg) July 6, 2024
বক্সের বাইরে থেকে সৌরভ দাশগুপ্তর দুরন্ত ফ্রি-কিকে রেনবোর প্রথম গোল। তারপর রাজন বর্মনের পেনাল্টি থেকে গোল। দু'গোলে এগিয়ে থাকা অবস্থা থেকে 2-2। মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের যাবতীয় ছন্দ এরপর তালগোল পাকিয়ে যায়। রেনবো দলে এখনও গোলরক্ষা করেন শিল্টন পাল। রক্ষণে প্রতিপক্ষ আক্রমণ থামাতে নেতৃত্ব দেন কিংশুক দেবনাথ। আক্রমণে দেখা যায় সাবিথ, পঙ্কজ মৌলাদের। অর্থাৎ অভিজ্ঞতা রেনবোর পারফরম্যান্সের বুনিয়াদ।
দ্বিতীয়ার্ধে গোলরক্ষক শিল্টন এবং রক্ষণে কিংশুক পুরো দলের খেলাকে নিয়ন্ত্রণ করেন। বিশেষ করে শিল্টন। সময় যত এগিয়েছে ততই প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে ডালপালা বিস্তার করেছেন শিল্টন। যার সামনে সুহেল ভাট, ফারদিন আলি মোল্লারা মাথা তুলতে পারেননি। একের পর এক আক্রমণ তুলে নিয়ে এসেও তাই গোলমুখ খুলতে ব্যর্থ সবুজ-মেরুন। এমনকী ম্যাচের শেষদিকে গোল করার অব্যর্থ সুযোগ হেলায় হারায় তারা। রেনবোর জার্সিতে অসাধারণ খেললেন পঙ্কজ মৌলা। ম্যাচের সেরা তিনি।
একইভাবে বলতে হবে রাজন বর্মনের কথা। পেনাল্টি থেকে গোল করেছেন ঠিকই কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সহজ সুযোগ নষ্ট না-করলে হয়তো দলকে জয় উপহার দিতে পারতেন। প্রাক্তন দলের বিরুদ্ধে ভালো খেলার দিনে শিল্টনের শেষটা ভালো হল না। ম্যাচ চলাকালীন সময় নষ্টের জন্য প্রথম হলুদ কার্ড দেখেছিলেন। ম্যাচ শেষে রেফারির বিরুদ্ধে কটুক্তি এবং তেড়ে যাওয়ার কারণে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড ও লাল কার্ড দেখেন।
রেফারির সিদ্ধান্তে অখুশি শিল্টন বলেছেন, "রেফারি ম্যাচ চলাকালীন বারবার তাঁকে অসম্মানজনক কথা বলেছিলেন। ম্যাচ শেষে তার প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলাম। তাই লাল কার্ড দেখাল। রেফারির মান নিয়ে যদি আইএফএ যত্নবান না-হয়, উন্নত করার চেষ্টা না-করে ফুটবলের উন্নতি বাংলায় সম্ভব নয়।"
দু’গোলে এগিয়ে থেকেও ড্র। অখুশি মোহনাবাগান সুপার জায়ান্ট কোচ। বলছেন ডার্বির আগে সহজ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জয় হাতছাড়া করার মাশুল পরে দিতে হতে পারে। আপাতত সব ভুলে ডার্বিতেই ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করতে হবে। অবস্থা সামাল দিতে আশিক কুরুনিয়ান এবং গ্লেন মার্টিন্সকে নামানোর পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন।